মুচলেকায় মুক্ত বাবা
বালিকা-বিয়ে রুখলেন স্যার
ঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর বিয়ে রুখে দিলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। রবিবার মালদহের পার্বতীডাঙায় ঘটনাটি ঘটে। প্রধানশিক্ষকের ফোন পেয়ে হবিবপুর থানার পুলিশ গিয়ে ১৩ বছরের ওই নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করে। প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ের আয়োজন তিনি করবেন না বলে মুচলেকায় ছাড়া পান নাবালিকার বাবা পেশায় কৃষক সুভাষ বিশ্বাস। বিয়ে না করায় পাত্রপক্ষকেও পুলিশ ছেড়ে দেয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হবিবপুরের ডাল্লা হাই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর বিয়ে ঠিক হয় চরণতলা গ্রামের এক কৃষকের ছেলের সঙ্গে। রবিবার ছিল বিয়ের দিন। শনিবার স্কুল চলাকালীন নবম শ্রেণির দুই ছাত্রের কাছ থেকে প্রধান শিক্ষক জয়দেব লাহিড়ী জানতে পারেন রবিবার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর বিয়ে হচ্ছে। তিনি স্কুলের রেজিস্টার ঘেটে জন্মতারিখ বের করে দেখেন ওই ছাত্রীর বয়স মাত্র ১৩ বছর। অপেক্ষা না করে জয়দেববাবু বিয়ে রুখতে আসরে নামেন। হবিবপুর থানার আইসি, বিডিও, সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক এবং চাইল্ড লাইনে যোগাযোগ করেন। খবর পেয়ে রবিবার সকালে হবিবপুর থানার আইসি বিরাট পুলিশ বাহিনী নিয়ে পার্বতীডাঙা গ্রামে ছুটে যান। তখন সুভাষ বিশ্বাসের বাড়িতে বিয়ের আয়োজন চলছে। চরণতলা থেকে পাত্রপক্ষ বরযাত্রী নিয়ে মেয়ের বাড়িতে হাজির হয়েছে। পুলিশ দেখে বাড়ির লোকজন ভয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকে যায়। থানার আইসি পাত্রীর বাবাকে ডেকে নাবালিকা মেয়ের বিয়ে বন্ধ করতে নির্দেশ দেন। তাঁকে বলেন, “যদি মেয়ের বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন তবে আপনাকে গ্রেফতার করা হবে।” নাবালিকার বাবা পুলিশ কর্তারা নির্দেশ শুনে বিয়ে বন্ধ করে দিতে রাজি হয়ে যান। বলেন, “না, বিয়ে হবে না।” পুলিশের তরফে তাঁকে লিখিত মুচলেকা দিতে বলা হয়। সুভাষবাবু লিখে দেন ‘১৮ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ের আয়োজন করব না।’
জয়দেব লাহিড়ী।—নিজস্ব চিত্র।
ওই পরিস্থিতি দেখে পাত্রকে নিয়ে বরযাত্রীরা ফিরে যান। হবিবপুর থানার আইসি আত্রেয়ী সেন বলেন, “স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফোন না করলে ঘটনাটি জানতে পারতাম না। ফোন পাওয়া মাত্র ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ে আটকে দিতে সফল হয়ে খুশি ডাল্লা হাই স্কুলের প্রধানশিক্ষক জয়দেব লাহিড়ী বলেন, “গত ৬ মাসে স্কুলের দুই নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ে আটকে দিলাম। এটা হতে দেব না।” বিয়ে ভেস্তে যাওয়ায় খুশি নাবালিকা। তার কথায়, “ইচ্ছে ছিল না কিন্তু বাবাকে জানাতে পারিনি। শেষ পর্যন্ত হেড স্যারের জন্য বেঁচে গেলাম। এ বার পড়াশোনা করব।” বিয়ে আটকে যাওয়ায় বাবা সুভাষবাবু এবং মা রমা দেবী বলেন, “আমাদের একমাত্র মেয়ে। দিনকাল যা পড়েছে মেয়ের কী হবে ভেবে ভাল পাত্র পেয়ে বিয়ে ঠিক করেছিলাম। যাই হোক সবাই যা বলেছেন মেনে নিয়েছি।” রাজ্যের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র নাবালিকার বিয়ে রুখতে প্রধান শিক্ষকের ভূমিকায় বলেন, “এ ভাবে প্রত্যেকে এগিয়ে না আসা পর্যন্ত ওই সামাজিক ব্যাধি থেকে রেহাই মিলবে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.