কেলেঘাই-কপালেশ্বরী সংস্কার
কাজ শেষ মে মাসে, আশ্বাস মন্ত্রীর
ঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে সেই কেলেঘাই-কপালেশ্বরীর সংস্কারকেই হাতিয়ার করল তৃণমূল সরকার। শনিবার দুপুরে পূর্ব মেদিনীপুরের ‘হলদিয়া ভবনে’ এই সংক্রান্ত বৈঠক সেরেই বিগত বাম সরকারকে বিঁধলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সকালে তিনি কেলেঘাই-কপালেশ্বরীর বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনও করেন। বিকেলে তমলুকের রূপনারায়ণের ভাঙন পরিস্থতি দেখতে যান মন্ত্রী।
সেচমন্ত্রীর সঙ্গেই এই বৈঠকে হাজির ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের দুই সাংসদ শিশির অধিকারী ও শুভেন্দু অধিকারী, ভগবানপুরের বিধায়ক অর্ধেন্দু মাইতি, চণ্ডীপুরের বিধায়ক অমিয় ভট্টাচার্য, দক্ষিন কাঁথির বিধায়ক দিব্যেন্দু অধিকারী, পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকি, পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত, পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন, জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেন। আগামী বুধবার থেকেই পুরোদমে কাজ শুরুর দাবি করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “কপালেশ্বরী-কেলেঘাই সংস্কার গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। মে মাসের মধ্যেই কাজ শেষ করার টার্গেট নিয়েছি। বামফ্রন্ট ও আগের আমলে ভয়ঙ্কর ত্রুটি ছিল। প্রকল্পটি ত্রুটিমুক্ত করে কীভাবে মানুষের স্বার্থে কাজে লাগানো যায় ঐক্যবদ্ধ ভাবে সে ব্যবস্থা করব।”
পূর্ব ও পশ্চিম দুই জেলাতেই কেলেঘাই-কপালেশ্বরী নদী সংস্কার নিয়ে জটিলতা রয়েছে প্রায় চার দশক ধরে। এর জেরে ফি বছর বন্যার কবলে পড়ে সবং, পিংলা, নারায়ণগড়, দাঁতন, পটাশপুর, ময়না, ভগবানপুর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। ১৯৬৮ সাল থেকে জমি অধিগ্রহনের কাজ শুরু হলেও তা এগোয়নি। বহুবার একাধিক রাজনৈতিক দল এই সংস্কারকে সামনে রেখেই নির্বাচনের আগে গালভরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, ২০১০ সালে বাম আমলে এই নদীগুলির সংস্কার প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকার ৬৫৪ কোটি টাকা অনুমোদনও করেছিল। ঠিক হয় ৯৩৯ একর জমি অধিগ্রহন করে কাজ শুরু হবে। কিন্তু এখনও ৩১৫ একর জমি অধিগ্রহন সম্ভবই হয়নি। আবার অধিগৃহীত ৬৪৪ একর জমিরও কিছু অংশ খাস জমিতেও পরিণত হয়েছে। ইতিমধ্যে রাজ্যে তৃণমূল সরকার আসার পর ২০১২ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তদানীন্তন শরিক কংগ্রেসের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়াকে পাশে নিয়ে ভগবানপুরের কাঁটাখালিতে এই প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। তবে নানা জটিলতার মধ্যেও কাজ ধীর গতিতে এগোচ্ছে। যদিও শাসকদলের অভিযোগ, কাজ শুরু হলেও তা ঠিক পদ্ধতিতে এগোয়নি। মানস ভুঁইয়া সেচমন্ত্রী থাকাকালীন নদীর ওপরের অংশে পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং, পিংলার দিকে কাজ করায় নীচের অংশ অর্থাৎ পূর্ব মেদিনীপুরের ঢেউভাঙা, লাঙলকাটা, শিউলিপুর বগাই চণ্ডীপুর সংলগ্ন এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে কাজও ধীর গতিতে এগিয়েছে। জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেন বলেন, শুধুমাত্র উপরের দিকে কাজ হওয়ায় নিচের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। এ বার নীচের দিকেও যাতে সমানে সংস্কার করা যায় সেই বিষয়টা বৈঠকে তুলে ধরেছি। শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য আরও একধাপ এগিয়ে বলেন, “আগের সেচমন্ত্রীর সংকীর্ণতা ছিল। কিন্তু রাজ্যের মন্ত্রীর তো সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গি থাকা দরকার, যা বর্তমান মন্ত্রীর রয়েছে। আশা করছি কাজটা দ্রুত এগোবে।”
বৈঠকে স্থির হয়েছে, কেলেঘাই-কপালেশ্বরী, বাগুই, চণ্ডীয়া ও দেউলি এই পাঁচটি নদীর সংস্কার করা হবে। মোট ৬৩ কিলোমিটার সংস্কারের ক্ষেত্রে প্রথম ধাপে ৪৮ কিলোমিটার সংস্কার হবে। এছাড়াও জেলার উপকূলবর্তী এলাকার বাঁধ সংস্কার ও রূপনারায়ণে স্থায়ী ভাঙনরোধের ব্যবস্থার কথাও আলোচনা হয়েছে। এ জন্যই বৈঠক শেষে সেচমন্ত্রী রাজীববাবু তমলুকের ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান। তবে এই সমস্ত উদ্যোগই পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে, এমন ধারণা রাজনৈতিক মহলের। যদিও মন্ত্রীর দাবি, পঞ্চায়েত ভোটের কথা এখানে আনছি না। কপালেশ্বরী-কেলেঘাই দীর্ঘদিনের সমস্যা। মানুষের আশা অনুযায়ী সংস্কারের কাজ তরান্বিত করতে যা করার তাই করছি। প্রকল্প ঘিরে যে জমি-জট রয়েছে সে প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, “৬৩ কিলোমিটার চেন এলাকায় জমির সমস্যা নেই। যে জায়গায় জটিলতা রয়েছে, সেকশন-৪ যেখানে হয়েছে তা জেলাশাসক দেখছেন। স্থানীয় নোডাল অফিসাররাও দেখছেন। আশা করি সেটা মিটে যাবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.