নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
অনুপ্রবেশকারী হিসেবে তাঁদের শাস্তির মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে অনেক আগেই। তবু মুক্তি মেলেনি ৩২০ জন বিদেশি নাগরিকের। তাঁরা এখনও রাজ্যের বিভিন্ন সংশোধনাগারে বন্দি।
মেয়াদ ফুরোনোর পরেও এ ভাবে বন্দি করে রাখা অমানবিক বলে মনে করে কলকাতা হাইকোর্ট। জনস্বার্থে দায়ের করা একটি মামলার শুনানিতে রাজ্য সরকার ওই বন্দিদের কথা জানানোর পরে হাইকোর্টের অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি প্রতাপ রায় বৃহস্পতিবার এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, শাস্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে এ ভাবে কাউকে আটকে রাখা যায় না। ওই অনুপ্রবেশকারীদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানোর পথ খুঁজে বার করতেই হবে বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি। হাইকোর্টে জনস্বার্থের মামলাটি দায়ের করেছেন আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
রাজ্য সরকার হাইকোর্টে জানিয়েছে, অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে রয়েছেন ইউক্রেন, নাইজেরিয়া, মায়ানমার, বাংলাদেশ, লেসোথো দ্বীপের নাগরিকেরা। মেয়াদ ফুরোনোর পরেও তাঁদের কেউ কেউ ১২ বছর, কেউ বা ন’বছর কারাবাস করছেন।
অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি প্রতাপ রায় বলেন, এই বন্দিরা ভারতের নাগরিক নন ঠিকই। কিন্তু অন্য কোনও দেশের নাগরিক তো বটেই। শাস্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে তাঁদের আর বন্দি করে রাখা যায় না। সেটা আইনসঙ্গত নয়। তাঁদের দেশে ফেরার পথ খুঁজে বার করা দরকার।
অনুপ্রবেশকারীদের ব্যাপারে রাজ্য সরকারের বক্তব্য, ওই বন্দিদের মুক্তি দিলে তাঁদের কাছে বৈধ কাগজপত্র না-থাকায় পুলিশ আবার তাঁদের গ্রেফতার করবে। অথচ তাঁদের এই মুহূর্তে নিজেদের দেশেও ফেরত পাঠানো যাচ্ছে না। কারণ, তাঁরা যে-সব দেশের নাগরিক, সেই সব দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে এখনও তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা যায়নি। জনস্বার্থ মামলার অন্য আইনজীবী কার্তিকচন্দ্র কাপাস আদালতে জানান, রাজ্য ও কেন্দ্র যদি গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখত, তা হলে হয়তো এই বিদেশিদের এমন অবস্থা হত না। আইনজীবীদের বক্তব্যের সঙ্গে অস্থায়ী প্রধান বিচারপতিও একমত। ডিভিশন বেঞ্চ বিদেশ মন্ত্রককে নির্দেশ দিয়েছে, ওই বন্দিদের দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে তারা কী ভাবছে, তা জানাতে হবে। রাজ্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কত বার যোগাযোগ করেছে এবং তার ফল কী হয়েছে, তা হলফনামা দিয়ে জানাতে বলেছে ডিভিশন বেঞ্চ। |