|
|
|
|
|
|
... দাদা আসেন! ধোনির জায়গায় নয়। কোচ হিসেবে। সাহেবরা তো সবাই ফেল।
স্বদেশি ঠাকুরকে এক বার নিয়ে এলে কেমন হয়? সাক্ষাৎকার নিলেন গৌতম ভট্টাচার্য |
|
|
প্রশ্ন
১• দাদাকে কি এখনই ভারতীয় কোচ করা উচিত?
২• টিম ইন্ডিয়ার জন্মদাতা পারবেন ‘টিম ইন্ডিয়া দুই’ সৃষ্টি করতে?
৩• জেনারেশন ওয়াই-কে সামলাতে পারবেন তিনি?
৪• বোর্ডপ্রধান শ্রীনিবাসনের সঙ্গে মধুরতম সম্পর্ক না থাকা কি সমস্যা?
৫• অনেকটা প্রচার যে নিজের দিকে টেনে নেবেন, ক্যারিশমা আর ব্যক্তিত্বের জন্য, সেটা কি দলকে অখুশি করবে?
|
সৌরভকে দেখলে অস্ট্রেলিয়া চাপে পড়বে
ম্যালকম কন
শীর্ষ ক্রিকেট লিখিয়ে
দ্য মেলবোর্ন এজ |
|
|
১• প্রথমেই কালবিলম্ব না করে ডানকান ফ্লেচারকে ছেঁটে ফেলা উচিত। ২০০৫ সালে এই ফ্লেচারই ইংল্যান্ডের অ্যাসেজ সিরিজ জেতার পিছনে প্রধান মস্তিষ্ক ছিলেন। কিন্তু এই যে ভদ্রলোক ভারতের কোচিং করছেন, তিনি বৃদ্ধ বয়সে নতুন চাকরিতে স্রেফ অবসর কাটাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোচিং করতে হলে যে এনার্জি বা ড্রাইভ দরকার, তা এই বয়সি ফ্লেচারের মধ্যে আর অবশিষ্ট নেই। নতুন কোচের জায়গাটা নেওয়ার পক্ষে ইন্ডিয়াতে সৌরভের চেয়ে ভাল নাম আর কিছু হতে পারে না। তবে একটাই শর্তকোচিংয়ে নিজের একশো ভাগ দিতে ওকে তৈরি থাকতে হবে। ইনভলভমেন্ট যেন কম না থাকে। রাহুলের কথা কারও কারও মনে হবে। রাহুল একজন চমৎকার মানুষ। গ্রেট ব্যাটসম্যান। ক্রিকেটের রাষ্ট্রদূত হিসাবে আদর্শ। কিন্তু না, রাহুল হলে ওই ব্যাপারটা আসবে না। স্মার্টনেসটা আনতে পারবে না, যেটা চাই-ই। সৌরভ কোচ মানে যুদ্ধের বারুদ আপনা-আপনিই জ্বলতে শুরু হল টিম থেকে।
২• সৌরভের নতুন করে টিম ইন্ডিয়া তৈরি করতে না পারার কোনও কারণ নেই। আর একটা কথা। ভারতে অস্ট্রেলিয়া আসার আগে ওকে কোচ করে আনা মানে অস্ট্রেলিয়া যথেষ্ট চাপে পড়ে যাবে। সৌরভকে অস্ট্রেলিয়া সমীহ করে। আমি একটা সময় অস্ট্রেলিয়ান মিডিয়ায় ধারাবাহিক সৌরভের সমালোচনা করেছি। কিন্তু আজ এত বছর বাদে আমি স্বীকার করতে বাধ্য, অস্ট্রেলিয়ানদের মনস্তত্ত্ব এই ভারতীয় উপমহাদেশে ওর চেয়ে ভাল কেউ বোঝে না! সৌরভ জানে, ঠিক কীসে অজিরা উত্যক্ত হয়। স্টিভ আর সৌরভ দু’জনেই এমন নেতা যারা জানত তারা কী চায়। আর সেটা ঠিক কী করে পেতে হবে। দু’জনেরই খুব পরিষ্কার মাথা। দু’জনেই খুব স্ট্রং। সৌরভের কোনও কোনও স্টাইল আমার পছন্দ হয়নি। অনেক বছর ধরে তীব্র সমালোচনা করেছি। কিন্তু গোপনে বারবার মুগ্ধ হয়েছি যে ভাবে ও নেতৃত্ব করত সেটা দেখে। সৌরভ-ই প্রথম ভারতীয় অধিনায়ক যে স্রেফ উপস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়াকে চাপে ফেলে দিত!
৩• জেনারেশন ওয়াই কেন, ধোনিকে সামলাতেও গাঙ্গুলির কোনও সমস্যা হওয়া উচিত নয়। ওরা পেশাদার। প্রত্যেকের টিমের জন্য নিজস্ব ওয়ার্ক এথিক থাকা উচিত। আমাদের দেশে ওয়ার্ন আর গিলক্রিস্টের মধ্যেও সম্পর্ক ভাল ছিল না। মাঠের বাইরে ওরা মিশত না। তা বলে মাঠে কেউ কিছু টের পেয়েছে? ধোনির ভাবা উচিত, এখনও ক্যাপ্টেন
রয়েছি এটাই তো ঈশ্বরের অসীম কৃপা। ১৩টার মধ্যে ১০টা টেস্ট ম্যাচ হারলে পৃথিবীর আর কোনও
টিম ক্যাপ্টেন রাখত বলে মনে
হয় না। অন্তত অস্ট্রেলিয়া তো নয়ই। রিকি পন্টিংয়ের মতো প্লেয়ার। অত বড় ক্যাপ্টেন! সে শেষ জীবনে ৭টা টেস্ট ম্যাচ হেরে পদত্যাগ করতে বাধ্য হল। ধোনির ভাবা উচিত, সৌরভ যদি কোচ হয় আমারও আখেরে ভাল।
৪• এর উত্তর আমি খুব সঠিক ভাবে দিতে পারব না। আশা করব, টিমের কাজকর্মে বোর্ড হস্তক্ষেপ করবে না। টিমকে তার আপন নিয়মে চলতে দেওয়া উচিত।
৫• সৌরভের জনপ্রিয়তা যদি প্রচার টেনে নেয়, তা হলে তো টিমেরই ভাল। আমার বিশ্বাস, ফ্লেচার কোচ থাকার জন্য টিমের অন্যতম অসুবিধা হল, গোটা চাপটা প্লেয়ারদের ওপর চলে আসছে। ফ্লেচার এমন নিরাপদ দূরত্বে থাকছেন যে পুরো আলোটাই পড়ছে দলের ওপর। সৌরভের মতো কাউকে কোচ করা হলে, পুরো লাইমলাইটটা থাকবে তার ওপর। জেতা-হারা দু’টোর জন্যই জনমানসে সে দায়ী হয়ে যাবে। তখন টিম অনেক নিশ্চিন্তে পারফর্ম করতে পারবে।
প্রখর বাস্তব:
• ফ্লেচারের সঙ্গে চুক্তি অস্ট্রেলিয়ার ভারত সফর পর্যন্ত। যদিও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে না জিতলে তাঁর গদিতে টান পড়বে।
• কোচ যাবেন না থাকবেন, ঠিক করেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট। আর শ্রীনিবাসন নিশ্চিত নন, সৌরভ যে তাঁর কথা শুনে চলবেন।
• প্রস্তাব পেলে সৌরভ যে ‘না’ করবেন না তার ইঙ্গিত কিন্তু বোর্ড সভাপতির কাছে আছে।
|
|
হোক না ধোনি আর সৌরভ একসঙ্গে
আয়াজ মেমন
টিভি ভাষ্যকার ও
ক্রিকেট লিখিয়ে |
|
১• ইংল্যান্ড সিরিজের বিপর্যয়ের পর ভারতের কোচ হিসাবে সৌরভই ঠিক। সামনে অস্ট্রেলিয়া আসছে। সৌরভ ছাড়া এই সময় আর কাউকে ভাবা যায় না। আসলে ফ্লেচার খুবই পুরোনো ঘরানার। আধুনিক খেলার খুঁটিনাটি সৌরভ খুব ভাল জানে। তাই একেবারে যথাযথ হবে। ও ক্যাপ্টেন হিসেবে যেমন অ্যাগ্রেসিভ ছিল, তেমনই একটা রোড ম্যাপ ছিল ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য। সেই জন্যই আমি বলব, সৌরভ একেবারে পারফেক্ট।
২• এই মুহূর্তে ভারতের সবচেয়ে ভাগ্যবান ব্যক্তির নাম ডানকান ফ্লেচার। যদিও ওঁর দু’বছরের টার্ম, তবুও আমার মনে হয় ওঁর দম ফুরিয়ে এসেছে। ওঁর কোচ থাকাকালীন ভারতের এই হার, সেই ৮০-র ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে লাগাতার হারের সামিল। ভারতের কোচ বদলের এটাই সেরা সময়। হ্যাঁ, সৌরভ অবশ্যই পারবেন।
৩• সৌরভ মোটেই সহজ সরল কোনও চরিত্র নয়। সবার সঙ্গে
ওর সম্পর্ক যে খুব বন্ধুত্বপূর্ণ তা-ও বলা যাবে না। কিন্তু ও বর্ন লিডার। ও চায় সবাই ওর কথা শুনুক। যে দলে কোচের কথার গুরুত্ব আছে, সেখানে ওর কোনও অসুবিধা হবে না। কিন্তু
তা যদি না হয়, একটু মুশকিল তো বটেই। মনে হয় জেনারেশন ওয়াই-কে ভালই সামলাতে পারবে।
৪• এন শ্রীনিবাসন অনেক সাহায্য করছেন ডানকান ফ্লেচারকে। বিপর্যয়েও ওঁর পিছনে দাঁড়াচ্ছেন। আমার মনে হয় সৌরভের বেলায় অন্যথা হবে না।
৫• খুব স্বাভাবিক। সৌরভ যেখানে, লাইমলাইট সেখানে। তবে সেটা কোনও ভাবেই দলকে অখুশি করবে না।
|
দাদাকে এখন কোচ করলে খুব ভুল হবে
রাজদীপ সারদেশাই
এডিটর ইন চিফ, আইবিএন এইট্টিন নেটওয়ার্ক |
|
|
১• না, দাদাকে এই মুহূর্তে কোচ করা উচিত হবে না। দাদা কোচ হোক আরও তিন-চার বছর বাদে। যখন ও যাদের সঙ্গে খেলেছে, সেই ধোনি-সচিনরা আর দলে থাকবে না।
২• আমার মনে হয়, একজন ক্যাপ্টেনের পক্ষে নতুন দল তৈরি করা অনেক সহজ। কোচ সব কিছু বদলে দিতে পারে, ভারতীয় ক্রিকেটে চালু এই ধারণাটা আমার কাছে মিথ। ক্যাপ্টেন সৌরভ যেটা নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে পারত, সেটা কোচ হিসেবে করে দেখানো অনেক কঠিন। এখানে যে ও নন প্লেয়িং ক্যাপ্টেন।
৩• আমি চাই জেনারেশন ওয়াই বা তার পরের প্রজন্মের সময় সৌরভ কোচ হোক। তত দিনে ও যাদের সঙ্গে খেলেছে সবাই অবসর নিয়ে নেবে।
জুনিয়রদের উদ্বুদ্ধ করতে ওর অনেক সুবিধে হবে।
৪• শ্রীনিবাসনের সঙ্গে কী সম্পর্ক, সেটা এখানে নন ইস্যু। পেশাদারি দক্ষতাই একমাত্র বিচার্য। সবাই এই যে ‘ফ্লেচারকে তাড়িয়ে দাও তাড়িয়ে দাও’ বলছে, আমি সেই কোরাসে নেই। ভাই, সহজ কথাটা স্বীকার করতে হবে। আমাদের দারুণ টিম ছিল এক-কালে, কিন্তু কালের নিয়মে তারা এখন বুড়ো হয়ে গিয়েছে।
৫• হ্যাঁ, প্রচার টেনে নিলে টিম ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়তে পারে। আমাদের মনে রাখতে হবে ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে, সবচেয়ে লো প্রোফাইল কোচেরাই সবচেয়ে বেশি সাফল্য পেয়েছে। যেমন জন রাইট। যেমন গ্যারি কার্স্টেন। সেজন্যই বলছি, জুনিয়রে ভরা দল থাকলে, ব্যক্তিত্বের সংঘাত হওয়ার আশঙ্কা নেই।
|
|
|
|
|
|