জবরদখল হয়ে যাওয়া বিদ্যাসাগর মঞ্চের ভার আর বইতে নারাজ কলকাতা পুরসভা। পুর-কর্তৃপক্ষ চাইছেন অর্ধনির্মিত ওই মঞ্চ বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দিতে। ফলে পিপিপি মডেলে নির্মাণ শেষ করার পরিকল্পনা নিচ্ছে পুরসভা।
এন্টালির পদ্মপুকুর এলাকায় পঁচিশ বছর আগে মঞ্চটি তৈরির পরিকল্পনা চলছিল। সঙ্গে একটি পাঁচতলা বাজার তৈরিরও পরিকল্পনা হয়। কিন্তু নির্মাণ চলাকালীনই জায়গাটি জবরদখল হয়ে যায়। তাই কাজ শেষ হয়নি। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে আবার সেই প্রকল্প শেষ করতে উদ্যোগী হচ্ছে তৃণমূল পরিচালিত পুর-বোর্ড।
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (বাজার) দেবাশিস কুমার জানান, ওই কাজ শেষ করার টাকা পুরসভার নেই। অথচ দীর্ঘদিন ধরে সরকারি জায়গা জবরদখল হয়ে রয়েছে। ফলে পিপিপি মডেলে যাতে ওই নির্মাণের কাজ করা যায়, তার জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
কাজটি শুরু হয় বামফ্রন্টের আমলে, ১৯৮৭ সালে। পুরসভার আধিকারিকেরা জানান, দীর্ঘ দিন ধরে জবরদখলই ওই প্রেক্ষাগৃহ তৈরির অন্যতম বাধা। বামফ্রন্টের প্রাক্তন মেয়র প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের আমলে প্রেক্ষাগৃহ তৈরির কাজ চালু ছিল। তাঁর কথায়, “ওইখানে জায়গা পেতে স্থানীয় জুতো ব্যবসায়ীরা খুব চাপ দিয়েছিল পুরসভাকে। কিন্তু আমি রাজি হইনি। প্রবল চাপের মধ্যেও কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলাম। আমার পরে এক বার তৃণমূল ও এক বার সিপিএম বোর্ডে আসে। কিন্তু কেন কাজ এগোলো না, বলতে পারব না।” |
সিপিএমের শেষ পুর-বোর্ডের মেয়র বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের কথায়, “জবরদখলকারীদের পুনর্বাসন দেওয়ার বিষয়টিরও সমাধান করা যায়নি।”
আর এক প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “সরকারি টাকা যাতে জলে না যায়, তাই কাজ শেষ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু জবরদখলকারীরা খুব শক্তিশালী।”
আশাবাদী মেয়র পারিষদ দেবাশিসবাবুর দাবি, “জবরদখল খুব বেশি জায়গায় নেই। ফলে আশা করছি, সমস্যা সমাধান করা যাবে।”
পুর-আধিকারিকেরা জানান, যে পরিকল্পনায় বিদ্যাসাগর মঞ্চ হচ্ছিল, তা এখনকার যুগে পুরনো। ফলে এখন ওই প্রেক্ষাগৃহকে মাল্টিপ্লেক্সের আদলে তৈরি করতে চাইছে কলকাতা পুরসভা। আর বাণিজ্যকেন্দ্রটিকে শপিং মলের আদলে তৈরির পরিকল্পনাও করা হচ্ছে।
বর্তমানে নির্মাণের কাজ চলার সময়ে বাজারের একতলার কিছু দোকান বিক্রি হয়ে যায়। সেগুলি ছাড়া অন্যান্য তলার দোকানের জন্য বরাদ্দ ঘরের অধিকাংশেই বর্তমানে দখলকারীরা চামড়ার জিনিসপত্রের কর্মশালা বানিয়েছেন। জবরদখলকারীদের মধ্যে জনৈক পারভেজ আলমের কথায়, “পুরসভা তুলে দিলে চলে যাব। তবে আশা করছি পুরসভা আমাদের দিকটাও ভাববে।” |