|
|
|
|
|
ওয়ালমার্ট-দুর্নীতি অভিযোগে
সংসদ অচল বিরোধীদের
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
|
সংসদের চলতি অধিবেশন শেষ হতে বাকি আর মাত্র সাত দিন। এই সীমিত সময়ে আর্থিক সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় বিলগুলি পাশ করাতে সরকার যখন মরিয়া, তখন বহু ব্র্যান্ডের খুচরো বিপণন সংস্থা ওয়ালমার্টের বিরুদ্ধে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ এনে তদন্তের দাবিতে সংসদ অচল করল বাম-বিজেপি-তৃণমূল। যদিও এ ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষেও তদন্তের বিশেষ সুযোগ নেই। তা সত্ত্বেও সংসদ চালাতে বিরোধীদের সেই দাবিও মেনে নেওয়া হল। তবে সরকার তদন্তের প্রকৃতি সুনির্দিষ্ট ভাবে না জানানোয় আজ লোকসভা শেষ পর্যন্ত চালাতে দেননি বিরোধীরা।
ওয়ালমার্ট সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে জানিয়েছিল, পাঁচটি দেশে ব্যবসার প্রসারের জন্য ‘লবি’ করতে তারা গত চার বছরে ২ কোটি ৫০ লক্ষ ডলার তথা ১২৫ কোটি টাকা খরচ করেছে। বাম-বিজেপি-তৃণমূলের অভিযোগ, এ ভাবে টাকা খরচ করা ঘুষ দেওয়ারই নামান্তর।
ওয়ালমার্ট ভারতেও বিনিয়োগ করতে চায়। তাই তারা ভারতের কোনও রাজনীতিক বা অন্য কাউকে ঘুষ দিয়েছে কি না তা তদন্ত করে দেখতে হবে। কিন্তু কংগ্রেস তথা সরকারের শীর্ষ নেতারা বলছেন, আমেরিকায় ‘লবি’ করা আইনসঙ্গত। বিজেপি-বাম নেতৃত্ব তা জানেন। তা সত্ত্বেও স্রেফ সংসদ অচল করতে তাঁরা রাজনীতি করছেন। এমনকী ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ন্যান্সি পাওয়েলও আজ বলেছেন, “লবি ও ঘুষের সংজ্ঞা আমেরিকায় একেবারেই আলাদা।” একটি সূত্র বলছে, শুধু ওয়াশিংটনেই নথিভুক্ত লবিস্ট-এর সংখ্যা প্রায় ১৪ হাজার।
কিন্তু এই সব যুক্তিতে কর্ণপাত করতে নারাজ বিরোধীরা। এই বিষয়টিকে অস্ত্র করে দু’টি অভীষ্ট সিদ্ধ করতে চাইছেন তাঁরা। এক দিকে, খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নিতে আপত্তি করে তাঁরা মার্কিন আগ্রাসনের কথা তুলে ধরতে পারবেন। আবার দুর্নীতির প্রশ্নে নতুন করে কংগ্রেসকে কোণঠাসা করতে পারবেন। তা ছাড়া, সংসদ অচল থাকলে সরকার সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় বিলগুলিও পাশ করাতে পারবে না। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আজ যখন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় সিপিএম-তৃণমূল হাতাহাতি হচ্ছে, তখন সংসদে দু’দল প্রায় সমস্বরে সরব হয়েছে কেন্দ্রের নীতির বিরুদ্ধে।
বিরোধীদের কৌশল আঁচ করেই আজ তদন্তের দাবি মানতে এক রকম বাধ্য হয়েছে সরকার। তবে সিপিএম-বিজেপি বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করলেও সিপিআই নেতা গুরুদাস দাশগুপ্ত-সহ বিরোধীদের একাংশ যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবি করছেন। সেই দাবি অবশ্য সরকার মানতে চাইছে না। ওয়ালমার্ট প্রসঙ্গে বিরোধ মীমাংসার পাশাপাশি সরকার রাজ্যসভায় পদোন্নতিতে সংরক্ষণ বিল পাশ করাতেও তৎপরতা চালাচ্ছে। কারণ, এই বিল পাশ নিয়ে মায়াবতী যেমন সরকারকে চাপ দিচ্ছেন, তেমনই বিলটির গতিরোধ করতে মরিয়া সমাজবাদী পার্টি। এই সংঘাতের বাতাবরণে বাধা পাচ্ছে সংস্কারের কর্মসূচি।
তবে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কমল নাথ আজ জানিয়েছেন, সরকার দুই সভায় বিরোধ নিষ্পত্তি করতে সচেষ্ট। ব্যাঙ্কিং, বিমা ও পেনশন বিল নিয়ে আজ দুই সভার বিরোধী দলনেতা সুষমা স্বরাজ এবং অরুণ জেটলির সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম।
বিজেপি-র সঙ্গে আলোচনা করে বিমা বিল নিয়ে একটি সমঝোতা সূত্র রচনার চেষ্টা করছেন তিনি। এ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলসীমান্ত চুক্তির গুরুত্ব বোঝাতে সুষমা-জেটলির সঙ্গে আজ বৈঠক করেছেন বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদও। সার্বিক সমন্বয়ের লক্ষ্যে এগিয়ে সরকার চেষ্টা করছে, সবক’টি না হলেও সংস্কারের কিছু বিল যাতে শেষ পর্যন্ত পাশ করানো সম্ভব হয়। |
|
|
|
|
|