নতুন পাঠ্যক্রম বিষয়ে শিক্ষকদের ‘কেআরপি’ প্রশিক্ষণ ঘিরে কোচবিহারে বিতর্ক দানা বাঁধছে। বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলিকে ‘অন্ধকারে রেখে’ প্রশিক্ষণের জন্য মনোনীতদের তালিকা তৈরির অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষার মরসুমে কেন প্রশিক্ষণ হচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষকদের একাংশ। মনোনীত শিক্ষকদের একাংশ নিয়মিত প্রশিক্ষণে গরহাজির থাকায় আখেরে কতটা লাভ হবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। প্রশিক্ষণের আয়োজক সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা আধিকারিক আমিনুল আহসান বলেন, “বহুদিন ধরেই এমন অভিযোগ শুনছি। তবে এ বার প্রশিক্ষণে কারা অনুপস্থিত তা খতিয়ে না দেখে কিছু বলতে চাই না।”
৪-৭ ডিসেম্বর কোচবিহারে ওই শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। ১২টি ব্লক ও ৬টি পুরসভার প্রত্যেক এলাকা থেকে ৬ জন শিক্ষককে ‘কি রিসোর্স পার্সন’ হিসাবে এ জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলির অভিযোগ, কেআরপি প্রশিক্ষণের জন্য কাদের নাম রাখা হবে তা শাসক দল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন নিজেরা তালিকা করেছে। সর্বশিক্ষা মিশন সূত্রের খবর, শুধুমাত্র দিনহাটা মহকুমার ২৪ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণের তালিকায় রাখা হয়। প্রথম দিন ৪ তারিখ ১৩ জন উপস্থিত ছিলেন। ৫ তারিখ হাজির হন ১৮ জন। তৃতীয় দিনে ২০ জন। জেলার অন্য মহকুমা মিলিয়ে মোট ১০৮ জনের মধ্যে প্রথম দিন মাত্র ৭১ জন উপস্থিত ছিলেন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন তা বেড়ে যথাক্রমে ১০০ ও ১০৫ জন দাঁড়িয়েছে। শুক্রবার শেষ দিনেও একশো শতাংশের উপস্থিতি হবে কিনা তাও নিশ্চিত নয়।
ডব্লুবিটিএ’র কোচবিহার জেলা সম্পাদক শিশির সরকার বলেন, “দলতন্ত্রের ধারা একই আছে। সিনিয়রদের বাদ দিয়ে শাসক দলের সংগঠনের মাত্র এক বছর চাকরি করছেন এমন সদস্যদের কেআরপি করা হচ্ছে। অনেকে গরহাজির থাকছেন। এতে প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য সফল হওয়া মুশকিল।” এবিটিএ’র কোচবিহার জেলা সম্পাদক সুজিত দাস জানান, প্রশিক্ষণের ব্যাপারে তাঁরা কিছুই জানেন না। তিনি বলেন, “এখন পরীক্ষা চলছে। জানুয়ারি মাসে অভিজ্ঞ শিক্ষকদের নিয়ে প্রশিক্ষণ হলে ভাল হত।” তৃণমূলের মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা নেতা পার্থপ্রতিম রায় জানান, দিনহাটার ক্ষেত্রে তাঁরা তালিকা তৈরি করে শিক্ষা দফতরে দিয়েছেন। তাঁদের যুক্তি, “এআই তাঁদের যোগ্য মনে করেন বলেই প্রশিক্ষণে ডেকেছেন। যোগাযোগের খামতির জন্য অনেকে প্রথম দিকে অংশ নিতে পারেননি এটা আধিকারিকদের ব্যর্থতা।” |