নিজস্ব সংবাদদাতা • রামপুরহাট |
প্রশাসনের নির্দেশে দেড় মাস পর মিড-ডে মিল খেতে পেল রামপুরহাট থানার দীঘিরপাড় প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়ারা। শুধু তারাই নয়, বৃহস্পতিবার একসঙ্গে বসে মিল খেল দীঘিরপাড় জুনিয়র হাইস্কুলের পড়ুয়ারাও। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কম থাকায় মিল-ডে মিল চালু হয়নি ওই প্রাথমিক স্কুলেরই ঘরে চলা জুনিয়র হাইস্কুলটির। আপাতত দুই স্কুলের শিক্ষকেরা নিজেদের টাকা খরচ করে মিড-ডে মিল চালু করলেন। পরে প্রশাসনিক জটিলতা মিটলে স্বাভাবিক হবে প্রক্রিয়া।
রামপুরহাট ১ ব্লকের বিডিও আব্দুল মান্নান বলেন, “বরাদ্দ টাকা পেতে সাময়িক সমস্যা চলছে। তাই আপাতত শিক্ষকদের মিল চালু করতে বলা হয়েছে। তাঁদের খরচ করা টাকা পরে ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে।” তিনি আরও জানান, এখন একসঙ্গে চললেও পরে আলাদা করে দু’টি স্কুলের রান্না হবে। |
পাত পেড়ে। —নিজস্ব চিত্র। |
এ দিন স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, মিড-ডে মিলের রান্না শুরু করেছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর হরিমায়া মণ্ডল ও চন্দনা দাস। স্কুলের জন্য বরাদ্দ চালের ৫০ কেজি রেশন ডিলারের থেকে এনে দিয়েছেন স্থানীয় দখলবাটি অঞ্চলের প্রধান দীনবন্ধু মণ্ডলও। শিক্ষকদের টাকায় বাজার থেকে কেনা হয়েছে আলু, কুমড়ো, সয়াবিন, মসুরডাল।
ঠিক পৌনে দুটো। প্রথম বার মিড-ডে মিল খাওয়ার উত্তেজনা দেখা যাচ্ছিল জুনিয়র হাইস্কুলের পড়ুয়াদের মধ্যে। একসঙ্গে থালা নিয়ে স্কুলের বারান্দায় খেতে বসল হাইস্কুলের ৭ ও প্রাথমিকের ৫৩ জন পড়ুয়া। প্রথম শ্রেণির ছাত্র সুজিত লেট, তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী নার্গিস খাতুনরা বলে, “বেশ ভাল লাগছে। মিল যেন আর বন্ধ না হয়।” আর পঞ্চম শ্রেণির নার্গিস পারভিনের প্রতিক্রিয়া, “অন্যান্য স্কুলগুলোতে মিল দিত। তাই দেখে আমার খারাপ লাগতো।” দু’টি স্কুলে পড়াশোনা করে স্থানীয় ক্যানাল পাড়ের বাসিন্দা মিমি বিবির দুই ছেলেমেয়ে। তিনি বলেন, “মিড-ডে মিল চালু থাকলে ছেলেমেয়েগুলো ঠিক করে স্কুলে যায়। এত দিন বন্ধ থাকায় তাদের স্কুলে যেতে ভাল লাগছিল না।” অন্য দিকে, আর এক অভিভাবক আসেবা বিবির কথায়, “মিড-ডে মিল বন্ধ থাকায় ছেলেমেয়েদের রোজ ৫-১০ টাকা করে টিফিনের জন্য দিতে লাগত। তাই মিল ফের চালু হওয়ায় ভাল লাগছে।”
অসুস্থ প্রধান শিক্ষক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অনুপস্থিতিতে দীঘিরপাড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শাম্ব দাস, আকতার জাহানি, খালিদা আকতার-রা বললেন, “স্যার নেই। থাকলে খুব খুশি হতেন। অনেক দিন পরে ছাত্রছাত্রীদের একসঙ্গে খেতে বসতে দেখে ভাল লাগছে।”
|