দরকার ছ’কাঠা জমি। কিন্তু ছ’মাসেও তা হাতে পাওয়া গেল না। এক বিভাগ থেকে আর এক বিভাগে শুধু ঘুরল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। সবটাই একই দফতরের অধীন। শেষমেশ সেখানেই আটকে ওই ফাইল। যার জন্য থমকে আছে একটি গোটা জলপ্রকল্প। আটকে রয়েছে জলাধার তৈরির কাজ। পরিস্রুত পানীয় জল পাচ্ছেন না বাইপাস সংলগ্ন এলাকার প্রায় দু’লক্ষ বাসিন্দা।
পূর্ব কলকাতা পানীয় জলপ্রকল্পে জলাধার তৈরির জন্য সম্প্রতি এক বৈঠকে তিনটি জমি চিহ্নিত হয়েছে কলকাতা পুরসভার ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডে। জমিগুলি কেএমডিএ-র অধীন। কিন্তু সেই জমি পুরসভাকে হস্তান্তর করতে পারছে না কেএমডিএ। কারণ, নগরোন্নয়ন দফতর কেএমডিএ-কে জানিয়ে দিয়েছে, ওই জমি হস্তান্তরের জন্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন প্রয়োজন। এর জন্য গত সেপ্টেম্বরেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠিয়েছে কেএমডিএ। কিন্তু নগরোন্নয়ন দফতর তা এখনও মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য পেশ করেনি। তার জেরেই এই বিপত্তি।
কলকাতা পুরসভা এবং নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, ২০০৯ সালে পূর্ব কলকাতা জলপ্রকল্পের জন্য জে এন এন ইউ আর এম প্রকল্পে ২১৫ কোটি টাকা মঞ্জুর হয়। তার পরেই ধাপায় জলপ্রকল্পের ট্রিটমেন্ট প্লান্টের কাজ শুরু হয়। সেই প্লান্টের কাজ প্রায় শেষের পথে। কিন্তু বাড়ি বাড়ি পানীয় জল সরবরাহের জন্য পাইপলাইন বসানো এবং তিনটি জলাধার তৈরির জন্য ছয় থেকে সাত কাঠা করে জমি দরকার। সে জন্যই ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডে ওই জমিগুলি বাছাই করা হয়েছিল।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, চিহ্নিত তিনটি জমি হস্তান্তরের জন্য মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বার বার চিঠি দিয়েছেন কেএমডিএ কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু কেএমডিএ-র পাঠানো কাগজপত্র নগরোন্নয়ন দফতরে আটকে থাকায় এই বিষয়ে কিছুই এগোয়নি। পুরসভার এক পদস্থ কর্তা বলেন, “২০০৯-এর এপ্রিলে জলপ্রকল্পের জন্য টাকা মঞ্জুর হয়। জমি না পাওয়ায় ধাপায় ট্রিটমেন্ট প্লান্টের কাজ শেষ হলেও জলাধার ও পাইপ পাতার কাজ করা যাচ্ছে না।”
নগরোন্নয়ন দফতর কেএমডিএ কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছে, জমি হস্তান্তরের জন্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন আবশ্যিক। তা হলে সেই সংক্রান্ত কাগজপত্র হাতে এলেও মন্ত্রিসভায় বিষয়টি আনা হল না কেন? তার কোনও সদুত্তর মেলেনি রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কাছে। মন্ত্রী শুধু বলেন, “জলপ্রকল্পের কাজ হচ্ছে। জমি হস্তান্তর করতে আরও এক মাস সময় লাগবে। তার আগেই মন্ত্রিসভার অনুমোদন পাওয়া যাবে।” তবে জমি হস্তান্তরের জন্য কেন এক মাস লাগবে, তারও অবশ্য কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি। |