যা আশঙ্কা করা হচ্ছিল, ঠিক তা-ই হল। বন্দরের অছি পর্ষদের (কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট, সংক্ষেপে কেওপিটি) বৈঠকেই স্পষ্ট হয়ে গেল, এবিজি’র হলদিয়া-ত্যাগের মাসুল গুনতে শুরু করেছে কলকাতা বন্দর।
২৯ নভেম্বরের বৈঠকে বন্দরের অর্থ বিভাগ ঘোষণা করেছে, হঠাৎ পণ্য খালাস কমে যাওয়ায় এ বছর মোট উদ্বৃত্ত হবে মাত্র সাকুল্যে ৯ কোটি টাকা। যা কিনা গত বছর ছিল ১৩১ কোটি! শুধু তা-ই নয়, আগামী বছর বন্দরকে মোট প্রায় ৩৯ কোটির ঘাটতি বহন করতে হবে। সব মিলিয়ে পণ্য খালাস কমে যাওয়ার জেরে দু’বছরের মধ্যেই বন্দর লোকসানে চলে যাবে বলে অছি পরিষদে হিসেব পেশ করেছে অর্থ বিভাগ। অছিদের মধ্যে বিলি হওয়া বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকেই এ কথা জানা গিয়েছে। অছিরা কী বলছেন?
জাহাজ মন্ত্রকে প্রস্তাবিত বাজেটের অনুমোদন চাওয়ার আগে অর্থ বিভাগকে ফের হিসেব কষতে বলা হয়েছে। পণ্য খালাস থেকে আয় বাড়ানো যাবে না, তাই অন্য উপায়ে আয়বৃদ্ধি বাড়াতে এবং খরচ কমানোর নির্দিষ্ট উপায় বাতলাতে বলেছে অছি পর্ষদ। বৈঠকের সিদ্ধান্ত, মুখরক্ষার বাজেট তৈরি হলে তবেই তা মন্ত্রকে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। |
২৯ নভেম্বরে কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের ওই বিশেষ বাজেট-বৈঠকের কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, চলতি ২০১২-’১৩ অর্থবর্ষে আয়-ব্যয়ের যে পরিকল্পনা আগে করা হয়েছিল, তার সঙ্গে বাস্তবের বিস্তর ফারাক। বন্দরের অর্থ-উপদেষ্টা তথা চিফ অ্যাকাউন্টস অফিসার শ্যামলকুমার ভট্টাচার্য ওই ফারাকের জায়গাগুলি চিহ্নিত করে বলেছেন, প্রাথমিক বাজেট পরিকল্পনা অনুযায়ী, ড্রেজিং বাবদ কেন্দ্রের থেকে পাওয়া ভর্তুকি এবং অন্যান্য আয় মিলিয়ে বন্দরের মোট আয় হওয়ার কথা ছিল অন্তত ১৯০৬ কোটি টাকা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তা মোটামুটি ১৬৭৫ কোটির টাকার বেশি হবে না। আর সংশোধিত বাজেট মোতাবেক, চলতি অর্থবর্ষে কলকাতা ডক প্রায় ৮ কোটি টাকা লোকসান করবে, হলদিয়া ডকের উদ্বৃত্ত থাকবে ১৭ কোটির মতো। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবর্ষে কলকাতা বন্দরের উদ্বৃত্ত মাত্র ৯ কোটি টাকা। আর ২০১৩-’১৪ অর্থবর্ষে কলকাতা বন্দরের ঘাটতি দাঁড়াবে আনুমানিক ৩৮ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা। |