শিশুশ্রম, নারী পাচার রোধে জেহাদ উঃ-পূর্বের
হাতে হাতে প্ল্যাকার্ড, পোস্টার নিয়ে রাজপথে হাঁটছে কচিকাঁচার দল। এদের কেউ বহুতল আবাসনের বাসিন্দা। দামি গাড়ি চেপে স্কুলে যায়। কেউ আবার ঘরছাড়া। আবর্জনা কুড়িয়ে বা হোটেল-দোকানে কাজ করে পেট চালায়, সংসার চালায়। সকলে মিলেমিশে, শিশুশ্রম ও শিশু এবং নারী পাচারের বিরুদ্ধে রাজ্য তথা উত্তর-পূর্ব জুড়ে জেহাদের ঘোষণা করল। আর সেই যুদ্ধে নেতৃত্বে দিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি আলতামস কবীর।
প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব নেওয়ার পরে প্রথমবার উত্তর-পূর্ব সফরে এসে গুয়াহাটি ও শিলং ঘুরে গেলেন কবীর। গত কাল বিকেল থেকে রাত অবধি কবীর ও তাঁর স্ত্রী, শিশু অধিকার কর্মী মীনা কবীর গুয়াহাটিতে শিশু শ্রম ও শিশু ও নারী পাচার বিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নেন। অসম স্টেট লিগাল সার্ভিসেস অথরিটি ও রাজ্য সমাজ কল্যাণ দফতর পাচার ও শিশুশ্রম রোধে যে আলোচনাসভার আয়োজন করে সেখানে কবীর ও মীনা দেবী ছাড়াও হাজির ছিলেন ‘বচপন বাঁচাও’ আন্দোলনের পথিকৃৎ কৈলাস সত্যার্থী, গৌহাটি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এ কে গোয়েল, বিচারপতি হৃষীকেশ রায়, অমিতাভ রায়, বসুন্ধরা জল বিবাদ ট্রাইব্যুনালের প্রধান এম কে শর্মা এবং মিজোরাম, অরুণাচলের অ্যাডভোকেট জেনারেলরা। উত্তর-পূর্বে নারী পাচারের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে সকলেই একমত, সমাজের অসচেতনতা ও দারিদ্র না ঘোচালে, কেবল আইন দিয়ে পাচার রোধ করা যাবে না। বন্ধ হবে না শিশু শ্রমও।
পদযাত্রার সূচনা করছেন প্রধান বিচারপতি আলতমাস কবীর। ছবি: উজ্জ্বল দেব
সত্যার্থীর মতে, শিশুশ্রম কোনও মৌলিক সমস্যা নয়, একাধিক সামাজিক সমস্যার ফল। যা একদিকে বেকারত্ব অন্যদিকে অপরাধের জন্ম দিচ্ছে। কবীরের মতে, কেবল শিশু বা মেয়েদের উদ্ধার করেই কাজ সারে পুলিশ বা প্রশাসন। কিন্তু, তাদের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করা ও শিশুশ্রমিকদের পরিবারের পাশে দাঁড়াবার দায়িত্ব কে নেবে? মিজোরামে নারী পাচারের ঘটনা সর্বাধিক। সেখানকার অ্যাডভোকেট জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবের মতে, “পাচার হওয়া নারীদের উদ্ধার করে সরকারি আবাসে রেখে দিলেই হবে না। তাদের পুনর্বাসনের জন্যও রাজ্য সরকারকে ভাবতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনে, রাজ্য সরকার নতুন আইন আনুক। যেখানে উদ্ধার হওয়ার পরে নারী ও শিশুদের কী কী অধিকার পাওয়া উচিত, কোন পথে তাদের পুনর্বাসন নিশ্চিত করা যায় তা নির্দিষ্ট করা থাকবে।”
এম কে শর্মা ও মীনা কবীরের মতে, শ্রমযোগ্য বয়সসীমা ১৪ থেকে বাড়িয়ে অবিলম্বে ১৮ করে দেওয়া উচিত। সত্যার্থীর মতে, “তথ্য বলছে ভারতে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ৬ কোটি। বেকারের সংখ্যাও তার সমান। তার অর্থ, সরকারি ও অ-সরকারি সংস্থাগুলি সস্তা শ্রমের লোভে যোগ্য কর্মীদের বঞ্চিত করে শিশুদের কাজে লাগাচ্ছে। কবীর বলেন, “আজ গুয়াহাটিতে, শিশু শ্রমিকরা, উদ্ধার হওয়া মেয়েরা ও বিভিন্ন সংগঠন, স্কুলের ছেলেমেয়েরা সবাই হাতে হাত মিলিয়ে এই সামাজিক ক্ষতর বিরুদ্ধে যে লড়াই শুরু করল তা গোটা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.