|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
দল বেঁধে সুকুমার তর্জমা |
আশিস পাঠক |
আবার সে এসেছে ফিরিয়া! ইংরেজিতে। ইংরেজিতে পাগলা দাশুর গল্পের অনুবাদ প্রায় হয়ইনি। এই সাম্প্রতিক দ্য ক্রেজি টেলস অব পাগলা দাশু অ্যান্ড কো. (হাশেত ইন্ডিয়া, ২৯৫.০০) এক অর্থে পথিকৃৎ এবং অন্য রকম। কারণ কোনও এক জন নয়, অভিজিৎ গুপ্তর তত্ত্বাবধানে ‘যাদবপুর ইউনিভার্সিটি ট্রানস্লেটর্স কালেকটিভ’ এই দুঃসাহসটি দেখিয়েছে। অবিশ্যি দাশুর ইংরেজি অনুবাদের মতো সাহসী কাজ দল বেঁধে করাই ভাল!
অনুবাদ নিয়ে রীতিমতো কর্মশালা করে এ বইয়ে পাগলা দাশু ও অন্যান্য মিলিয়ে পঁচিশটা গল্প অনূদিত হয়েছে। বইটির মূল অবলম্বন পাগলা দাশু-র প্রথম সংস্করণ (এম সি সরকার, ১৯৪০)। সে বইয়ের সব গল্পেই দাশরথি ছিল না। এ বই তাই শুধু দাশুর নয়, দাশু অ্যান্ড কোং-এর। কর্মশালাটি যখন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে তখন মনে ভারি একটা শঙ্কা হয়েছিল। কে জানে, কর্মশালা, আনুষ্ঠানিক প্রকাশ ইত্যাকার বাক্সের পরে বাক্স খুলে হাতে যে বইটি আসবে তাতে হয়তো অদৃশ্য চিরকুটে দাশুর সেই অমোঘ বাণীটিই পড়তে হবে: কাঁচকলা খাও!
আসলে, ভূমিকায় নবনীতা দেবসেন ঠিকই লিখেছেন, পাগলা দাশু (অ্যান্ড কোম্পানি) বড়ই পাগ্লা এবং বড়ই বাংলা। যশোরের কই যেন নরমূর্তিধারী, চালিয়াৎ চন্দর, জগ্যিদাসের মামা, আবার সে এসেছে ফিরিয়া, হলদে সবুজ ওরাংওটাং, কিংবা দ্রিঘাংচুর মজা বাংলা ছাড়া আর কোন ভাষাতেই বা ফুটবে? ফোটানোর চেষ্টাও করেনি এই অনুবাদ। দ্রিঘাংচু বা হলদে সবুজ ওরাংওটাং বা বিশেষ নাম ও প্রকাশগুলি বাংলাতেই রেখে রোমানে লেখা হয়েছে এই অনুবাদে। ‘পণ্ডিতমশাই’কে সর্বত্র টিচার করে মজাটি মাঠে মেরে ফেলা হয়নি। একটি গ্লসারি কিংবা কয়েকটি টীকায় বরং ধারণাটিকে ইংরেজিতে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বহু যত্নে, দাশরথির প্রতি সব রকম সম্মান বজায় রেখে এমন অনুবাদ পড়ে ভরসা জাগে, দাশুর খ্যাপামিও তবে অনুবাদযোগ্য। সত্যজিৎ রায়ের আঁকা বেশ কিছু দুর্লভ অলংকরণ (সঙ্গে তারই একটি) এ বইয়ের সংগ্রহযোগ্যতা বাড়িয়েছে। কিন্তু ‘দ্য বুকমাইন জেমস’ নামে পরিশিষ্টে যে ছবিগুলি ব্যবহার করা হয়েছে তার সবই ছবিতে সুকুমার-এর (গ্রন্থনা সন্দীপ রায় ও সিদ্ধার্থ ঘোষ, আনন্দ) পৃষ্ঠা বাংলা ক্যাপশন-সমেত স্ক্যান করে বসিয়ে দেওয়া। পৃষ্ঠাগুলিকেই ছবি বলে তার ক্যাপশনও করা হয়েছে। অথচ দীর্ঘ অ্যাকনলেজমেন্টস-এ কোনও স্বীকৃতি নেই। দাশরথি থাকলে একটু বুদ্ধি সে দিতে পারত, ছবিগুলি আলাদা করে স্ক্যান করলেই উৎসটা প্রকট হত না। সব আপন করে নেওয়ার আগে একটু সংযমের দাঁড়ি টানতে পারলে হাটের মাঝে হাঁড়িটি কিন্তু ভাঙে না... |
|
|
|
|
|