রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল গড়ার প্রশ্নে সর্বদল বৈঠকের দাবি তুললেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। রবিবার রায়গঞ্জে তিনি বলেন, “চাষিরা হাসপাতালের জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পেলে জমি দিতে ইচ্ছুক রয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। রাজ্য সরকারের উচিত সর্বদল বৈঠক করে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করা।”
বিমানবাবু দাবি করেন, বামফ্রন্ট রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির পক্ষে। তাঁর অভিযোগ, ওই হাসপাতাল নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বিভ্রান্তি বাড়ছে। কংগ্রেস ও তৃণমূলের নাম না করে তাঁর মন্তব্য, “রাজনৈতিক বিরোধিতার জেরেই জমি অধিগ্রহণ আটকে গিয়েছে।”
তবে বিমানবাবুর মন্তব্যকে গুরুত্ব দিতে চাননি কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী, রায়গঞ্জের কংগ্রেস সাংসদ দীপা দাশমুন্সি। তাঁর বক্তব্য, “হাসপাতালের ঘোষণার পর থেকে দু’বছর বামফ্রন্ট ক্ষমতায় ছিল, তখন তারা কেন অধিগ্রহণে উদ্যোগী হয়নি?” তাঁর অভিযোগ, “বামেদের সুষ্পষ্ট জমি নীতির অভাবে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম হয়েছে। এখন তৃণমূলও সেই পথে হাঁটছে।” সর্বদল বৈঠক প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “কেন্দ্র রাজ্যকে জমি অধিগ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। সেই নির্দেশ বামেরাও মানেনি, তৃণমূলও মানছে না। সর্বদল বৈঠকে কী হবে?” |
২০০৯-এর ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্র রায়গঞ্জে ৮২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এইমসের ধাঁচের হাসপাতাল গড়ার অনুমোদন দেয়। এ জন্য রাজ্যকে বিনামূল্যে জমি দিতে হবে বলেও কেন্দ্র জানিয়ে দেয়। ২০১২ সালের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে বলে ঠিক হয়। জেলা প্রশাসন পানিশালায় ১২৫ একর জমি চিহ্নিত করে। ২০১০ সালে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল প্রস্তাবিত জমি পরিদর্শন করে সবুজ সঙ্কেতও দেয়। কিন্তু বিধানসভা ভোট ঘোষণা হওয়ায় অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া আটকে যায়।
রাজ্যে তৃণমূল-কংগ্রেস জোট সরকার গঠন হওয়ার পরে এই হাসপাতাল কোথায় হবে তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। তৃণমূলের শীর্ষস্থানীয় একাধিক নেতা নদিয়ার কল্যাণীতে এইমস গড়ার পক্ষে জোরদার সওয়াল করেন। রায়গঞ্জেই হাসপাতাল গড়তে পাল্টা সওয়াল করেন দীপাদেবী।
বিমানবাবুর দাবি সম্পর্কে তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি অমল আচার্যের প্রতিক্রিয়া, “যারা ৩৪ বছরে জেলায় কোনও উন্নয়ন করতে পারেনি, তাদের কাছ থেকে সর্বদল নিয়ে পরামর্শ শুনবে না তৃণমূল। পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলায় প্রচারের কোনও বিষয় না পেয়ে বিমানবাবুরা এ সব বলছেন।” |