বেহাল জাতীয় সড়ক, দুর্ভোগে এলাকাবাসী
কের পর এক বন্ধ হয়ে গিয়েছে ২৫টি বাস। আরও ৪৫টি কোনও মতে জোড়াতালি দিয়ে চললেও যে কোনও সময়ে বন্ধ হতে পারে। কারণ, বেহাল ৩১ সি জাতীয় সড়কের গাড়ি চালালে তা বিকল হয়ে পড়ছে। ফলে, চরম দুর্ভোগে পড়ছেন নকশাবাড়ি ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় কয়েক লক্ষ মানুষ।
সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন স্কুল, কলেজ, সরকারি দফতরে যাতায়াতকারীরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, আগে পাঁচ মিনিট অন্তর বাস মিললেও এখন তা কম করে আধঘণ্টা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে সাত সকালে বাড়ি থেকে বার হয়ে শিলিগুড়ি, মাটিগাড়া, শিবমন্দির, বাগডোগরা ফিরতে রাত হয়ে যাচ্ছে। শিলিগুড়ি মিনিবাস সিন্ডিকেটের সম্পাদক মৃণাল সরকার বলেন, “খরচ, লোকসান পোষাতে না পেরে ওই ২৫টি বাস বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আরও ১০টি যে কোনও সময় বন্ধ হতে পারে। আমাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছে।”
শিলিগুড়ি থেকে পানিট্যাঙ্কি প্রায় ৩০ কিলোমিটার রাস্তা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেহাল বাগডোগরা থেকে নকশালবাড়ি অবধি। প্রায় ১৩ কিলোমিটার রাস্তার খানাখন্দ। পিচের চাদর বলে কিছু নেই। পাথরে ছেয়ে গিয়েছে গোটা রাস্তা। একই অবস্থা নকশালবাড়ি থেকে পানিট্যাঙ্কি অবধি রাস্তার। ওই রাস্তার দুধারে সিঙ্গিঝোরা, সন্ন্যাসীথান, কিরণচন্দ্র, মেরিভিউ, পাহাড়গুমিয়া এবং অটল চা বাগান রয়েছে। জুন থেকে অক্টোবর ভরা মরশুমে প্রতিদিন প্রতিটি বাগান থেকে কম করে এক ট্রাক বোঝাই চা বাগান গুদাম বা নিলামে যায়।
চা বাগানগুলি সূত্রের খবর, প্রতিটি বাগানে কম করে তিন-চারটি গাড়ি রয়েছে। সাধারণত ১০ শতাংশ হারে বছরে গাড়ির ক্ষতির পরিমাণ ধরা হয়ে থাকে। বর্তমানে তা ১২-১৪ শতাংশ হারে চলছে। এতে খুব কম করেও বছরের আর্থিক হিসাবে বাগানগুলির ৫০ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকার ক্ষতি হচ্ছে। টিপা এবং টিবিআইটি-র সচিব রাজা দাস এবং ভাস্কর চাওলা একই সুরে বলেন, “যা অবস্থা তাতে বাগানের খরচ বাড়ছে। কর্মীরা বাইরে থেকে দেরিতে কাজে আসছেন। কর্মীদের শরীর খারাপ হচ্ছে।”
এলাকার বাসিন্দাদের কী হাল তা স্পষ্ট নকশালবাড়ি হাসপাতালের চিকিৎসক জয়দীপ ঘটকের কথায়। তাঁর অভিজ্ঞতা, “ওই রাস্তায় চলাচল করে শরীরে নানা রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে। হাসাপতালে নিত্যযাত্রীদের অনেকে ধুলোর ফলে শ্বাসকষ্ট, কোমর ব্যথার মতো নানা রোগ নিয়ে আসছেন।” নকশালবাড়ি নন্দপ্রসাদ হাইস্কুলের শিক্ষক কৌশিক রায় বলেন, “শিলিগুড়ি যাতায়াত করতে আগে ৪৫ মিনিট সময় লাগলেও এখন দেড় ঘণ্টায় এসে দাঁড়িয়েছে॥ বাসিন্দাদের এই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্যে কিছু আশা’র কথা শুনিয়েছেন মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির কংগ্রেসের বিধায়ক শঙ্কর মালাকার। তিনি বলেন, “বাস বন্ধ, বাসিন্দাদের দুর্ভোগের কথা জানি। গত মাসেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাশমুন্সিকে নিয়ে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী সিপি জোশীর কাছে দরবার করি। প্রায় ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হয়ে যাবে।” রাস্তায় দায়িত্বপ্রাপ্ত জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার নির্মল মণ্ডল শুধু বলেন, “বাসিন্দাদের সত্যিই দুর্ভোগ হচ্ছে। আর কয়েকটা দিন। আমরা চেষ্টা করছি, এই মাসের শেষেই রাস্তাটি ঠিকঠাক করার।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.