কেতুগ্রামে মন্দির থেকে চুরি গেল সোনার রাধা
ন্দিরে খাটে শোয়ানো ছিল রাধা ও কৃষ্ণের মূর্তি। দরজার তালা খুলে রাধার মূর্তিটি নিয়ে চম্পট দিল চোরেরা। কেতুগ্রামের গোপালপুর গ্রামে রবিবার ভোরে রাধাবৃন্দাবনচন্দ্র পরিবারের ঘটনা। পরিবারের দাবি, চুরি যাওয়া মূর্তির উপরের অংশে প্রায় আড়াই কিলোগ্রাম সোনা ছিল। কালো পাথর দিয়ে তৈরি কৃষ্ণ মূর্তি অবশ্য নিয়ে যায়নি চোরেরা।
এ দিন সকালে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। বিকেলে কেতুগ্রাম থানায় অভিযোগ করেন অন্যতম সেবাইত তাপস দত্ত। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোর ৪টে নাগাদ মন্দিরের পুরোহিত শান্তিকুমার ভট্টাচার্য চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন। জানা যায়, মূর্তি চুরি গিয়েছে। বীরভূমের লাভপুর থানার চৌহাট্টা গ্রামের বাসিন্দা শান্তিকুমারবাবু ১৭ বছর ধরে ওই বিগ্রহের পুজো করছেন। তিনি মন্দিরেই একটি ঘরে রাত কাটান। তাঁর কথায়, “মন্দিরের মধ্যে আলো জ্বালানোর ব্যবস্থা নেই। তাই সময় বোঝা যায় না। চার দিক অন্ধকার, সেই সময়ে দরজায় খুটখাট আওয়াজ শুনে ঘুম ভেঙে যায়। কে জিজ্ঞাসা করায় উল্টো দিক থেকে হুমকি আসে, চিৎকার করলে খুন করে দেওয়া হবে। তবু পিছনের জানালা খুলে চিৎকার করি। কিন্তু কোনও সাড়া-শব্দ পাইনি।” তিনি জানান, বেশ কিছুক্ষণ পরে দরজা খুলে বেরিয়ে আসেন। মন্দিরে দেবীমূর্তি নেই দেখে অন্য সেবাইতদের জানান।

রাধা ও কৃষ্ণের মূর্তি। পরিবার সূত্রে পাওয়া ছবি।
পুলিশকে ওই পুরোহিত জানান, পাঁচিল টপকে এসে পিছনের দরজার তালা ভেঙে মূল মন্দিরে ঢোকে দুষ্কৃতীরা। মূর্তি চুরি করে মূল গেটের তালা ভেঙে দুর্গা মন্দির দিয়ে ফের পিছনের রাস্তা ধরে পালায়। পুলিশ অবশ্য জানায়, তদন্তে মেলা তথ্যের সঙ্গে পুরোহিতের কথার মিল পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশ জানায়, চোর শ্যাওলা ভরা পাঁচিল টপকালে চিহ্ন পাওয়া যেত। যে দু’টি তালা মিলেছে, সেগুলি চাবি দিয়ে খোলা হয়েছে বলেই অনুমান পুলিশের। পুলিশকর্তাদের দাবি, দুষ্কৃতীরা সাধারণত যে রাস্তা দিয়ে ঢোকে সে দিক দিয়েই পালায়। এখানে তা হয়নি। তা ছাড়া পুরোহিতের গলার আওয়াজ পেয়েও তাঁকে দুষ্কৃতীরা আটকে রাখেনি। এ সবের কারণে পুলিশ পুরোহিতকে আটক করেছে।
বাড়ির সেবাইত ভাস্কর দত্ত, তরুণ দত্তেরা বলেন, “পূর্বপুরুষদের চালু করা নিয়ম অনুযায়ী, আমাদের মন্দিরে ঢোকা বা মূর্তিতে হাত দেওয়া মানা। তাই মন্দিরের সম্পূর্ণ দায়িত্ব ছিল পুরোহিতের উপরে।” পুরোহিতের অবশ্য দাবি, “কয়েক দিন ধরে মন্দিরে অনেক পুরোহিত আনা হচ্ছে। আমার জায়গায় তাঁদের রাখা হবে। আমি অচেনা-অজানা কাউকে মন্দিরে ঢুকতে দিতে বারণ করেছিলাম।” তাঁর আরও দাবি, রাধা মূর্তি ধাতু দিয়ে গড়া হলেও তা সোনার ছিল না।

লণ্ডভণ্ড মন্দির। রবিবার ছবিটি তুলেছেন অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।
পরিবারের তরফে জানানো হয়, মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জমিদার গোষ্ঠবিহারী দত্ত। তিনি বৈষ্ণবভক্ত ছিলেন। বৃন্দাবন থেকে তিনি মূর্তি দু’টি নিয়ে আসেন। প্রায় ১০৫ বছর আগে প্রথমে জমিদার বাড়ির কাছে, পরে কাছারিবাড়ি লাগোয়া এলাকায় মন্দির গড়ে বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন। কৃষ্ণমূর্তির উচ্চতা ২২ ইঞ্চি ও রাধা মূর্তির ২০ ইঞ্চি। বাড়ির প্রবীণা, বর্তমানে বোলপুরের বাসিন্দা পার্বতী দত্ত বলেন, “চুরি যাওয়া মূর্তির কোমর থেকে মাথা পর্যন্ত সোনা দিয়ে তৈরি। বাকি অংশ অষ্টধাতুর।” মূর্তি ছাড়াও গয়না ও বাসনপত্র চুরি গিয়েছে বলে অভিযোগ। এসডিপিও (কাটোয়া) ধ্রুব দাস বলেন, “সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.