প্রাণঘাতী নয়, এমন অস্ত্রে সাজছে পুলিশ
স্ত্রের নাম ‘থ্রি ওয়ে গ্রেনেড’। যা ফাটলে ধোঁয়ায় সারা শরীর চুলকোবে।
‘পিপার স্প্রে’ এমন এক অস্ত্র, যা দাগা হলে চোখ জ্বলে যাবে। তাতে অবশ্য চোখের কোনও ক্ষতি হবে না।
শুধু আওয়াজে চমকে দেবে ‘স্টান ল্যাক গ্রেনেড’।
কাঁদানে গ্যাস বা রবার বুলেটের পরে এমনই নানা ‘নন-লেথাল ওয়েপন’ (প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র) এ বার প্রচুর সংখ্যায় চলে এল রাজ্য পুলিশের হাতে। গুলির পরিবর্তে যে সব অস্ত্র প্রয়োগ করে ছত্রভঙ্গ করা যাবে বিক্ষোভকারীদের। সামলানো যাবে আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা। কিন্তু প্রাণহানি হবে না।
ছবিতে, বলাগড়ে পুলিশের নতুন অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ। —নিজস্ব চিত্র।
ইতিমধ্যেই জঙ্গলমহল-সহ দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের থানাগুলিতে এই সব অস্ত্র পাঠাতে শুরু করেছে রাজ্য সরকার। শুরু হয়েছে প্রশিক্ষণ। হুগলির বলাগড়ের সবুজদ্বীপে শুক্রবার ওই সব অস্ত্রের এক দফা প্রশিক্ষণ হল। পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী-সহ জেলার ৫০ জন পুলিশ অফিসারকে ওই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তবে, এই সব অস্ত্র যে রাজ্যে এই প্রথম এল এমন নয়। বস্তুত, সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম পর্ব থেকেই আইনশৃঙ্খলা জনিত সমস্যা সামলাতে গুলির বিকল্পের সন্ধান শুরু হয়েছিল। রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের তৎকালীন ডিআইজি বিবেক সহায়ের (বর্তমানে সিআরপিএফের আইজি) নেতৃত্বে একটি কমিটি গড়ে বাম সরকার। ওই পুলিশকর্তা বিএসএফ এবং সিআরপিএফের ঘাঁটিগুলিতে গিয়ে নানা ধরনের অস্ত্রের তালিকা তৈরি করেন। তার পর থেকেই রাজ্যে ওই সব অস্ত্র আসা শুরু হয়। কিন্তু পুলিশ সূত্রের খবর, পরিকাঠামো এবং প্রশিক্ষণের অভাব ছিল। অস্ত্রগুলিও বেশি সংখ্যায় পাওয়া যাচ্ছিল না। ফলে, অস্ত্রগুলি ব্যবহারের পরিকল্পনাই কার্যত জলে যেতে বসে। অথচ, এই ধরনের অস্ত্র বিদেশে দীর্ঘদিন ব্যবহার হচ্ছে।
পুলিশের গুলি কবে কোথায়
১৪ মার্চ, ২০০৭: জমি-আন্দোলন ঘিরে উত্তাল নন্দীগ্রাম। পুলিশের গুলিতে ১৪ জনের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ।
১ ডিসেম্বর, ২০১১: হুকিং-বিরোধী অভিযান ঘিরে গোলমাল মগরাহাটের নৈনানে। পুলিশের গুলিতে দু’জনের মৃত্যুর অভিযোগ।
৬ নভেম্বর, ২০১২: দুবরাজপুরের লোবায় পুলিশের সঙ্গে জনতার সংঘর্ষ। পুলিশের গুলিতে ৪ জন জখম হন বলে অভিযোগ।
১৪ নভেম্বর, ২০১২: জমি নিয়ে গোলমালে নদিয়ার তেহট্টে পুলিশের গুলিতে এক জনের মৃত্যু। জখম ৪ জন।
রাজ্যে পালাবদলের পরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নৈনান, বীরভূমের লোবা থেকে নদিয়ার তেহট্ট তিনটি জায়গায় গোলমালে পুলিশের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। গুলিতে হতাহতও হন কয়েক জন। এ নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয় রাজ্য-রাজনীতিতে। এই পরিস্থিতিতে গুলির বিকল্প অস্ত্রের সন্ধানে ফের উঠেপড়ে লাগে রাজ্য সরকার। শেষমেশ, কয়েক দিন আগে ওই ধরনের বেশ কিছু অস্ত্র হাতে আসে পুলিশের।
বিবেক সহায় বলেন, “উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে এই সব অস্ত্র কাজে লাগবে। এ বার নিয়মিত ভাবে ওই সব অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন প্রশিক্ষিত পুলিশকর্মীরা। গুলি না চালিয়েও আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা সামলানো সহজ হবে। সব মিলিয়ে প্রায় সাত-আট ধরনের অস্ত্র এসেছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.