কলকাতা বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল থেকে আপাতত সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স, ড্রাগন এয়ার, এয়ার এশিয়ার মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার বিমান উড়বে। শুক্রবার কলকাতায় জানিয়ে গেলেন বিমানমন্ত্রী অজিত সিংহ। তিনি জানান, জেট এয়ারওয়েজ, ইন্ডিগো বা এয়ার ইন্ডিয়ার যে সব অভ্যন্তরীণ উড়ান রয়েছে, তা আগের মতো পুরনো ডোমেস্টিক টার্মিনাল থেকেই ছাড়বে।
আইআইটি প্রাক্তনীদের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলকাতায় এসেছিলেন অজিত সিংহ। শুক্রবার দুপুরে কলকাতা ছাড়ার আগে তিনি বলেন, “কলকাতা থেকে আন্তর্জাতিক উড়ানের সংখ্যা বাড়ছে। বিদেশ থেকে যাত্রীরা এসে যাতে আন্তর্জাতিক মানের এই নতুন টার্মিনাল ব্যবহার করতে পারেন তার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” সম্প্রতি জাপান এয়ারলাইন্সও কলকাতা থেকে উড়ান চালাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে বিমানবন্দরের অধিকর্তা বি পি শর্মা জানিয়েছেন। তাঁদের কাছে বিস্তারিত তথ্য পাঠিয়েছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। নতুন টার্মিনালটি আগামী বছর ২৩ জানুয়ারি উদ্বোধন হবে। বিমানমন্ত্রী বলেন, “উদ্বোধনের জন্য আমরা রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে অনুরোধ করেছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ওই দিন আমন্ত্রণ জানানো হবে।” |
ইতিমধ্যেই নতুন টার্মিনালে পাঁচটি এরোব্রিজ (স্বয়ংক্রিয় বারান্দা) লাগানোর কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। বিমান থেকে যাত্রীরা সরসারি এই এরোব্রিজ দিয়ে টার্মিনালে যাতায়াত করতে পারবেন। বিমানবন্দরের এক অফিসারের কথায়, “কলকাতা থেকে এখন যতগুলি আন্তর্জাতিক উড়ান রয়েছে, তার জন্য পাঁচটি এরোব্রিজ যথেষ্ট।” যদিও আন্তর্জাতিক উড়ান চালানোর ক্ষেত্রে জরুরি শুল্ক ও অভিবাসন দফতরের কিছু কাজ এখনও বাকি রয়েছে।
অভ্যন্তরীণ উড়ান চালায় এমন বিমানসংস্থার এক কর্তা বলেন, “বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ চাইলেও নতুন টার্মিনালে এখন আমাদের সব অভ্যন্তরীণ উড়ান সরিয়ে নেওয়া যাবে না। কিছু উড়ান সরিয়ে নিয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু, নতুন টার্মিনালের ভাড়া অনেক বেশি। হিসেব করে দেখা গিয়েছে দুই টার্মিনাল থেকে উড়ান চালাতে গেলে খরচ অনেক বেড়ে যাবে। তাতে সায় নেই আমাদের সদর দফতরের।” তবে, ভারতীয় সংস্থা হিসেবে এয়ার ইন্ডিয়া ও জেট নতুন টার্মিনাল থেকে আন্তর্জাতিক উড়ান চালাবে। ইন্ডিগো-ও ২১ ডিসেম্বর থেকে কলকাতা-ব্যাঙ্কক রুটে উড়ান শুরু করছে। ফলে, নতুন টার্মিনাল থেকে তাদেরও উড়ান ছাড়বে। স্পাইসজেটও কলকাতা থেকে অনতিবিলম্বে আন্তর্জাতিক উড়ান চালাবে বলে এ দিন বিমানমন্ত্রী জানিয়েছেন।
বিমান টিকিটের দাম ক্রমেই বাড়ছে। সেই দাম নিয়ন্ত্রণে কি মন্ত্রক কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে? বিমানমন্ত্রী বলেন, “টিকিটের দাম নির্ভর করে জ্বালানির দামের উপরে। প্রতিটি রাজ্য সরকারই বিমান জ্বালানির উপরে আলাদা কর নেয়। দিল্লিতে ২০ ও মুম্বইয়ে ২৫ শতাংশ কর দিতে হয়। কলকাতায় ২৯ শতাংশ।” করের পরিমাণ কমানোর জন্য সব রাজ্য সরকারকে চিঠি লিখে অনুরোধ করা হয়েছে। এর মধ্যে সাড়া দিয়েছে শুধু মহারাষ্ট্র। ছত্তীসগঢ় মাত্র ৪ শতাংশ কর নিচ্ছে বলে সেখানে এখন উড়ান সংখ্যা বেড়েছে বলেও মন্তব্য করেন অজিত সিংহ। |