স্মার্ট গ্রিড
নয়া প্রযুক্তি নিয়ে নতুন পরিষেবার পথে যাচ্ছে সিইএসসি
বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। সিইএসসি-র অফিসে ফোন করে সংস্থার কর্মীদের খবর দিলে তবেই তাঁরা এসে লাইন ঠিক করবেন। ততক্ষণ অন্ধকারে বসে থাকা ছাড়া উপায় নেই। কিংবা ধরা যাক, আপনি বেশ কিছু দিন বাড়িতে ছিলেনই না। অথচ, বিদ্যুতের বিলের অঙ্কে কোনও প্রতিফলন নেই তার।
এই ছবিগুলোই বদলে ফেলবে নতুন ‘স্মার্ট গ্রিড’ পরিষেবা। এই নয়া পরিষেবায় তথ্যপ্রযুক্তি-ভিত্তিক উন্নত ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিটি গ্রাহকের সঙ্গে সিইএসসি-র বিদ্যুৎ পরিষেবা ক্ষেত্রে সরাসরি যোগাযোগ থাকবে। অর্থাৎ, কোন গ্রাহক সারা দিনে কতটা বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন, তা সিইএসসি জানতে পারবে। অন্য দিকে, কোথাও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সংস্থার কর্মীরা তা জানতে পারবেন। সিইএসসি-র অফিস থেকেই স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির মাধ্যমে তা মেরামত করে ফেলা সম্ভব হবে।
সিইএসসি-র এই নতুন পরিষেবা রাজ্যে প্রথম চালু হবে ই এম বাইপাসের একটি বহুতল আবাসন প্রকল্পে। মূলত অনাবাসী ভারতীয়দের জন্য ২৫০০টি ফ্ল্যাটের এই প্রকল্পে কলকাতার মধ্যে প্রথম ধাপে সমীক্ষার কাজ শুরু করতে চলেছে সংস্থা। এই কাজের জন্য মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ ‘ইউএস ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি’ (ইউএসটিডিএ) সাড়ে তিন কোটি টাকা অনুদান হিসেবে দিচ্ছে।
নতুন পরিষেবায় আরও কয়েকটি সুবিধার কথা জানাচ্ছেন সিইএসসি-র কর্তারা। কোনও গ্রাহক বিদ্যুৎ বিলের টাকা না মেটালে স্মার্ট গ্রিডের মাধ্যমে তাঁরা অফিসে বসেই ওই গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রেও লাইন কাটতে কোনও বিদ্যুৎ কর্মীকে সেখানে পাঠাতে হবে না। আবার প্রচণ্ড গরমের সময়ে যখন বিদ্যুতের চাহিদা তুঙ্গে থাকবে, তখন যদি ওই আবাসনের প্রতিটি ফ্ল্যাটেই দু’টি-তিনটি করে এসি মেশিন চলতে থাকে, তা হলে সরবরাহ ব্যবস্থাকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রয়োজন মতো এসি মেশিনও বন্ধ করে দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে (গ্রাহকের আগাম অনুমতি নিয়ে)।
এ ছাড়াও বিদ্যুতের বিল, মাসুল বৃদ্ধি ও পরিষেবা সংক্রান্ত অন্যান্য খবরও অনেকটা মোবাইলের মেসেজ পাঠানোর মতো গ্রাহককে সহজেই পাঠিয়ে দেওয়া যাবে। নিজের বাড়িতে লাগানো ‘ইন হোম ডিসপ্লে’ বোর্ডেই যাবতীয় তথ্য জেনে নিতে পারবেন গ্রাহক। সিইএসসি-র এক কর্তা বলেন, “সম্প্রতি সিইএসসি এলাকায় ইউনিট পিছু ৬ পয়সা করে বিদ্যুতের মাসুল বাড়ল। স্মার্ট গ্রিড পরিষেবায় ওই দিনেই গ্রাহকেরা ঘরে বসেই জেনে নিতে পারবেন মাসুল বৃদ্ধির খবর।”
নতুন এই ব্যবস্থায় সাব-স্টেশন থেকে ট্রান্সফর্মার হয়ে গ্রাহকের মিটারঘর পযর্ন্ত প্রতিটি ধাপকে সফ্টওয়্যার এবং হার্ডওয়্যার প্রযুক্তির মাধ্যমে নিবিড় এক বাঁধনে বেঁধে ফেলা হবে। ফলে, বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার প্রতিটি তথ্য-সহ গ্রাহকদের মিটারগুলিও বণ্টন সংস্থার একটি ঘরে ডিসপ্লে বোর্ডে ফুটে উঠবে। রেল চলাচলের ক্ষেত্রে যে ভাবে ডিসপ্লে বোর্ডে গাড়ির গতিবিধি দেখে লাইন নিয়ন্ত্রণ করা হয়, সে ভাবেই এ ক্ষেত্রেও বোর্ড দেখে এক জায়গায় বসে প্রতি মুহূর্তে সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন বিদ্যুৎ-কর্মীরা।
সিইএসসি সূত্রে খবর, বাইপাসের ধারে ওই আবাসন প্রকল্পটি ঘিরে কোন প্রযুক্তির মাধ্যমে, কী ভাবে স্মার্ট গ্রিড বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু করা যায়, তার জন্য সমীক্ষা খুব শীঘ্রই শুরু হবে। এ কাজের বরাত দিতে আন্তর্জাতিক বাজারে দরপত্র চেয়েছিল তারা। প্রায় ১৮টি সংস্থা আগ্রহ দেখায়। তাদেরই একটির নাম বেছে অনুমোদনের জন্য সিইএসসি ইউএসটিডিএ-র কাছে পাঠিয়েছে। তবে সমীক্ষার শেষে স্মার্ট গ্রিড পরিষেবা চালু করতে যা খরচ হবে, তার পুরোটা সিইএসসি একাই বহন করবে। ইউএসটিডিএ-র এ ক্ষেত্রে স্বার্থ, ভারতের স্মার্ট গ্রিডের বাজারে মার্কিন সংস্থাগুলির ব্যবসা বাড়ানো।
সিইএসসি-র এক কর্তা বললেন, “ই এম বাইপাসের প্রকল্পটি হবে আমাদের কাছে পরীক্ষামূলক ভাবে স্মার্ট গ্রিড চালু করার প্রথম প্রয়াস। সমীক্ষায় দেখা হবে, কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ শহরে এই পরিষেবা চালু করা সম্ভব।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.