নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
তৃণমূল সরকারের সংরক্ষণ নীতির ফলে পঞ্চায়েতে মহিলা প্রতিনিধির সংখ্যা কমে যাবে বলে অভিযোগ তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র ও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। শনিবার হাওড়ায় পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে মহিলাদের এক কর্মশালায় সিপিএমের পলিটব্যুরোর দুই সদস্যই ওই অভিযোগ তুলে বলেন, বিষয়টি নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রচার করতে হবে। সিপিএমের অভিযোগকে অবশ্য গুরুত্ব দিচ্ছে না তৃণমূল। রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই পঞ্চায়েত আইন সংশোধন করা হয়েছে।
হাওড়ার কর্মশালায় সূর্যবাবু বলেন, বামফ্রন্টের আমলে সংরক্ষণ নীতিতে বলা হয়েছিল মহিলাদের সংরক্ষণ কোনও ভাবেই ৫০%-এর কম হবে না। কিন্তু এই সরকারের আমলে সেই আইন বদলে বলা হয়েছে কোনও ভাবেই মহিলাদের সংরক্ষণ ৫০%-র বেশি হবে না। সূর্যবাবুর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী নিজে মহিলা হয়েও নতুন আইনের মাধ্যমে কার্যত মহিলা প্রতিনিধিদের সংখ্যা কমিয়ে দিলেন। সিপিএমের অভিযোগ, তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং ওবিসি-র ক্ষেত্রেও ৫০%-এর বেশি সংরক্ষণ হবে না বলে জানানো
হয়েছে। এর ফলে পঞ্চায়েতে তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং ওবিসি প্রতিনিধির সংখ্যাও কমে যাবে। বিমানবাবুর অভিযোগ, বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরের সংরক্ষিত আসনেও জনসংখ্যার অনুপাতে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাবেন না সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশের মানুষরা।
ওই সমস্ত অভিযোগের জবাবে সুব্রতবাবু বলেন, “ওঁরা যা করেছিলেন, তা সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপন্থী। আমরা তাই সংরক্ষণ নীতি সংশোধন করতে বাধ্য হয়েছি। না হলে সব রকম সরকারি সাহায্য বন্ধ হয়ে যেত। স্তব্ধ হত উন্নয়ন।” তিনি জানান, সংরক্ষণ নীতি নিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, কোনও ভাবেই ৫০%-র বেশি সংরক্ষণ করা যাবে না। মামলার কারণে অন্ধ্রপ্রদেশে তিন বছর পঞ্চায়েত ভোট বন্ধ ছিল। রাজ্য
সরকার যা করেছে, তা দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায় মাথায় রেখেই করেছে, তা জানিয়ে সুব্রতবাবু বলেন, “সিপিএম উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে অনেক কিছুই প্রচার করতে পারে। ওদের ক্ষমতা থাকলে সুপ্রিম কোর্টের রায় বদলে নিয়ে আসুক। তখন দেখা যাবে।”
এ দিন উত্তর ২৪ পরগনার হাবরার এক সভায় সিপিএমের প্রবীণ বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লা তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে পথে নেমে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আবেদন জানান মহিলাদের কাছে। তিনি বলেন, “কী হবে? খুব জোর ছ’ মাস জেল হবে। তাতে কী? সিপিএমের বহু কর্মীই তো এখন জেলে রয়েছেন।” খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগ তুলে রেজ্জাক বলেন, “বাজারে বাজারে এমন আন্দোলন করুন যাতে, পুলিশের বাড়ির লোকেরাও ভাল ভাবে বাজার করতে না পারে।” |