ইডেনে চালকের আসনে বসে পড়েছে ইংল্যান্ড। চার উইকেট হাতে। প্রায় দু’শো রানে এগিয়ে কুকরা। শনিবার ব্যবধানটা ওরা যতটা পারে বাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টাই যে করবে, এই ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। ইডেনের উইকেটের যা অবস্থা, তাতে যে কোনও দলই চতুর্থ ইনিংসে আর ব্যাট করতে চাইবে বলে মনে হয় না। তার চেয়ে ম্যাচ বাঁচানোর চেষ্টা করাই ভাল।
টস জিতে ব্যাট করতে নামার পর ভারতীয় ব্যাটিংয়ের যা দশা হয়েছিল, তা ঢাকার দায়িত্বটা নিতে পারত বোলাররাই। কিন্তু ওরাই বা পারল কোথায়? জাহির, ইশান্তরা রিভার্স সুইংয়ে হতাশ করল। স্পিনাররাও শুরুর দিকে তেমনই। বরং তৃতীয় দিনের শেষ দুই সেশনে ওরা কিছুটা হলেও নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে বল করতে পেরেছে বলে মনে হল। মোদ্দা কথাটা হল, ইংরেজরা যে দুরমুশ করে যাচ্ছিল, সেই দুরমুশ করেই চলেছে। এই টেস্ট বাঁচিয়ে সিরিজকে নাগপুর পর্যন্ত জিইয়ে রাখার জন্য ভারতের ব্যাটসম্যানদের ইডেনে দ্বিতীয় ইনিংসে কিছু করে দেখাতে না পারলে চলবে না।
ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের প্রশংসা করতেই হবে। তবে তার আগে অ্যান্ডারসন আর তার সতীর্থরা যা করেছে, তা ভুলে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। প্রথম দিন ইডেনে ব্যাটসম্যানদের স্বর্গে আস্তিনের নীচে বেশ জবরদস্ত একটা ‘প্ল্যান’ নিয়ে নেমেছিল ওরা। ভারতীয় স্কোরবোর্ডকে আটকে রাখার জন্য এক দিক থেকে নাগাড়ে বল করে গেল মন্টি পানেসর। অন্য দিক থেকে উপমহাদেশের মাটিতে জীবনের সেরা স্পেলগুলো করে গেল অ্যান্ডারসন। তাতেই ধস নামল ভারতীয় ব্যাটিংয়ে।
ব্যাটিং সহায়ক উইকেট। তাতে প্রথম ইনিংসে বড় রান তুলতে না পারলে তো ভুগতেই হবে। আমদাবাদে যা পেরেছিল ভারত, মুম্বই-কলকাতায় তা পারল না বলেই এই বিপত্তি। পুরো ছবিটা পাল্টে দিল, এক জনই, অ্যালিস্টার কুক। ওর এখন স্বপ্নের দৌড় চলছে। কুকের সাফল্যের উষ্ণতায় তেতে গিয়েই নিজেদের মেলে ধরল ওর সতীর্থরা। এটা যে কুকেরই সিরিজ, তা বলতে আমার কোনও দ্বিধা নেই।
এই ইডেনেই ভারতের সেরা লড়াইয়ে ফেরার ইতিহাসের কথা মাথায় রেখে বরং শনিবার মাঠে নামুক ধোনিরা। ইডেনের সেরা লড়াইয়ের এক সৈনিক সচিন তো রানে ফিরে এসেছে। সহবাগ, পূজারা, গম্ভীররা সবাই বড় ইনিংস খেলতে পারে। তাই আশাহত হওয়ার কোনও কারণ দেখছি না। এখনও বলছি, ভারত লড়াইয়ে ফিরতে পারে। |