নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ৮০তম রাজ্য সম্মেলন শুরু হল শনিবার। দু’দিন ব্যাপী এই সম্মেলনের পাশাপাশি ৮৬তম বার্ষিক সাধারণ সভাও চলছে। মেদিনীপুর শহরের শহিদ প্রদ্যোৎ স্মৃতি সদনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে শনিবার উপস্থিত ছিলেন মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য, মেদিনীপুরের সাংসদ প্রবোধ পান্ডা। এ দিনই ‘উচ্চশিক্ষার পরিচালন পদ্ধতি’ নিয়ে একটি আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি শুভোদয় দাশগুপ্ত, অর্থনীতিবিদ প্রভাত পট্টনায়েক প্রমুখ। রবিবার, সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে শিক্ষা ক্ষেত্রে নৈরাজ্য দেখলেই দলমত নির্বিশেষে তার প্রতিবাদে সামিল হওয়ার সিদ্ধান্ত নিল পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
সংগঠন সূত্রে খবর, এ বারের সম্মেলনে সমস্ত দলমতের শিক্ষকেরাই হাজির ছিলেন। আলোচনা যোগ দেওয়ার পাশাপাশি সংগঠনের পদাধিকারী হিসেবেও যুক্ত হয়েছেন তাঁরা। তবে গত দু’বছর এমনটা না হওয়ায় এই পদগুলি শূন্যই থেকে গিয়েছিল। সম্মেলনে নব নির্বাচিত রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক শ্রুতিনাথ প্রহরাজ বলেন, “এটাই আমাদের কাছে এ বারের সম্মেলনের সব চেয়ে বড় সাফল্য। দলমত নির্বিশেষে সকলেই এসেছেন, আলোচনায় যোগ দিয়েছেন এবং পদেও রয়েছেন। বিগত ২ বছর এই সহযোগিতা না মেলায় পদ শূন্য রাখতে হয়েছিল।” |
সম্মেলনে অতিথিরা।—নিজস্ব চিত্র। |
সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী, সব রাজনৈতিক দলের সমর্থকদেরই পদে রাখার কথা। কিন্তু গত দু’বছরের সম্মেলনে বামপন্থীদের সঙ্গে অন্যান্য দলের সমর্থকেরা যোগ দেননি। এ বার নন্দা ঘোষ, বিমল নন্দ, তরুণ নস্করের মতো সকলেই আলোচনায় যোগ দিয়েছেন। নন্দাদেবী সহ-সভাপতিও হয়েছেন। সভাপতি হিসাবে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন শুভোদয় দাশগুপ্ত। সম্মেলনে শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলার বিষয়টিই সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে। ভাঙড় কলেজের নিগৃহীতা শিক্ষিকা দেবযানী দে-র মতো অনেকেই নির্যাতনের প্রসঙ্গ তোলেন। সম্পাদকীয় খসড়া প্রতিবেদনেও এ নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, “রাজ্যস্তরে শিক্ষাঙ্গন কিছু ক্ষেত্রে রণাঙ্গনের চেহারা নিয়েছে। অদ্ভুত এক আতঙ্কের পরিবেশে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের কাটাতে হচ্ছে। ফলে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যবান সম্পত্তি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে শিক্ষা দিবসও।.প্রশাসন নির্বিকার থাকায় নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীরা আরও বেপোরোয়া।”
এ ছাড়া সার্চ কমিটিতে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি রাখার যেমন প্রতিবাদ করা হয়েছে তেমনই খসড়া প্রতিবেদনে পরিকাঠামোর উন্নয়ন না হওয়া নিয়েও সমালোচনা হয়েছে। অভিযোগ, বিগত রাজ্য সরকার এ বিষয়ে সেরকম উদ্যোগী হয়নি, বর্তমান সরকারও কিছুই করছে না। শিক্ষা ক্ষেত্রে সুষ্ঠু পরিবেশ, পদোন্নতির ব্যবস্থা, ক্যাস চালু করা, ৮০ শতাংশ বকেয়া মেটানো, আংশিক ও চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের ইউজিসি ও এআইসিটিই-র নিয়ম মেনে সাম্মানিক দেওয়া ইতা্যদি ৯ দফা দাবিতে আন্দোলনের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। |