|
|
|
|
কর্নাটক নিয়ে আপাতত দিশাহারা বিজেপি নেতৃত্ব |
জয়ন্ত ঘোষাল • নয়াদিল্লি |
কর্নাটক রাজ্যটি যে দল হারাতে চলেছে, আপাতত তা নিয়ে নিশ্চিত বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্ব।
কর্নাটক সরকারের সঙ্কট এখন এতটাই তীব্র যে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই সরকারের পতন হতে পারে বলে আশঙ্কা। আগামী কাল বিজেপি-র কোর গ্রুপের বৈঠক বসতে পারে কর্নাটক নিয়ে রণকৌশল ঠিক করতে।
দলের একটি অংশের মত, সরকারের পতনের আগেই রাজ্যপালের কাছে গিয়ে বিধানসভা অনির্দিষ্ট কালের জন্য মুলতুবি করে দেওয়ার প্রস্তাব দিন খোদ মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ সেট্টারই। সে ক্ষেত্রে তদারকি সরকার গঠন করে ভোটে যাবে বিজেপি। মে মাসে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা।
আর একটি প্রস্তাব হল, যে সব মন্ত্রী এবং বিধায়ক বি এস ইয়েদুরাপ্পার পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের সাসপেন্ড করা হোক। তার পর দেখা যাক, ইয়েদুরাপ্পা ওই বিধায়কদের নিয়ে নতুন সরকার গড়ার চেষ্টা করেন কি না।
ইয়েদুরাপ্পার রণকৌশল অবশ্য ভিন্ন। তিনি এখনই সরকার ভাঙতে চান না। তাঁর দাবি, দ্রুত বিধানসভা ভোট। মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ সেট্টারের মতো আর এক লিঙ্গায়েত নেতার বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণও করতে চান না তিনি। তাঁর লক্ষ্য মূলত অনন্ত কুমার এবং লালকৃষ্ণ আডবাণীর মতো নেতারা। |
|
বিজেপি-র এক শীর্ষ নেতার মন্তব্য, “কর্নাটকে যে দিন ইয়েদুরাপ্পা শপথ নিয়েছিলেন, সে দিন আমরা ভেবেছিলাম এ বারে আমাদের দাক্ষিণাত্য বিজয় শুরু হল। কিন্তু, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ভুলে আমাদের আমও গেল, ছালাও গেল।” আডবাণী ভেবেছিলেন, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির দাবি তুলে বিজেপি যখন তাঁকে সরানোর দাবি তুলছে, সেই সময় কংগ্রেসের সঙ্গে টক্কর দিতে গেলে ইয়েদুরাপ্পাকেও সরানো জরুরি। কিন্তু, দলের সভাপতি নিতিন গডকড়ীর বিরুদ্ধেও যে দুর্নীতির অভিযোগ এসে যাবে, সেটি তখন বিজেপির হিসেবে ছিল না। এখন তো ইয়েদুরাপ্পা বলছেন, চোরের মায়ের বড় গলা।
বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের আর একটি ভুল অঙ্ক হল, জগদীশ সেট্টার। কর্নাটকে বিজেপি-র ক্ষমতায় আসার পিছনে লিঙ্গায়েত ভোটব্যাঙ্ক ছিল প্রধান পুঁজি। জগদীশও লিঙ্গায়েত গোষ্ঠীর নেতা। বিজেপি নেতারা মনে করলেন, জগদীশকে দিয়ে লিঙ্গায়েত গোষ্ঠীকে খুশি করবেন। তাই ইয়েদুরাপ্পার অনুগামী জগদীশকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানো হয়েছিল।কিন্তু জগদীশ মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ইয়েদুরাপ্পার অনুগামী থাকেননি। আর ইয়েদুরাপ্পা প্রমাণ করে দিয়েছেন, কর্নাটকের লিঙ্গায়েত গোষ্ঠীর প্রধান নেতা তিনিই।
কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা বলছিলেন, “আসলে শুধু জাত নয়, তার সঙ্গে ব্যক্তিত্বের মেলবন্ধন হয় আঞ্চলিক রাজনীতিতে। কমলাপতি ত্রিপাঠী উত্তরপ্রদেশের ব্রাহ্মণ নেতা ছিলেন। কিন্তু, তাঁর আঞ্চলিক দাপট তাঁর ছেলে হয়েও লোকপতি ত্রিপাঠী উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে অর্জন করতে পারেননি। মায়াবতীর মোকাবিলায় তা হলে কংগ্রেস যে কোনও দলিত নেতাকে দাঁড় করাতে পারত। কর্নাটকে ইয়েদুরাপ্পাই যে লিঙ্গায়েতের শেষ কথা, সেটি তাঁর গতকালের জনসভাতেই প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।”
কর্নাটক নিয়ে কোনও সমাধানসূত্র আপাতত বিজেপি-র কাছে নেই। অরুণ জেটলির মতো নেতারা ভাবছেন, ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের আগে সঙ্কট মিটিয়ে ইয়েদুরাপ্পার সঙ্গেই আবার গাঁটছড়া বাধতে হবে। |
|
|
 |
|
|