পরিবেশ বাঁচাতে পুকুর সংস্কার করবে পুরসভা
কটা সময়ে ছিল টলটলে দিঘি। এখন তা-ই পানাপুকুর নামে পরিচিত হয়ে উঠছে। কেউ আবার মজা ডোবা বলেন। অনেকে জায়গাটা মশার আঁতুড়ঘর বলে মনে করেন। জলপাইগুড়ি শহরের অধিকাংশ পুকুরেরই এমন হাল। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কোনটি মজে গিয়েছে। কোনটি আবার কচুরিপানায় ভরা। তাই শহরের পরিবেশ রক্ষায় এ বারে পুকুর সংস্কারে উদ্যোগী জলপাইগুড়ি পুরসভা।
শহরের ২৫টি এলাকায় ৩৮টি পুকুর রয়েছে। সব কটি পুকুর পুরসভার দায়িত্বে রয়েছে। হুগলির সিঙ্গুরের একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে জলপাইগুড়ি পুরসভা পুকুর সংরক্ষণের চুক্তি করেছে। চুক্তি অনুযায়ী, বেসরকারি সংস্থাটি লগ্নি করে পুকুর সংস্কার করে মাছ চাষ করবে। সংস্থার হয়ে মাছ চাষের দেখভাল করবে স্থানীয় মহিলাদের তৈরি স্বনির্ভর গোষ্ঠী। মাছ চাষের পাশাপাশি কয়েকটি পুকুরে হাঁস পালন করা হবে। এর থেকে প্রাপ্ত আয়ের ৪০ শতাংশ স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মধ্যে ভাগ হবে। মুনাফার একটি অংশ পাবে পুরসভা। বাকি বড় অংশ বেসরকারি সংস্থাটি নেবে বলে জানা গিয়েছে। এই প্রকল্পে যেমন শহরের জলাশয়গুলি রক্ষা সম্ভব হবে, তেমনই পুরসভার বিকল্প আয়ের পথও খুলবে বলে পুর কর্তৃপক্ষ মনে করছেন। বেসরকারি সংস্থাটি জানিয়েছে, আগামী বছরের মধ্যে শহরের পুকুর রক্ষণাবেক্ষণ এবং মাছ চাষে প্রায় কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে। চলতি মাস থেকেই প্রকল্পটি শুরু হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
নিজস্ব চিত্র।
পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “শহরের পরিবেশের স্বার্থেই জলাশয়গুলি রক্ষণাবেক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়ে। বিশেষত চলতি বছরে শহর এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার পরে জলাশয়গুলিকে নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা করা হয়েছে। প্রকল্পটি সফল হলে শহরের মহিলাদের গোষ্ঠীগুলিও লাভের মুখ দেখতে পারবে। বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে লিখিত চুক্তি হয়েছে।”
কেন পুরসভার এমন উদ্যোগ? জলপাইগুড়ি শহরের ৩৮টি পুকুরের মধ্যে ডাঙাপাড়ার একটি ও আদরপাড়ার দুলালদিঘি দুটি জলাশয়কে পুরসভা বাঁধিয়ে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু করে। বাকি পুকুরগুলির সারা বছর পানায় ভরে থাকে। বিভিন্ন পরিবেশপ্রেমী সংস্থার তরফেও বারবার পুকুরগুলি সংস্কারের দাবি জানানো হয়। যদিও পুরসভার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, পুকুর সংরক্ষণের জন্য পৃথক তহবিল না থাকা কিংবা রক্ষণাবেক্ষণের কোনও পরিকাঠামো পুরসভার নেই। চলতি বছরের মাঝামাঝি হুগলির একটি বেসরকারি সংস্থা পুরসভাকে শহরের জলাশয়গুলিকে সংস্কার করে মাছ চাষের প্রস্তাব দেয়। তার পরেই পুরসভা বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নেয়। বেসরকারি সংস্থার তরফে মৎস্য বিশেষজ্ঞ সুমিত মিত্র বলেন, “জলপাইগুড়ি শহরে আমরা সমীক্ষা করে দেখেছি, শহরের বেশির ভাগ পুকুর নষ্ট হতে বসেছিল। অথচ এগুলিতে মাছচাষের অনুকূল পরিস্থিতি রয়েছে। এর পরেই আমরা পুরসভাকে প্রস্তাব দিয়ে জানিয়েছি, স্থানীয় বাজারে যে ধরনের মাছ রয়েছে তা-ই পুকুরে চাষ করা হবে।” সংস্থাটি জানিয়েছে, এতে একদিকে যেমন মাছ থেকে আয় হবে, তেমন নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণে পুকুরগুলির স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.