খেলা
লক্ষ্য ব্রাজিল
নুশীলনের ভাল মাঠ নেই। কোচের অভাব। নেই ভাল সরঞ্জামও। এর মধ্যেও তাইওয়ান থেকে এশিয়ান মাস্টার্স অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা এবং ব্রোঞ্জ জিতে আনলেন হাওড়ার গৃহবধূ বেবী ঘোষ।
আটের দশকে রাজ্য অ্যাথলেটিক্সে বেবী ছিলেন পরিচিত মুখ। অংশ নিতেন জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতাতেও। শুধু অ্যাথলেটিক্স নয়, ফুটবল, ক্রিকেটও খেলেছেন। বিয়ের পরে অ্যাথলিট চর্চা থেকে একটু দূরে সরে গেলেও শুরু করেন হ্যান্ডবল খেলা। বেবীর কথায়: “বাড়ি থেকে সকালে ডুমুরজলায় হাঁটতে যেতাম। দেখতাম নিভা দেয়াশি, তন্দ্রা বসুর মতো প্রাক্তন অ্যাথলিটরা সারদা অ্যাথলেটিক সেন্টারে নিয়মিত অনুশীলনে আসছেন। ওঁদের ডাকে সাড়া দিয়েই শটপাট, ডিসকাস চর্চায় নেমে পড়লাম। কোচ ছিলেন প্রয়াত সুকুমার মাল।”
২০০৮-এ শিলিগুড়িতে প্রথম বার প্রবীণদের রাজ্য অ্যাথলেটিক্সে শটপাট এবং ডিসকাসে সোনা জিতে নেন বেবী। ওই বছরই জাতীয় প্রতিযোগিতায় দু’টোতেই জেতেন রুপো।
এ বছরই ভারত থেকে ২৬৭ জনের যে দলটি তাইওয়ানে গিয়েছিল তাতে বাংলার চার সদস্যের এক জন বেবী। মহিলাদের ৫০ বছর ঊর্ধ্ব বিভাগে নেমে ৯.৪৯ মিটার দূরত্বে শটপাট ছুঁড়ে সোনা এবং ২০.২৬ মিটার দূরত্বে ডিসকাস ছুঁড়ে ব্রোঞ্জ জেতেন তিনি। আক্ষেপ করে বেবী বললেন, “বিদেশি প্রতিযোগীদের সঙ্গে কোচ, ম্যানেজার এমনকী ম্যাসাজ ম্যান থাকে। চোট-আঘাত পেলেও আমাদের দেখার কেউ ছিল না। অনুশীলনের মাঠ বর্ষায় জলে ডুবে থাকে। সরঞ্জামের অভাব। এই সেন্টারের দেবপ্রিয় নন্দী, মনোজ বেরা, চয়ন নন্দীরা সাইতে অনুশীলনে যায়। ওঁদের থেকে ‘টিপ্স’ নিয়েছিলাম।”
সমস্যা ছিল খাওয়ারও। বেবী বললেন, “ওখানের কোনও খাওয়ার মুখে তুলতে পারিনি। সঙ্গে নিয়ে যাওয়া ছাতু, কাঁচালঙ্কা আর গুঁড়ো দুধ খেয়ে প্রতিযোগিতায় নেমেছিলাম।”
আগামী বছর ব্রাজিলে প্রবীণদের বিশ্ব প্রতিযোগিতায় পদক জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন বেবী। তবে সমস্যা অনেক। তিনি বললেন, “এশিয়া চ্যাম্পিয়নশিপে গিয়ে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র দিয়েছিলেন কুড়ি হাজার টাকা। বাকিটা নানা ভাবে জোগাড় করতে হয়েছে। এ বার কী হবে জানি না!”

—নিজস্ব চিত্র




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.