নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
ক্ষতিপূরণের বিভিন্ন দাবি নিয়ে কাওয়াখালি উপনগরী প্রকল্পের জমিহারাদের একাংশের সঙ্গে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বৈঠক ভেস্তে গেল। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে প্রস্তাবিত ওই উপনগরী প্রকল্পের জায়গায় বৈঠক হয়। জমিহারাদের সংগঠন পোড়াঝাড় ভূমিহারা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সদস্যরা জানিয়ে দেন ক্ষতিপূরণ না মিটিয়ে কাওয়াখালি উপনগরী প্রকল্পে কাজ করতে চাইলে তাঁরা বাধা দেবেন।
১ ডিসেম্বর এসজেডিএ’র তরফে পোড়াঝাড়ের অংশে পাঁচিল দেওয়ার কাজ করতে গেলে বাধা দেন ওই সংগঠনের সদস্য জমিহারারা। তাদের আশ্বাস দেওয়া হয় ৫ ডিসেম্বর এসজেডিএ’র অফিসে তাদের দাবিদাওয়া নিয়ে বৈঠক হবে। তবে তারা যেন কাজে বাধা না দেন। সেই মতো এই ক’দিন কাজ করতে দিয়ে গত বুধবার এসজেডিএ দফতরে গিয়ে জানতে পারেন আধিকারিকদের একাংশ বৈঠক ডেকে এ দিন আসেননি। গেট আটকে অবস্থান বিক্ষোভ করলে এ দিন বৈঠকের লিখিত আশ্বাস দেওয়া হয়। এর পরও এ দিনের বৈঠকে দাবির বিষয়টি মীমাংসা না-হওয়ায় তাঁরা কাজ করতে দেবেন না বলে জানিয়েছেন। |
শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক পোড়াঝাড়
ভূমিহারা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সদস্যদের। ছবি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক। |
পাশাপাশি পোড়াঝাড়ের একটি বিশেষ এলাকা থেকে প্রকল্পের জমির মধ্য দিয়েই রাস্তা তৈরি হওয়ায় সেই পথেই বাসিন্দারা যাতায়াত করেন। পাঁচিল হলে যাতায়াতের রাস্তা আটকে যাবে বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।
ভূমিহারাদের ওই সংগঠনের সম্পাদক কার্তিক মণ্ডল বলেন, “৬ মাস আগে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তাঁদের নিয়ে বৈঠক করে ৩ মাসের মধ্যে দাবির বিষয়গুলি মিটিয়ে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। অথচ এখনও তা মেটাতে কর্তৃপক্ষ তৎপর নন। দাবি না মিটিয়ে বারবার তাঁরা জোর করে কাজ করতে চাইছেন।” এসজেডিএ’র মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক গোদালা কিরণ কুমার জানান, জমিহারাদের দাবির বিষয়টি বরাবরই তাঁরা সহানুভূতির সঙ্গে দেখছেন। যাঁরা প্যাকেজ পাননি তাদের যথাযথ সুবিধা দিতে এসজেডিএ চেষ্টা করছেন। তবে পাঁচিল দেওয়ার কাজ করতে তারা যেন বাধা না দেন সেই অনুরোধ করা হয়েছে। মুখা কার্যনির্বাহী আধিকারিক বলেন, “আমরা জোর করে কাজ করার পক্ষপাতি নই। ভূমিহারাদের বুঝিয়ে, আলাপ আলোচনা করে কাজ করতে চাই।” পাঁচিল দেওয়া হলে রাস্তা আটকে যাবে বলে যাঁরা সমস্যার কথা বলছেন তাদের উদ্দেশ্যে জানানো হয়েছে, দেওয়ালের পাশ দিয়ে রাস্তার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।
|
• প্রকল্পে অধিগৃহীত জমি: ৩০২ একর
• আর্থিক ক্ষতিপূরণের পাচ্ছেন: অন্তত ১৭০০ জন
• লটারির মাধ্যমে প্লট পাচ্ছেন: অন্তত ৭৭৭জন
• প্লট এখনও পাননি: অন্তত ১৬৮ জন।
• বড় জমির মালিকেরা ফ্ল্যাট পাবেন: অন্তত ৪০০ জন
• অনথিভুক্ত বর্গাদার/ দখলকারী যাঁরা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন: অন্তত ১১৪জন
• অনথিভুক্ত বর্গাদার/দখলকারী, যাঁরা ক্ষতিপূরণ পাননি: ২০ জন |
|
এ দিন বৈঠকে ভূমিহারাদের কত জন ক্ষতিপূরণ পাননি সেই সংখ্যা নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দেয়। সংগঠনের দাবি, তাদের অন্তত ১৫০ জন ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি। ১০০ জন লটারির মাধ্যমে প্লট পাওয়ার যোগ্য। সামাজিক কিছু প্রকল্পের সুবিধা তাঁরা পাচ্ছেন। তাঁরা পরে উপনগরী এলাকায় একটি হাইস্কুল গড়ার দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের হিসেবে, খতিয়ানভুক্ত জমির মালিকদের মধ্যে ৪৮ জন টাকা পাননি। এসজেডিএ’র হিসাবে সেই সংখ্যা ২৯ জন। জমি নিয়ে মামলা চলছে এমন দাবিদার ৪০ জন রয়েছে বলে সংগঠন দাবি জানালেও এসজেডিএ’র হিসাবে তা ২০ জন। খাস জমিতে বসবাসকারী ক্ষতিপূরণ প্যাকেজের দাবিদার অন্তত ৬০ জন বলে দাবি করা হয়েছে। যদিও তা ২০ জন বলে জানিয়েছে এসজেডিএ। |