|
|
|
|
আমরি-কাণ্ডের বছর পার |
কর্মী সঙ্কটই অজুহাত পশ্চিম মেদিনীপুরে, উদাসীন দমকলও |
অভিজিৎ চক্রবর্তী • মেদিনীপুর |
প্রশাসন বা দমকলের তরফে নজরদারি আরও কড়া হলে হয়তো বা ছবিটা বদলাতে পারত। কিন্তু হুঁশ নেই কারও। ফলে আমরি-কাণ্ডের বছর পেরোলেও পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল, খড়্গপুর, মেদিনীপুর সদর থেকে ঝাড়গ্রামযথাযথ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি কোথাও, সে নার্সিংহোমই হোক বা বহুতল বাড়ি কিংবা প্রেক্ষাগৃহ।
দমকলের অজুহাত, দফতরের কর্মী সঙ্কট এতটাই তীব্র যে নিজেদের বিভিন্ন কাজ সামলে নিয়মিত নজরদারি করা সম্ভব হচ্ছে না। দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, দমকলের শর্ত মেনে চলার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিটি সংস্থাকেই কী কী করণীয় তা জানানো হয়েছিল। অনেকেই আসছেন। কাগজপত্র ঠিকঠাক দেখে তাদের অনেককেই প্রাথমিক লাইসেন্স (অস্থায়ী) দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আদপে দমকল বিধি মানা হচ্ছে কি না, তা দেখতে নিয়মিত পরিদর্শন শুরু হয়নি। দফতরের আঞ্চলিক অধিকর্তা (পশ্চিমাঞ্চল) তপন ঘোষ বলেন, “কর্মী সঙ্কট রয়েছে। তবে এ বার আমরা তল্লাশি শুরু করব।” |
|
|
পড়ে রয়েছে দাহ্য বস্তু (বাঁ দিকে)। খোলা বিদ্যুতের তারও (ডান দিকে)।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
|
আমরির ঘটনার পর প্রথম-প্রথম দমকলের আধিকারিকরা জেলার বিভিন্ন নার্সিংহোম এবং সরকারি হাসপাতালে রুটিন অভিযান চালিয়েছিলেন। নির্দেশ দিয়েছিলেন দমকলের বিধি মেনে চলার। তখন ভয়ে বা যে কোনও কারণেই হোক প্রাথমিক ভাবে কিছু নার্সিংহোম এমনকী হাসপাতালেও অগ্নিনিবার্পক যন্ত্র লাগানো হয়েছিল। কিন্তু অগ্নিনিবার্পক যন্ত্র কী ভাবে ব্যবহার করতে হয় সে ব্যাপারে প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে। ফলে যন্ত্র লাগানোই সার। ওই যন্ত্র ব্যবহারের জন্য প্রশিক্ষণ নেওয়া, দফতরের শর্ত মেনে লাইসেন্স বা এনওসি নেওয়ার ব্যপারে আবেদন করায় উদ্যোগী হননি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ।
দমকল সূত্রে খবর, আমরি কাণ্ডের পরেই পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন শহরে ঘুরে নার্সিংহোমকে কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছিল। যেমন, প্রতিটি নার্সিংহোমে জমির কাগজপত্র, প্ল্যান, ট্রেড লাইসেন্স, নার্সিংহোম চালানোর জন্য সরকারি অনুমতি-সহ বেশ কিছু জিনিস থাকতে হবে। কিন্তু এখনও অনেকেই ওই সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে আবেদন করেননি। দফতরের আঞ্চলিক অধিকর্তা তপন ঘোষ বলেন, “আমাদের হাওড়ার অফিসে কাগজপত্র নিয়ে এসে আবেদন করলেই দফতরের আধিকারিকরা পরিদর্শন করবেন। কিন্তু ওই সমস্ত কাগজপত্র এবং আবেদন জমা নিতে তো জেলার শহরে শহরে অলিতে-গলিতে ঘোরা সম্ভব নয়। মেদিনীপুরে নতুন জেলা অফিস চালু হয়েছে। যাঁরা হাওড়ায় আসতে পাচ্ছেন না তাঁরা মেদিনীপুর অফিসে গিয়েও আবেদন করতে পারেন।” পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দমকল বিভাগের আধিকারিক বিলাস নাগ বলেন, “এখনও পযর্ন্ত আমার অফিসে কেউ আসেননি। এলেই সাহায্য করা হবে। আর অনিয়ম রুখতে স্থানীয় প্রশাসনকে নিয়ে দ্রুত অভিযান চালানো হবে।” দফতরের এই সব ছাড়পত্র যে বিভাগ দেয় অর্থাৎ এফপিও বিভাগের (ফায়ার প্রোটেকশন অফিসার) অফিসার (লাইসেন্স) সৌমেন দাস বলেন, “প্রথম প্রথম আমরা বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে সচেতনতা শিবিরও করেছিলাম। একাধিকবার বলা হয়েছিল কী কী কাজগপত্র লাগবে। কিন্তু আবেদন তো করতে হবে। যাঁরা আসছেন, তাঁদের হয়েও যাচ্ছে।” |
|
|
|
|
|