|
|
|
|
মঙ্গলবার বৈঠকে বসছেন খুরশিদ |
বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলসীমান্ত চুক্তি নিয়ে বিজেপির দ্বারস্থ কেন্দ্র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
মুলায়ম এবং মায়াবতীর ভরসায় এফডিআই-এর পাট চুকলেও বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলসীমান্ত চুক্তি নিয়ে চিন্তায় রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাই এই চুক্তি রূপায়ণে মনমোহন সিংহ সরকার বিজেপির দ্বারস্থ হতে চলেছে। এই ব্যাপারে আগামী মঙ্গলবার লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলিদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ।
গত বছরই প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের সময় এই চুক্তির প্রোটোকল সই হয়ে গিয়েছে। এখন প্রয়োজন সংবিধান সংশোধন করে সংসদে এটি পাশ করানো। এর জন্য দরকার দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা। বিজেপির সাহায্য ছাড়া যেটি সম্ভব নয়। অথচ বিজেপির এই বিষয়ে অনেক আপত্তি আছে। আর তা কাটাতেই বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন খুরশিদ। সেই বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি রাহুল সিন্হাকেও থাকতে বলেছেন সুষমা স্বরাজ। যাতে সরকারের কাছে দলের আপত্তিগুলি ঠিক মতো তুলে ধরা যায়।
এই বিষয়টি নিয়ে বিজেপির সঙ্গে তড়িঘড়ি বৈঠকে বসতে চাওয়ার আর একটি কারণও রয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধিতা করে আসছেন। জমি হস্তান্তর নিয়েও তিনি এখনও সবুজ সঙ্কেত দেননি। তাই বিজেপির মতো বড় বিরোধী দলের সম্মতি আগে আদায় করে নিতে তৎপর সরকার।
কিন্তু বিজেপির আপত্তিগুলি ঠিক কী কী? বিজেপি সূত্রের খবর, আপত্তির দিক অনেকগুলি। প্রথমত, এই চুক্তির মাধ্যমে যতটা জমি ভারত বাংলাদেশের হাতে তুলে দেবে, তুলনায় কম জমি দেশের হাতে আসবে। দুই, সরকার এখনও পর্যন্ত জন-বিনিময়ের প্রসঙ্গ তুলছে না। জমি হস্তান্তরের পর ভারতের মানুষ যদি দেশের মাটিতে এসে থাকতে চান, তাদের সেই সুযোগ দেওয়া উচিত। তিন, জমি হস্তান্তরের কথা বলা হলেও ঢাকা দহগ্রাম, আঙ্গরাপোতা নিজেদের হাতে রাখতে চাইছে। বিজেপির মতে, হস্তান্তর হলে গোটাটাই হওয়া উচিত। যাতে ভবিষ্যতে এই নিয়ে আর কোনও বিতর্ক তৈরি না হয়। তা না হলে কুচলিবাড়ির মতো ছিটমহলও ভবিষ্যতে বাংলাদেশ নিজের বলে দাবি করতে পারে।
বাংলাদেশের নির্বাচনের আগে তাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বজায় রাখতে আগ্রহী মনমোহন সিংহ সরকার। এই চুক্তি রূপায়ণ আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির আওতাভুক্ত। বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছেন, তাঁরাও এই চুক্তি রূপায়ণের পথে অন্তরায় হতে চান না। কিন্তু সুষমার কথায়, “ভারতের সার্বভৌমত্ব যাতে বিঘ্নিত না হয়, সে দিকটিও আমাদের মাথায় রাখতে হবে।” বিজেপির প্রশ্ন, জমি যদি হস্তান্তরই করতে হয়, তা হলে ভারতের খরচায় উড়ালপুল বানিয়ে মানুষ পারাপারের কথা কেন বলছে বাংলাদেশ? সমস্ত ছিটমহলগুলি হস্তান্তর হয়ে গেলে তো তিন বিঘা করিডরের গুরুত্বও থাকে না।
পাশাপাশি বিজেপির অভিযোগ, এখনও এই পথ দিয়ে চোরাচালান হচ্ছে। এ দেশ থেকে মোটর সাইকেল চুরি করে বাংলাদেশে পাচার করা হচ্ছে। ও দেশ থেকে মাদক-সহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ দ্রব্য এ দেশে চালান হচ্ছে। এখনও অনুপ্রবেশ ঘটছে। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নথিও বলছে, যত জন মানুষ এই করিডর দিয়ে ভারতে ঢোকেন, তাঁদের অধিকাংশই ফিরে যান না। সে কারণেই বিজেপির মতে, নয়াদিল্লিকে এই চুক্তি রূপায়ণ করতে হলে তা সুষ্ঠু ভাবে করতে হবে। |
|
|
|
|
|