তিয়াত্তর বছর আগেকার আবছা হয়ে যাওয়া একটা ঘটনাও ঝলমলে রঙে সেজে উঠতে পারে! ১৯৩৮-’৩৯ মরসুমে বাংলার প্রথম রঞ্জি জয়ের স্মৃতি যেমন ফিরে এল ২০১২-র ইডেনে। তা-ও আবার ৮৯-’৯০ রঞ্জিজয়ী বাংলা অধিনায়কের উপস্থিতিতে। আর সেই ক্রিকেটীয় আড্ডায় বাংলার দ্বিতীয় রঞ্জিজয়ী অধিনায়ক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গী ছিলেন কে? না, বাংলাকে প্রথম রঞ্জি ট্রফি এনে দেওয়া অধিনায়ক টম লংফিল্ডের মেয়ে সুজান ডেক্সটার। বিয়ের আগে যিনি ছিলেন সুজান জর্জিনা লংফিল্ড।
লংফিল্ড যে বছর রঞ্জি জেতেন, সে বছরই জন্ম সুজানের। কিন্তু অবাক ব্যাপার, বাবার সেই স্মরণীয় রঞ্জি জয়ের কোনও ছবিই নেই সুজানের বাড়িতে। ম্যাচের স্কোরশিট আগেই কলকাতার এক ক্লাবকে দান করেছেন সুজান। সম্বরণের কাছে তাই খোঁজ করলেন, ১৯৩৯ সালের সেই ছবি পাওয়া যাবে? সম্বরণদের রঞ্জিজয়ী টিমের ছবি দেখে তাঁর স্বগতোক্তি, “বাবা এই ছবিটা দেখলে খুব খুশি হতেন।” একটু পরেই সম্বরণের উদ্দেশ্যে তাঁর মন্তব্য, “বাবা নিশ্চয়ই তোমাকে শ্যাম্পেন খাওয়াতেন!” সম্বরণের দল রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আট বছর আগেই মারা যান লংফিল্ড। |
বাবা যে দলকে ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সম্মান প্রথম বার এনে দিয়েছিলেন, সেই দল নিয়ে মেয়ের আগ্রহও কম নয়। না হলে আর কেন সুজান জিজ্ঞেস করবেন, বাংলা কত বার রঞ্জি জিতেছে? কেনই বা শুনে দুঃখ পাবেন যে, লংফিল্ডের পরে মাত্র এক জন বাংলা অধিনায়কের হাতেই রঞ্জি ট্রফি উঠেছে? সেটাও ৫১ বছরের ব্যবধানে!
সম্বরণ-সুজানের আড্ডায় উঠে এল ডেক্সটার-পত্নীর বাংলা-প্রেমের প্রসঙ্গও। যখন সুজান খোঁজ করলেন সর্ষেবাটা দিয়ে ভাল মাছের ঝোলের। উঠল ইডেনের বিবর্তনের কথাও। তবে সব ছাপিয়ে উঠে এল একটাই মহার্ঘ জিনিস।
ক্লাবহাউসের দোতলায় ১৯৮৯-’৯০-র রঞ্জিজয়ী বাংলা, আর জগমোহন ডালমিয়ার অফিসের ঠিক বাইরের দেওয়ালে টিম লংফিল্ডদুটো ছবির দূরত্ব যেন আজ থেকে অনেক কমে গেল! |