তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং অনগ্রসর শ্রেণির মানুষজনের শংসাপত্র পেতে দেরি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে কালনা ১ ব্লকে। প্রয়োজনীয় কর্মীর অভাব থাকায় সমস্যা হচ্ছে বলে মেনে নিয়েছে ব্লক প্রশাসন।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, নিয়মানুযায়ী শংসাপত্র পাওয়ার জন্য প্রথমে ব্লক প্রশাসনের কাছে আবেদন করতে হয়। সেগুলি জমা পড়ার পরে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতে পুনর্বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়। একটি নির্দিষ্ট দিনে আবেদনকারীকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়। সে দিন ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরাও হাজির থাকেন। পুনর্বিবেচনার পরে শংসাপত্রগুলি ব্লক অফিসে ফিরে আসে। এর পরে সেগুলি পাঠানো হয় মহকুমাশাসকের কাছে। সেখানে শংসাপত্র যাচাই করা হয়। কোনও ত্রুটি ধরা পড়লে ফেরতা পাঠানো হয় ব্লকে। না হলে মহকুমাশাসক সই করার পরে শংসাপত্রগুলি আবার ব্লকে ফিরে যায়। তার পরেই আবেদনকারীরা সেগুলি হাতে পান।
কালনা ১ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের মূল সমস্যা হল, শংসাপত্র বিলি করার দায়িত্বে রয়েছেন এক জন ইনস্পেক্টর-সহ মাত্র দু’জন কর্মী। আবেদনকারীর সংখ্যা বেশি হওয়ার জন্য ঠিক সময়ে সবাইকে শংসাপত্র দেওয়া যাচ্ছে না। পাশাপাশি, আবেদনকারীদের একাংশের আবেদনপত্রে তথ্যগত ত্রুটি থাকায় শংসাপত্র দেওয়া যায়নি। ২০১০, ২০১১ ও ২০১২ সালে তফসিলি জাতি, উপজাতি ও অনগ্রসর শ্রেণি মিলিয়ে প্রায় হাজার খানেক শংসাপত্র জমা পড়ে রয়েছে যা বিলি করা সম্ভব হয়নি।
দিনের পর দিন প্রচুর ছাত্রছাত্রী, চাকুরিপ্রার্থী, বেকার যুবকেরা শংসাপত্র নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। তাঁদের দাবি, কেন কাজ সঠিক সময়ে হচ্ছে না, তার কোনও সদুত্তর ব্লক প্রশাসন দিচ্ছে না। নান্দাই পঞ্চায়েতের পারদুপসা গ্রামের মুশির আহমেদ বলেন, ‘‘অনগ্রসর শ্রেণির শংসাপত্রের জন্য আমি ২০১২ সালের ১৩ জুলাই আবেদনপত্র জমা দিয়েছি। বারবার এসে আমাকে ফিরে যেতে হচ্ছে।” আর এক আবেদনকারী শামিম হাসেম শেখের কথায়, “অনগ্রসর শ্রেণির শংসাপত্রের জন্য আমি ২০১১-এর ৫ অগস্ট আবেদন করি। কিন্তু এখনও শংসাপত্র পাইনি।” তাঁদের দাবি, বারবার ব্লক প্রশাসনকে জানালেও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
আশার খবর হল, ১৬ অগস্ট থেকে অনলাইন ব্যবস্থার মাধ্যমে আবেদনপত্র জমা দেওয়া ব্যধ্যতামূলক করা হয়েছে। ব্লক প্রশাসনের দাবি, ১৬ অগস্ট জেলা প্রশাসন এই ব্যবস্থা চালু করলেও কালনা মহকুমায় তা চালু হয়ছে সম্প্রতি। এই ব্যবস্থা চালুর পরে কারও আবেদনপত্র আর পড়ে নেই। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শান্তি চাল বলেন, “অনেক প্রার্থী আমাদের কাছেও আসছেন। আমি মহকুমাশাসককে বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।” মহকুমাশাসক শশাঙ্ক শেঠি জানান, “কালনা ১ ব্লকে বেশ কিছু শংসাপত্র জমে থাকার খবর পেয়েছি। দ্রুত বিশেষ শিবির করে শংসাপত্র বিলি করার ব্যবস্থা করা হবে।” |