|
|
|
|
বিধায়ককে পুলিশি ছাড়, ধৃত ৩ ঠিকাদার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
সেচ বিভাগের হিসাবরক্ষক মথুরচন্দ্রের সুইসাইড নোটের ভিত্তিতে আজ তেজপুর পুলিশ প্রতুল ভগবতী, ত্রৈলোক্যমোহন কলিতা ও ঋতুপর্ণ বরা নামে তিন ঠিকাদারকে গ্রেফতার করল। অথচ ওই নোটে একই সঙ্গে, কংগ্রেসের বিধায়ক এনামুল হক লস্করের নাম থাকলেও তার বিরুদ্ধে এখনও কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি পুলিশ। আজ বিধানসভায় এনামুল অবশ্য দাবি করেন, তিনি এই ঘটনায় জড়িত নন। তিনি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার।
গত ২৬ নভেম্বর তেজপুরের মাঝগাঁও এলাকায় আত্মঘাতী হন মথুরচন্দ্র নাথ। মৃত্যুর আগে ২০ পাতার সুইসাইড নোটে তিনি লিখে যান, ২০১১ সালে কাছারের সানাই কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী এনামুল হকের নির্বাচনী প্রচারের খরচ জোগান ত্রৈলোক্যমোহন, প্রতুল, ঋতুপর্ণ, ধীরেন ডেকা ও দিলীপ দাস নামে ঠিকাদাররা। টাকা জোগাড়ের ভার ছিল মথুরবাবুর উপর। কথা ছিল, ভোটে জিতলে এনামুলবাবু বিভিন্ন কাজের ঠিকা ওই ঠিকাদারদের দিয়ে ‘ঋণ শোধ’ করবেন। কিন্তু জেতার পর কোনও ঠিকা না পেয়ে ঠিকাদাররা টাকা ফেরত চেয়ে মথুরবাবুকে চাপ দিতে থাকেন। উপায়ান্তর না দেখে আত্মহত্যার রাস্তা বেছে নেন তিনি। মথুরবাবুর পুত্র প্রশান্ত নাথ বাবার সুইসাইড নোটের ভিত্তিতে এনামুল হক ও ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সকলের বিরুদ্ধে ৩০৬, ৫০৬ ও ৩৪ ধারায় মামলা রুজু করেছে।
৯ ডিসেম্বর রাতে দিসপুর থানায় এনামুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু এনামুলকে আটক বা গ্রেফতার করেনি পুলিশ। এ নিয়ে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিন থেকেই বিরোধীরা সরব। মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বলেন, “প্রয়োজন হলে এনামুল হককে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করতেই পারে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। নোটে সরাসরি এনামুলকে আত্মহত্যার জন্য দায়ীও করা হয়নি। দোষ প্রমাণ হলে অবশ্যই বিধায়ককে গ্রেফতার করা হবে। বিভাগীয় দুর্নীতি ও ঘটনাটির বিষয়ে আমিও তদন্ত করে দেখতে বলেছি।”
আজ, তেজপুরে পুলিশ তিন ঠিকাদারকে গ্রেফতার করে আদালতে তোলে। ঠিকাদারদের পাঁচ দিন পুলিশ হাজতে পাঠানো হয়। অন্য দিকে, গত কাল অনুপস্থিত থাকলেও আজ এনামুল বিধানসভা অধিবেশনে আসেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “মথুরবাবু দালালদের দ্বারা প্রবঞ্চিত হয়েছেন। আমার সঙ্গে সরাসরি তাঁর কথা হয়নি। পুরো বিষয়টি নিয়ে আমার সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে পারতেন তিনি।” কিন্তু সুইসাইড নোটে নাম থাকলেও কী ভাবে গ্রেফতারি এড়াচ্ছেন তিনি? বিধায়কের কথায়, “আইন আইনের পথে চলছে। পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাদের দোষী মনে করেছে ধরেছে। আমার কোনও ভূমিকা থাকলে আমিও গ্রেফতার হতে পারি। তবে গোটা ঘটনাটাই রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। আমি সেচ বিভাগের কোনও কাজের ব্যাপারে নির্দেশ দিলেই তো হবে না। সংশ্লিষ্ট বিভাগের মন্ত্রী, ইঞ্জিনিয়ার-সহ বহু আধিকারিক সে ব্যাপরটি দেখে তবেই সিদ্ধান্ত নেন। মুখ্যমন্ত্রীও তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সত্যিটা সামনে আসবেই।” |
|
|
|
|
|