নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
দলের ‘কারা কারা দুষ্টুমি করে বা কাদের আইন ভাঙার প্রবণতা আছে’, তা তিনি জানেন বলে জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার কালীঘাটে তৃণমূলের দক্ষিণ ২৪ পরগনার জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে তৃণমূল নেত্রী এই মন্তব্য করেন। ভাঙড়ের দুই নেতা আরাবুল ইসলাম ও জাহাঙ্গির খান এবং জেলায় দলের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি নজরুল মণ্ডলকে লক্ষ্য করেই মমতা ওই মন্তব্য করেছেন বলে দলীয় এক সূত্রে জানা গিয়েছে। দলীয় নেতৃত্বের একাংশের অভিমত, পঞ্চায়েত ভোটে দলের স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি গড়তেই তৃণমূল নেত্রী জেলার বিশেষ কয়েক জন নেতাকে সতর্ক করেছেন।
ভাঙড় কলেজে ভাঙচুর করা এবং শিক্ষিকাকে জলের জগ ছুড়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুলের বিরুদ্ধে। তাঁর সঙ্গে অন্য দুই নেতার বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট ব্যবসা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে বলে এ দিন নেত্রীর বাড়িতে বৈঠকে ওই তিন জনকে সর্তক করা হয়েছে। পরে আরাবুল অবশ্য বলেন, “এ ধরনের কিছু হয়নি। দিদি এ দিনের বৈঠকে শুধু উন্নয়ন নিয়েই কথা বলেছেন।’’ তবে দলের নেতাদের কয়েক জনের বক্তব্য, “উন্নয়ন নিয়ে কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে দলে শৃঙ্খলা রক্ষার উপর নেত্রী বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন।”
পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি নিতে মমতা জেলাওয়াড়ি জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক শুরু করেছেন। এর আগে উত্তর ২৪ পরগনার জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেছেন তিনি। এ দিন দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করেন মমতা। তাঁর বক্তৃতার আগে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়, শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সাংসদ সুব্রত বক্সি, চৌধুরী মোহন জাটুয়া প্রমুখ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এড়িয়ে সরকারে উন্নয়নমূলক কাজের প্রচারে জোর দেওয়ার নির্দেশ দেন দলীয় কর্মীদের। বিরোধী দল ও সংবাদমাধ্যমের প্রচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কর্মীদের ভোটে লড়াই করার পরামর্শ দেন দলনেত্রী। জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “পঞ্চায়েত অফিস ও মিছিলের মাধ্যমে সরকারের উন্নয়নমূলক প্রচার সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন নেত্রী। কারণ, এ বারের ভোটে উন্নয়নকেই হাতিয়ার করা হচ্ছে।” তৃণমূলের অন্দরের খবর, সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের কথা জেলার প্রত্যন্ত প্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার কথা জনপ্রতিনিধিদের বলেছেন মমতা। বিধায়ক তমোনাশ ঘোষ ও জেলা নেতা শক্তি মণ্ডল, শুভাশিস চক্রবর্তী এবং অশোক চক্রবর্তীকে জেলায় পঞ্চায়েত ও উন্নয়নের কাজ খতিয়ে দেখতে বলেছেন দলনেত্রী। বিধায়কদেরও এলাকায় বেশি করে সময় দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।
এ দিনের বৈঠকে হাজির ছিলেন না প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল মণ্ডল ও ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ সোমেন মিত্র। শ্যামলবাবুর মোবাইল বন্ধ ছিল। তাঁর বাড়িতে ফোন করলে জানানো হয়, তিনি বাড়িতে নেই। সোমেনবাবু বলেন, “এক সপ্তাহ আগে শোভন চট্টোপাধ্যায় (মেয়র) বৈঠকের কথা জানিয়েছিলেন। তখনই বলেছিলাম, ডায়মন্ড হারবারে পূর্বনির্ধারিত কয়েকটি কর্মসূচি আছে। আমি ওখানেই আছি।” |