বাড়ি তৈরি বন্ধ করতে নোটিস দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। কে বন্ধ করতে নির্দেশ দিচ্ছেন, সেই নোটিসে তা বলা নেই। তারিখেরও উল্লেখ নেই নোটিসে। কেন বাড়ি তৈরি বন্ধ করতে বলা হচ্ছে, বলা নেই তা-ও। আইনসঙ্গত কোনও কারণ দেখাতে না-পারায় বৃহস্পতিবার পুরসভার নোটিস খারিজ করে দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য।
আবেদনকারিণী কল্পনা চন্দ্রের আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, তাঁর মক্কেল পুরসভার ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের পি জি শাহ রোডে নিজের জমিতে বাড়ি করার জন্য ২০১০ সালে নকশা জমা দেন। তা অনুমোদিতও হয়। ২০১১ সালের মাঝামাঝি বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেন কল্পনাদেবী। কিন্তু ওই বছরের ১ অক্টোবর পুরসভার এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার হঠাৎ একটি নোটিস দিয়ে জানান, বাড়ি তৈরির কাজ বন্ধ করে দিতে হবে। কেন কাজ বন্ধ করতে হবে, তা জানানো হয়নি। বাড়ির কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ওই এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারকে চিঠি দিয়ে বলেন, আবেদনকারিণীকে তিনি দীর্ঘদিন ধরে চেনেন। জমিটি আইনসঙ্গত ভাবেই ওই মহিলার। সেখানে বাড়ি তৈরির নকশাও অনুমোদিত। তাই বাড়ি তৈরির কাজ চালাতে দেওয়া হোক।
বিধায়কের ওই চিঠির পরেই কাজ বন্ধের নোটিস প্রত্যাহার করা হয়। বাড়ির কাজ ফের শুরু হয় ২০১২ সালের অগস্টে। প্রায় ৯০% কাজ শেষ হওয়ার পরে পুরসভা ফের বাড়ি তৈরি বন্ধ রাখার নোটিস দেয় সেপ্টেম্বরে। আবেদনকারিণী হাইকোর্টের শরণাপন্ন হন। আবেদনকারিণীর আইনজীবী এ দিন বিধায়কের চিঠি দেখিয়ে বলেন, ওই এলাকার এক মন্ত্রীর সঙ্গে শোভনদেববাবুর বিরোধের ফলেই পুরসভা কোনও কারণ ছাড়াই বারবার আবেদনকারিণীকে হেনস্থা করছে। কার নির্দেশে পুরসভা ওই বাড়ি তৈরির কাজ বন্ধের নোটিস দিয়েছে, বিচারপতি পুরসভার আইনজীবীর কাছে তা জানতে চান। পুরসভার আইনজীবী বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই ওই নোটিস দেওয়া হয়েছিল। সেই ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ’-এর নাম প্রকাশ করতে চাননি তিনি। ক্ষুব্ধ বিচারপতি পুর নোটিস খারিজের নির্দেশ দিয়ে জানিয়ে দেন, কল্পনাদেবীর বাড়ি তৈরির কাজে পুর-কর্তৃপক্ষ আর কোনও ভাবে বাধা দিতে পারবেন না। |