|
|
|
|
কম্পিউটার বাঁচলে আপনার নাম
বাড়ির একটা গোটা দিন খারাপ হয়ে যায় পিসি না চললে। কীভাবে
ভাল রাখবেন বাড়ির নতুন পোষ্যকে। লিখছেন অরিজিৎ চক্রবর্তী |
বেশ কয়েক দিন ধরে যাচ্ছেতাই ভোগাচ্ছে কম্পিউটারটা। বুট হতেই লেগে যাচ্ছে অনেক সময়। তা বলে আকাশের বার্থ ডে উইশে তো দেরি করা যায় না। কলকাতার অনন্যা আর কানাডার আকাশের বেশির ভাগ কথাবার্তা স্কাইপেই হয়। বার্থ ডে উইশটাও ভার্চুয়ালি সামনা-সামনিই করবে ভেবেছিল।
কিন্তু বাড়ির কম্পিউটারটা অন করতে গিয়েই টের পেল মস্ত ভুল করেছে। প্রথম হোঁচট কম্পিউটার অন করায়। সময় লাগল ঝাড়া পনেরো মিনিট। স্কাইপের আইকনে ক্লিক করে টের পেল সমস্যা আরও গভীরে। প্রোগ্রামটা বন্ধ করতে গিয়ে দেখা দিল আর এক বিপত্তি। এ বার পুরো ক্র্যাশ করে গেল কম্পিউটার।
অগত্যা উইশটা ফোনেই সারতে হল। রিটার্ন পেল ইঞ্জিনিয়ার আকাশের কম্পিউটার ঠিক রাখার টিপস্।
পরিষ্কার রাখতে হবে ব্রাউজার
কম্পিউটারকে ঠিকঠাক চালাতে সবথেকে আগে যেটা করতে হবে, তা হল ওয়েব ব্রাউজারকে পরিষ্কার রাখা। যখনই কোনও সাইটে যাওয়া হয়, সেই সাইট কম্পিউটারে কিছু তথ্য জমা রাখে। একে বলে কুকিজ বা ব্রাউজার ক্যাশ।
সব ব্রাউজারেই এই কুকিজ বা ব্রাউজার ক্যাশ থাকে। এর কারণ পরের বার যখন ওই সাইটে যাওয়া হয়, সেটা তাড়াতাড়ি খুলতে পারে। কিন্তু সমস্যা হয় তখন, যখন এই তথ্যগুলোর পরিমাণ বিশাল হয়ে দাঁড়ায়। এগুলো কম্পিউটারে জমতে জমতে ব্রাউজারের গতিকেই কমিয়ে দেয়।
তবে খুব সহজেই এর হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়। ব্রাউজারের ‘ক্লিন মেমরি অন এক্সিট’ অপশনটা বেছে রাখলেই কেল্লা ফতে। তা হলে ব্রাউজার বন্ধ করলেই ওই সব জমে থাকা তথ্য মুছে যাবে। ফলে আর ব্রাউজার হ্যাং হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না। নেট সার্ফ করা যাবে অনেক তাড়াতাড়ি।
নিয়মিত ডিফ্রাগ জরুরি
কম্পিউটারে কোনও বড় ফাইলের তথ্য ছোট ছোট অংশে ভাগ করা থাকে। কিন্তু সেই টুকরোগুলো হার্ড ড্রাইভের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকলে কম্পিউটার স্লো হয়ে যায়। একে বলে ফ্রাগমেনটেশন। এর ফলে হার্ড ড্রাইভ ক্র্যাশও করতে পারে।
এই সমস্যার থেকে বাঁচার উপায়, হার্ড ড্রাইভ নিয়মিত ডিফ্রাগ করা। ডিফ্রাগ করলে বড় কোনও ফাইলের সব অংশই একই জায়গায় থাকবে। তাই কোনও ফাইল খোঁজার জন্য হার্ড ড্রাইভের পিনকে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজে বেড়াতে হবে না।
সব অপারেটিং সিস্টেমেই ডিফ্রাগ করার ব্যবস্থা থাকে। অটোমেটিক বা ম্যানুয়ালি সে কাজ করতে পারেন। অটো-ডিফ্রাগ চালু করে রাখলে কম্পিউটার নিজে থেকেই ডিফ্রাগ করে রাখবে হার্ড ড্রাইভ।
এবার মায়া ত্যাগ করুন
নতুন একটা প্রোগ্রাম নজরে এলেই ইন্সটল করে নেওয়ার অভ্যাস অনেকেরই। এ ভাবে চলতে থাকলে দেখা যায় হয়তো পাঁচটা ওয়েব ব্রাউজার ইন্সটল্ড আছে কম্পিউটারে।
তবে এ বার ওই সব অদরকারি প্রোগ্রাম তাড়ান। কম্পিউটারের সিস্টেমস সেটিংসেই পেয়ে যাবেন আন-ইন্সটল করার ব্যবস্থা। যে সব প্রোগ্রামগুলোই শুধু প্রতিদিন লাগে সেগুলোই রাখুন। বাদবাকিগুলো নির্দ্বিধায় বাদ দিন।
শুরুতেই কমান
কম্পিউটার স্লো হয়ে যাওয়ার আর একটা বড় কারণ স্টার্ট আপ প্রোগ্রাম। স্টার্ট আপ প্রোগ্রাম হল সেই সব প্রোগ্রাম যেগুলো কম্পিউটার চালু করলে নিজে থেকেই চালু হয়। স্টার্ট আপ প্রোগ্রাম লিস্ট কমিয়ে রাখলে কম্পিউটারের স্পিড বাড়তে বাধ্য।
কম্পিউটারের রান কমান্ডে msconfig টাইপ করলেই স্টার্ট আপ প্রোগ্রামের একটা লিস্ট পাওয়া যায়। সেই লিস্ট থেকে যেগুলো খুব দরকারি, সেটা ছাড়া বাকি প্রোগ্রামগুলো বন্ধ করে দিন।
ক্লিন আপ
সফটওয়ার প্রোগ্রামগুলো তো আছেই, কিন্তু সেই সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় ফাইলগুলোও মাঝেমাঝে পরিষ্কার করুন। চেক ডিস্ক আর ডিস্ক ক্লিন আপ প্রোগ্রাম দু’টো এ কাজে সাহায্য করবে।
হার্ড ড্রাইভের অবস্থার দিকেও নিয়মিত লক্ষ রাখতে হবে। হার্ড ড্রাইভের মেইন পার্টিশনে অপারেটিং সিস্টেম থাকে, স্বাভাবিক ভাবে সেটাই সি-ড্রাইভ। সেই মেইন পার্টিশন ঠিক থাকলে কম্পিউটারও ছুটবে তিরের মতো। আর ক্র্যাশ করারও ভয় থাকবে না।
আপডেট ও ব্যাক আপ
এগুলো ছাড়াও সবার আগে দরকার নিয়মিত অপারেটিং সিস্টেম ও প্রোগ্রামগুলো আপডেট করা। আপডেট না করা প্রোগ্রাম থেকেই আপনার কম্পিউটারে আসতে পারে ম্যালওয়ার ও ভাইরাস।
কম্পিউটারকে ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচাতে অ্যান্টি ভাইরাস সফটওয়ার ব্যবহার করুন। ম্যালওয়ারের জন্য ইনস্টল করে নিন কোনও অ্যান্টি ম্যালওয়ার সফটওয়ার।
আর অবশ্যই নিয়মিত ব্যাক আপ রাখবেন পুরো কম্পিউটারের তথ্য, তাহলে কম্পিউটার ক্রাশ করে গেলেও কপালে ভাঁজ পড়বে না।
|
কম্পিউটারে রাখুন |
• সি ক্লিনার: টেম্পরারি ফাইল আর রেজিস্ট্রি পরিষ্কার করতে খুবই দরকারি এই প্রোগ্রাম।
• ম্যালওয়ার বাইট: ম্যালওয়ারের মত ক্ষতিকারক প্রোগ্রামগুলোকে নিরাপদে মুছে দিতে ওস্তাদ।
• ডি ফ্রাগলার: কম্পিউটারের টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে থাকা ফাইলগুলোকে ডি ফ্রাগ করে এই সফটওয়ার।
• অটোরানস্: বুট বা কম্পিউটার অন করার সময় এক গাদা প্রোগ্রাম অন হয়ে কম্পিউটার স্লো করে দেয়। অটোরানস্ সেটাকে আটকায়।
• ড্রাইভার সুইপার: পুরনো ড্রাইভারগুলো স্বাভাবিক প্রোগ্রাম অনইন্সটল দিয়ে বাদ দেওয়া যায় না। এটা সেই কাজটাই করে। |
|
|
|
|
|
|
|