বাইরে থেকে ‘সিল’ করা। চার দিকে কোথাও ফুটো নেই। ছাদ দিয়ে এক ফোঁটা বৃষ্টির জল চুঁইয়ে পড়েছে কি না বলা শক্ত। এমনই এক গুদামঘরে রাখা বাজেয়াপ্ত কয়েক লক্ষ টাকার গাঁজা চুরি হয়েছে। দুষ্কৃতীরা হাতিয়েছে একটি এলইডি, অন্তত আড়াইশোটি শাড়ি সহ কিছু জিনিস। শিলিগুড়ির দেশবন্ধুপাড়ায় শুল্ক দফতরের গুদাম ঘরে এমন চুরির ঘটনায় জড়িতদের হদিস করতে পারেনি পুলিশ। তাই কমিশনারেটের গোয়েন্দা দফতরের হাতে মামলা তুলে দেওয়া হয়েছে। চোর খুঁজতে হন্যে গোয়েন্দাকর্মীরা।
ডেপুটি পুলিশ কমিশনার ও জি পাল বলেন, “শিলিগুড়ি থানার ওই চুরির মামলাটি গোয়েন্দা দফতরের হাতে দেওয়া হয়েছে। দ্রুত ঘটনা প্রকাশ্যে আসবে। দুষ্কৃতী ধরা পড়বে।” শুল্ক দফতরের সহকারী কমিশনার জ্যোতিকুমার বুবানা বলেন, “চুরির ঘটনা জানার পরে পুলিশকে জানানো হয়েছে। ঘর অক্ষত ছিল। কেমন করে গাঁজা, শাড়ি এবং এলইডি চুরি গেল সেটা বুঝতে পারছি না।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে শুল্ক দফতর এবং কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরের বাজেয়াপ্ত গাঁজা-সহ বিভিন্ন সামগ্রী দেশবন্ধুপাড়ার ওই গুদামঘরে রাখা হয়। গুদাম পাহারার জন্য সেখানে নিরাপত্তারক্ষী রয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা জিনিসপত্র রাখার পরে গুদাম তালাবন্ধ করে ‘সিল’ করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে যে কোনও প্রয়োজনে ওই সিল খুলতে হলে আধিকারিকরা সামনে থাকেন। পরে আবার তাঁদের উপস্থিতিতে তালাবন্ধ করে সিল করা হয়। ওই অবস্থায়, দুষ্কৃতীরা গুদামে ঢোকার চেষ্টা করলে তালা ভাঙতে হবে। অথবা টিনের বেড়া বা ছাদ কাটতে হবে। কিন্তু মে মাসের চুরির ঘটনায় ওই ঘটনার একটিও ঘটেনি। প্রশ্ন উঠেছে, চুরি হল কেমন করে? শুধ কি তাই? চুরি হয়েছে প্রায় ৮০০ কেজি গাঁজা। ওই পরিমাণ গাঁজা চুরি করে নিয়ে যাওয়া সম্ভব কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশের ধারণা, গাঁজা পাচার চক্রের কোনও দল ওই ঘটনায় জড়িত। চুরির পরে গাঁজা ওই চক্রের হাতে দেওয়া হয়। সন্দেহ, সেগুলি ভিন রাজ্যে পাচার হয়েছে।
সম্প্রতি, সাড়ে চার কেজি সোনা সহ এক দোকানের কর্মী অপহরণ ও খুনের ঘটনায় শুল্ক দফতরের এক সুপারিন্টেডেন্ট ওয়াংদি শেরপাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই দফতরের এক অস্থায়ী কর্মীকে ধরা হয়। দোকানের কর্মী সোনা নিয়ে ফেরার সময় এনজেপি স্টেশনের সামনে থেকে অপহৃত হন। পরে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। স্বাভাবিক কারণেই চুরির ঘটনায় জড়িত গাঁজা চোরাই চক্রের সঙ্গে শুল্ক দফতরের কেউ জড়িত রয়েছেন কি না সেটাও খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দা দফতরের কর্মীরা। |