|
ক্লিক অর প্রেস |
চিন্তায় নিরাপত্তা |
|
যেমন খুশি পাসওয়ার্ড নয়। মেনে চলুন
কিছু নিয়ম। জানাচ্ছেন সুরিত ডস |
নিশ্চিন্তে আর থাকা গেল না!
আট থেকে ২০ অক্ষরের পাসওয়ার্ড দিয়েছেন। অক্ষর, সংখ্যা আর বিশেষ অক্ষরের সমন্বয় করে পাসওয়ার্ড তৈরি করেছেন। তার পরেও আপনার অ্যাকাউন্ট বেহাত হতে পারে। আগে একটা ঘটনার কথা বলি।
আমার এক বন্ধু ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছিলেন না। যত বার পাসওয়ার্ড লেখেন তত বার বলে ভুল পাসওয়ার্ড দেওয়া হচ্ছে। পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে অ্যাকাউন্ট খোলা গেলেও কয়েক দিন পরে যে-কে-সেই। বোঝা যায় অ্যাকাউন্টটি হ্যাকারের পাল্লায় পড়েছে। শেষ পর্যন্ত তাঁকে ওই অ্যাকাউন্টটি ডিলিট করে দিতে হয়। মাঝেমধ্যেই ফেসবুকের অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং-এর এ রকম খবর আসে। বিষয়টি একেবারেই হাল্কা ভাবে নেওয়া উচিত নয়। ফেসবুক দিয়ে শুরু। শেষ কোথায় কেউ কিন্তু জানে না।
|
|
হ্যাকাররা বসে নেই। দিনে দিনে তারাও পাসওয়ার্ড ভাঙার নতুন নতুন পদ্ধতি খুঁজে বার করছে। এর মধ্যে দু’টি খুব প্রচলিত উপায় হল নকল ওয়েবসাইট তৈরি আর ম্যালওয়্যার। হ্যাকাররা আপনার ব্যাঙ্ক বা ক্রেডিটকার্ডের ওয়েবসাইটের হুবহু নকল ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলেন। যাচাই না করে আপনি সেখানে ইউজার নেম আর পাসওয়ার্ড লিখলেই আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাকারের হস্তগত। ম্যালওয়্যার হল এক ধরনের সফ্টওয়্যার। ওয়েবসাইট বা ই-মেলের মধ্যে গোপনে এই ধরনের সফ্টওয়্যার পাঠানো হয়।
এই সব ওয়েবসাইটে ঢুকলে বা ই-মেল খুললে এই সফ্টওয়্যার আপনার কম্পিউটারে ঢুকে যাবে। তার পরে গোপনে কি-লগারের মাধ্যমে আপনার টাইপ করা পাসওয়ার্ড, ইউজার নেমের মতো নানা তথ্য হ্যাকারকে পাঠাতে থাকবে। উইন্ডোজ বা অ্যানড্রয়েড দু’টি অপারেটিং সিস্টেমেই হ্যাকাররা ঢুকতে সক্ষম।
তবে কি পাসওয়ার্ডের দিন ফুরিয়েছে? বিশেষজ্ঞরা তেমনই মনে করছেন। পাসওয়ার্ডের পাশাপাশি আঙুলের ছাপ, চোখের মণির স্ক্যান, ফেস রেকগনিশন-এর মতো প্রযুক্তির কথাও ভাবা হচ্ছে। কিন্তু এই সব প্রযুক্তি আসতে এখনও কিছু সময় লাগবে।
তা হলে এখন কী করবেন?
পাসওয়ার্ড সামলে রাখার সাধারণ নিয়মগুলি মেনে চলুন। এতে হ্যাকারদের কিছুটা হলেও ঠেকিয়ে রাখতে পারবেন। নীচে নিয়মগুলি জানালাম:
অপরিচিতের থেকে আসা কোনও ই-মেল খুলবেন না। খুললেও কোনও লিঙ্ক দেওয়া থাকলে তাতে ক্লিক করবেন না। ফেসবুকে বা চ্যাটে কোনও অপরিচিতের দেওয়া লিঙ্ক পেলে তাতে ক্লিক করবেন না। ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিংয়ের ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড জানতে চেয়ে কোনও মেল এলে দ্রুত তা সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ককে জানান। ব্যাঙ্ক এ ধরনের মেল পাঠায় না।
এক পাসওয়ার্ড সব জায়গায় ব্যবহার করবেন না। বিভিন্ন ই-মেল আইডির জন্য বিভিন্ন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। অভিধানের কোনও শব্দ এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। কোনও বাক্য ব্যবহারও এড়িয়ে যাওয়া উচিত। বড় পাসওয়ার্ড ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। পাসওয়ার্ড ম্যানেজারের মতো কোনও সফ্টওয়্যার ব্যবহার করলে ভাল হয়।
ঠিক ওয়েবসাইট খুলেছেন কি না দেখে নিন। পারলে দু’দফায় পরখ করার ব্যবস্থা করুন। এ ক্ষেত্রে আপনার মোবাইলে মেসেজে একটি কোড আসবে। সেটি ব্যবহার করলেই আপনি ওয়েবসাইটে
ঢুকতে পারবেন।
ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং-এ কোনও লেনদেনের সময়ে কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। এই প্রশ্নের উত্তরগুলি আগেই দিয়ে রাখতে হয়। উল্টোপাল্টা উত্তর দিয়ে রাখুন। উত্তরগুলি ঠিকমতো মনে রাখুন। এতে হ্যাক করা কিছুটা কঠিন হবে। আপনার নামের কাছাকাছি কোনও ইউজার নেম ব্যবহার করবেন না। তা ছাড়া ব্যাঙ্ক বা অন্য কোনও সাইটে আপনার সম্পর্কে যত কম তথ্য থাকে তত ভাল।
একই ব্রাউজারে বার বার নেট ব্যাঙ্কিং না করে নানা ব্রাউজার ব্যবহার করুন। ব্রাউজারগুলি ঠিকমতো আপডেট করুন। ফায়ারফক্স, ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার, গুগ্ল ক্রোমের মতো ব্রাউজারে কোনও সন্দেহজনক ওয়েবসাইট খুলতে গেলে আপনাকে জানিয়ে দেবে।
|
গেটি ইমেজেস-এর সৌজন্যে
|
|
|