স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়ে ছদ্মবেশে খাবার, অস্ত্র পৌঁছে দিতেন তিনি। বিভিন্ন স্বদেশি পত্রিকাও ছাপতেন নিজের হাতে। সে সব ইতিহাস শোনাতেন নিজের মুখেই। বাধর্ক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ছেদ পড়ল তাতে। চলে গেলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী রমারানি তা। বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। গত কয়েক মাস ধরেই অসুস্থ ছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় মৃত্যু হল তাঁর। রেখে গেলেন তিন ছেলেকে।
রমারানি তা। |
জন্ম ১৯২০ সালের আশ্বিনে। তবে তারিখ জানা নেই। তারিখ জানতে চাইলেই বলতেন, “আমাদের সময়ে মেয়েদের জন্মের তারিখ কেউ মনে রাখত না।” ১৯৩৬ সালে তাঁর বিয়ে হয় স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা বিধায়ক ও মন্ত্রী দাশরথী তায়ের সঙ্গে। রায়নাকে মুক্তাঞ্চলে পরিণত করেছিলেন দাশরথীবাবুরা। উপড়ে ফলা হয়েছিল রেললাইন, টেলিগ্রাফের খুঁটি। স্বামী বারে বারে জেলে যেতেন। তাঁকেও বহু বারই ব্রিটিশ পুলিশ গ্রেফতার করে অন্তরিন করত। ছাড়া পেলেই ফের ঝাঁপিয়ে পড়তেন নিজের কাজে। চলত পত্রিকা প্রকাশ। রমারানিদেবীর কাজ ছিল পুলিশের প্রহরা এড়িয়ে ছদ্মবেশে বিপ্লবীদের কাছে খাবার, অস্ত্র, গুলি, নানা স্বদেশি ইস্তাহার পৌঁছে দেওয়া। তাঁর নামেও ব্রিটিশ পুলিশ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করায় তাঁকে লুকিয়ে থাকতে হয়েছে কলকাতা, মেদিনীপুর, এমনকী ঢাকাতেও। স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদানের জন্য তাঁকে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে তাম্রপত্র দেওয়া হয়েছিল।
সে কালের এক জীবন্ত ইতিহাস ছিলেন তিনি। অকপটে গড়গড় করে পুরোনো দিনের কথা বলে দিতেন। তাই তাঁর সঙ্গেই চলে গেল এক ইতিহাসও। |