যুবভারতীতে মজেছেন ব্রাজিল মাস্টার্সের ‘হুজ হু’-রা।
সকালে শহরে পা দেওয়ার পর বিকেলে সল্টলেকের স্টেডিয়াম দেখে ওঁদের একজন পর্তুগিজে যখন বলছেন ‘জাইগ্যানতেসকো’ (বিরাট), দ্বিতীয় জন তখন মুখে তাঁর ট্রেডমার্ক দুষ্টুমিষ্টি হাসি ঝুলিয়ে বললেন, “কমো ও নসসো মারাকানা” (অনেকটা আমাদের মারাকানার মতো)।
কে ওঁরা? প্রথম জনের পিতৃদত্ত নাম কার্লোস কায়াতানো ব্লেডর্ন ভেরি। আর দ্বিতীয় জন হোসে রবার্তো গামা ডি’ অলিভিয়েরা। তবে বাংলার ফুটবলপ্রেমীদের হৃদয়ে ওঁরা দুঙ্গা, বেবেতো নামেই সোনার ফ্রেমে বাঁধানো। বিকেল সাড়ে তিনটে। ন’জন ব্রাজিলীয় এবং কলম্বিয়ান গোলকিপার হিগুয়েতাকে নিয়ে ডব্লিউ বি ২৭ ই ৩৭০৪ নম্বরের বাসটা এসে দাঁড়াল যুবভারতীর গেটে। প্রথমে নেমে এলেন ৯৪-এর বিশ্বজয়ী ব্রাজিল দলের জিনহো। তারপরই সেই সারল্য ভরা হাসি মুখে নিয়ে নামলেন বেবেতো। পিছনে মাউরো সিলভা, দুঙ্গা, জুনিনহো, আলদেয়াররা। মাঠে তখন দুঙ্গা-দের বিরুদ্ধে শনিবারের ম্যাচের জন্য গা ঘামাচ্ছেন সেই ১৯৭৭ সালে জুনিনহোদের দেশের জনৈক ‘মালান্দ্রো পেলুস’ (আমরা বলি পেলে)-এর শংসাপত্রপ্রাপ্ত গৌতম-সুব্রতরা। |
মাঠে নেমেই হিগুয়েতা তাঁর বিখ্যাত ‘স্করপিওন কিক’ দেখাতেই গৌতম সরকার চোয়াল শক্ত করে বললেন, “কাল জান দিয়ে খেলতে হবে।” সুব্রতর স্মৃতিচারণা,“পেলের ম্যাচটাই সেরা।”
রবার্তো কার্লোস আসেননি। শনিবার তাই দুঙ্গাদের দলে খেলতে দেখা যাবে ভারতে খেলা ব্রাজিলীয় বেটো, ব্যারেটো, লিমা, মার্কোসদের। জমজমাট অনুশীলনে ১৮ গজ বক্সকে মাঠ বানিয়ে ফুটবল নিয়ে শুরু ব্রাজিলীয়দের ‘জোগো বোনিতো’ (দৃষ্টিনন্দন খেলা)। সূক্ষ্ম পাসের সঙ্গে ঝকঝকে ড্রিবল। দু’গোল করে যখন মাঠ ছাড়ছেন বেবেতো এবং হিগুয়েতা তখন সাংবাদিক, পুলিশের মধ্যেই হুড়োহুড়ি ছবি তোলা এবং সই নেওয়ার জন্য।
সাংবাদিক সম্মেলনে ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্রের সামনেও মুখে হাইভোল্টেজ হাসি রিও ডি জেনেইরোর লেজিসলেটিভ অ্যাসেমব্লিতে ডেমোক্রেটিক লেবার পার্টির সদস্য বেবেতোর। ব্যারেটোকে দোভাষী বানিয়ে বললেন, “কলকাতায় এসে ভাল লাগছে।” আর নেইমার প্রসঙ্গ? শুনে রোমারিওর একদা সঙ্গী বেবেতো বললেন, “ভাল। তবে অনেক পথ যেতে হবে।” তাঁরা দেশকে ‘টেট্রাচ্যাম্পিয়ন’ (চতুর্থ বার বিশ্বজয়ী) করেছিলেন। সে বারের কোচ পাহিরা ফের ব্রাজিলের দায়িত্বে স্কোলারির সহযোগী হয়ে। ‘হেক্সা’ (ষষ্ঠ বার) হবে দু’বছর পর? শুনে টেট্রার অধিনায়ক বলছেন, “গ্রেট কোচ। কিন্তু আরও ভাল খেলতে হবে স্কোলারির দলকে।” |