জনা পঁচিশের সশস্ত্র ডাকাতদল সাগরদিঘির তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের এক ঠিকাদারি সংস্থার অফিসে চড়াও হয়ে শনিবার মাঝরাতে ব্যাপক লুঠপাট করে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ‘কোল ব্লকে’ এই সংস্থার কর্মী ও নিরাপত্তা রক্ষীদের গলায় হাঁসুয়া, ছুরি ঠেকিয়ে, বোমা ছুড়ে মারার ভয় দেখিয়ে প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে এই তাণ্ডব চালায় দুষ্কৃতীরা। তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য দেওয়া সীমানা প্রাচীর ভেঙে একটি বড় গর্ত দিয়ে এই অফিসে ঢোকে ডাকাতেরা। ওই বেসরকারি সংস্থার ম্যানেজার দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অফিস ঘরে মোটা অঙ্কের টাকা জমা ছিল। ছিল তামাও। ডাকাতেরা তারই খোঁজ করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা না পেয়ে অফিসের যে ঘরে সব জমা রাখা হয় সেখানে গিয়ে বহু দামি যন্ত্রপাতি, কম্পিউটার মিলিয়ে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার সামগ্রী নিয়ে পালায়। সেই সময়ে যে কর্মীরা ছিলেন, তাঁদের শাসিয়ে যাওয়া হয়েছে, পুলিশে খবর দিলে তাঁদের মেরে ফেলা হবে।”
তবে ডাকাতেরা চলে যাওয়ার পরপরই ফোনে সমস্ত কথা পুলিশকে জানানো হয়। মিনিট পনেরোর মধ্যেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ। রবিবার বিকেল পর্যন্ত অবশ্য কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এমনকী, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে আশেপাশে টহলদারি পুলিশ থাকা সত্ত্বেও এ ভাবে দীর্ঘ সময় ধরে জনা পঁচিশেক ডাকাত দলের তাণ্ডবই বা কী করে হল, তার কোনও জবাব মেলেনি। পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে স্থানীয় দুষ্কৃতীরাই এই ডাকাতির সঙ্গে যুক্ত। ওসিকে সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করি শীঘ্রই ধরা পড়বে দোষীরা।” সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ডাকাতির ঘটনা অবশ্য নতুন কোনও বিষয় নয়। বছর দু’য়েক আগে ওসি দীপক দাসের কড়া পদক্ষেপে কমেছিল দুষ্কৃতী হানা। কিন্তু আবার বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গা ঘেঁষে ডাকাতেরা প্রাচীরে ফোঁকর তৈরি করেছে।
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের এক পদস্থ কর্তা বলেন, “বছর দু’য়েক বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয়েছে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব। আশ্চর্যের বিষয় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে পুলিশি প্রহরাকে উপেক্ষা করে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটল।” |