জামা পাল্টে চলছেই চোরাই কয়লা ধরা পড়ছে গ্রামাঞ্চলেও
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিয়েছেন, রাজ্যে কয়লার চোরাকারবার চলতে দেবেন না। কিন্তু চোরাই কয়লা চলছেই। এমনকী বর্ধমানের কৃষি এলাকাতেও ধরা পড়ছে গাড়ি।
কয়লা পাচারে কুখ্যাত ‘গ্যাং অব ফোর স্টার’ ধরা পড়েছে। এর মধ্যে তিন জন জয়দেব মণ্ডল, কালে সিংহ এবং রাজু ঝা বর্ধমান জেলার লোক। চতুর্থ জন, কমল দাসের বাড়ি হুগলির মগরায়। ধরা পড়লেও তাঁরা জামিনে ছাড়া পেয়ে গিয়েছেন। কারবার অনেকখানি গুটিয়ে তাঁরা আপাতত আবডালে।
তবু শুধু মাত্র বর্ধমান জেলা পুলিশের আওতাভুক্ত গ্রামীণ এলাকাতেই নভেম্বর পর্যন্ত আটক হয়েছে হাজার টনেরও বেশি চোরাই কয়লা। আটক করা হয়েছে একশোরও বেশি কয়লা বোঝাই ট্রাক।
পুড়ছে কয়লা। বারবনির পুচড়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।
গ্রেফতার করা হয়েছে শতাধিক চালককে (যদিও পরের দিনই তাঁরা জামিন পেয়ে গিয়েছেন)। জেলা পুলিশের দাবি, এই পরিসংখ্যান আংশিক মাত্র। কেননা শিল্পাঞ্চল ছাড়িয়ে গ্রামাঞ্চলের ইটভাটা, তেলকল বা অন্য জেলার দিকে যাচ্ছে যে সব ট্রাক, তারই কিছু ধরা পড়ছে। বাকিটা তাদের হাতে নেই।
তাঁর দাবি, “আমাদের এলাকায় যত কয়লা ঢুকছে, তার বেশির ভাগটাই আসছে ঝাড়খণ্ড থেকে। অসম থেকেও কোচবিহার হয়ে কিছু আসছে।”
অন্য জেলা থেকে যে কয়লা আসছে, বর্ধমান জেলা পুলিশের নথিই তা বলছে। বুধবারও পাঁচটি কয়লার ট্রাক ধরা পড়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, গত ১৬ মার্চ জামালপুরের নবগ্রামে যে ১৫ টন কয়লা সমেত ট্রাক ধরা পড়েছিল, তা এসেছিল পুরুলিয়ার সাঁতুড়ির একটি কয়লা খনি থেকে। গত ২১ মার্চ খণ্ডঘোষ থানা এলাকায় বাঁকুড়া-বর্ধমান রোডে ২১ টন কয়লা বোঝাই একটি নম্বরবিহীন ট্রাক্টর আটক হয়। বাঁকুড়ার হাটআসুরিয়া থেকে সেই কয়লা আসছিল। গত ২০ ও ২৮ অক্টোবর কাঁকসা থানা ২০ ও ৯ টন চোরাই কয়লা নিয়ে যাওয়া দু’টি ট্র্রাক আটক করে। সেগুলিও বাঁকুড়া থেকেই আসা। গত ১ জুন গলসি থানায় ধরা পড়ে একটি ট্রাক।
চালানের চারমূর্তি
জয়দেব মণ্ডল। কমল দাস। রাজু ঝা। কালে সিংহ।
তাতে কয়লা ভরা হয়েছিল বীরভূম থেকে। সরাসরি দুর্গাপুরের দিক থেকেও কয়লা আসছে। তবে বর্ধমানের পুলিশ সুপারের দাবি ব্যাখ্যা, “ঝাড়খণ্ড থেকে আসতে গেলে তো ওই সব রাস্তা দিয়েই আসবে। এ রাজ্যে এখন আর আগের মতো কয়লার চোরাকারবার হয় না।”
পুলিশকর্তা মুখে যা-ই বলুন, বর্ধমানের জেলা পুলিশের প্রতিটি ‘ক্রাইম কনফারেন্সে’ কিন্তু চোরাই কয়লা ধরার অভিযানে সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। গোয়েন্দা দফতরের দাবি, আসানসোল-দুর্গাপুরে ইসিএলের নিলামে দুর্নীতি করে বরাদ্দের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি কয়লা কিনে পাচার করছে কিছু মাফিয়া। বীরভূমের দুবরাজপুর থেকে রাজ্য জুড়ে চোরাই কয়লা পাচারের কাজ নতুন করে শুরু করেছে একটি চক্র। অদূর ভবিষ্যতে তা আরও বাড়তে পারে। বীরভূম পুলিশ অবশ্য তাদের এলাকা থেকে অবৈধ কয়লা উত্তোলন বা পাচারের অভিযোগ স্বীকার করেনি। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়া পুলিশও। আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ কোনও মন্তব্যই করতে চাননি।
বর্ধমান জেলা পুলিশের একটি সূত্রের বক্তব্য, ধরা পড়া ট্রাকগুলিতে কোথা থেকে কয়লা তোলা হয়েছিল, কে নির্দেশ দিয়েছিল, চালকেরা জেরায় তা জানিয়েছেন। তাঁদের বয়ান ভিডিও ক্যামেরায় ধরে রাখা হয়েছে। চেনা মাফিয়াদের বাইরেও কিছু নতুন নাম পাওয়া যাচ্ছে। তাদের তালিকাও তৈরি করা হচ্ছে। প্রয়োজনে জেলা পুলিশ অন্য এলাকাতেও হানা দেবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.