বহিরঙ্গ দেখলে বোঝার উপায় নেই, অন্দরমহলের চাপা যন্ত্রণাটা। ম্যাচের আগের দিনের অনুশীলনে হাসি-ঠাট্টা, খুনসুটির বিরাম নেই। তবু ট্রেভর মর্গ্যানকে দেখলে কোথাও যেন একটা অসম্পূর্ণতার ছায়া ভেসে উঠছে!
সেটা কী? ভারতের সব প্রান্তে ‘ট্রেভর-ম্যানিয়া’ স্থাপন করলেও, কলকাতা ডার্বিতে তার কোনও ছাপ পড়েনি। গত মরসুমে একবারও যুবভারতীতে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে বিজয়-উল্লাসে মাততে পারেননি ইস্টবেঙ্গলের ব্রিটিশ কোচ। নতুন মরসুমের প্রথম ডার্বিতে কি সেই অসম্পূর্ণতা কাটাতে পারবেন মর্গ্যান?
টানা বত্রিশ ম্যাচ অপরাজিত ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে অগোছাল মোহনবাগানের তুলনায় সঠিক উত্তরটা বোধহয় মিলবে না। কেননা পরিসংখ্যান (আই লিগের ১২টা ডার্বি ম্যাচে মোহনবাগান জিতেছে ৬, ইস্টবেঙ্গল ৪, ড্র ২) তো বটেই, মর্গ্যানের শাপমুক্তির রাস্তায় শক্ত গাঁট বাগানের ‘আশার গোলাপ’ ওডাফা ওকোলি। যিনি রবিবারের ম্যাচটাকে বেছে নিয়েছেন সম্মানরক্ষার লড়াই হিসেবে। মর্গ্যান যদিও বলছেন, “ওডাফা বড় ফুটবলার। তবে ওর জন্য কোনও নির্দিষ্ট ছক নেই।” মুখে কিছু না বললেও, ডার্বির অভিশাপ কাটাতে ভিতরে ভিতরে কিন্তু বাগানের ‘কিং কোবরা’কে বোতলবন্দি করার ছক কষছে ইস্টবেঙ্গল। |
ওডাফাকে আটকাতে মর্গ্যানের ‘রেসিপি’ কী? নাইজিরিয়ান গোলমেশিনের জন্য পাতা হচ্ছে ডাবল কভারিংয়ের ফাঁদ। ডিফেন্সিভ স্ক্রিনে মেহতাব হোসেন প্রথম ট্যাকল করবেন ওডাফাকে। ছোট বক্সের আগে ফাইনাল ট্যাকলের দায়িত্ব ওপারা অথবা অর্ণব মণ্ডলের। এ সবের পরেও দু’টো বিষয়ের উপর বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। এক) কোনও মতেই আঠারো গজের বক্সে ওডাফাকে বল ধরতে দেওয়া হবে না। দুই) পেনাল্টি বক্সের আশেপাশে ফ্রি কিক নিতে দেওয়া চলবে না।
তিন বছর আগে মোহনবাগানে জার্সি গায়ে যে নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকারের চারে ছারখার হয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের পাঁচ গোলের ইতিহাস, শনিবার সেই চিডির কাছেই ফের চার গোলের আবদার। যদিও বড় ম্যাচে একমাত্র চার গোল করা চিডি বলে গেলেন, “বারবার চার গোল হয় না। আমার একটা গোলে জিতলে ক্ষতি কী? তিন পয়েন্ট পেলেই আমি খুশি।”
পাঁচ গোলের শাপমুক্তির পরে মোহনবাগান গ্যালারির নীচে চিডির মূর্তি বসানো হয়েছিল। স্টেডিয়াম সংস্কারের জন্য সেই মূর্তি আর সেখানে নেই। রবিবারের ম্যাচে যদি চিডি চার গোলের পুনরাবৃত্তি করতে পারেন, তা হলে এ বার চিডির মূর্তি ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে জায়গা করে নেবে কি? |