বিনোদন শ্যুটিং হোক দূষণ এড়িয়ে, চান বেদব্রত
ম্প্রতি শিলিগুড়ি চলচ্চিত্র উৎসবে আমন্ত্রিত ছিলেন বেদব্রত। সে জন্যই উত্তরবঙ্গে আসা। তিনি জানান, ২০১০ এর গোড়ার দিকে লাটাগুড়িতে শ্যুটিং হয়েছিল ‘চিটাগং’-এর। লাটাগুড়ি থেকে ৪৫ মিনিট দূরত্বের বিভিন্ন জায়গায় ছবির শ্যুটিং হয়েছিল। কুমানিতে শ্যুটিং হয়েছিল পাহাড়ের উপরে সেই যুদ্ধের দৃশ্যের।
দু’বছরে কতটা বদলেছে লাটাগুড়ি? যে রেললাইনে ছবিতে দেখা হয় প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার তথা ভেগা টামোটিয়া ও নির্মল সেন তথা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকির, সেই মিটারগেজের লাইন আর নেই। নিউ মাল-চ্যাংরাবান্ধা রুটের সেই রেলপথ এখন ব্রডগেজে বদলে গিয়েছে। বেদব্রত বললেন, “পুরনো লাইনটা দেখতে খুব সুন্দর ছিল।” পাশেই দেখা মিলল হাতির পায়ের ছাপের।
ছবিতে দেখা গিয়েছিল জঙ্গলঘেরা এক হ্রদে নৌকায় বসে একাকী ঝুংকু জলে ঢিল ছুড়ছে। জঙ্গলঘেরা সেই মহাকাল হ্রদ আর নেই। বাঁধ ভেঙে জল বেরিয়ে যেন মাঠ। তিরতির করে বইছে ছোট্ট একটা ঝোরা। “অ্যাবসোলিউটলি আনবিলিভেব্ল! তখন গাছগুলোর গোড়া অবধি ডুবে ছিল! কী করে এমন হল?”, প্রশ্ন বেদব্রতের। গাইড জানালেন, এ বারে বর্ষায় বাঁধ ভেঙে সব জল বেরিয়ে গিয়েছে। বেদব্রত বললেন, “ছবিতে এত সুন্দর একটা হ্রদ দেখে অনেকেই জিজ্ঞাসা করেছে জায়গাটার কথা।”
ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।
এত সুন্দর একটা জায়গায় পর্যটন-সম্ভাবনা কতটা? বিজ্ঞানীর মুখে দায়িত্বশীল পর্যটনের কথা। বললেন, “পর্যটনের সম্ভাবনা তো রয়েইছে। তবে আমার একটা আশঙ্কা রয়েছে। অত্যধিক বেশি পর্যটন বা শু্যটিং হলে কিন্তু প্লাস্টিক দূষণের শিকার হতে পারে এই অপরূপ নিসর্গ। সেটা আমি কোনও মতেই চাই না। জঙ্গলে যত ইচ্ছে পর্যটকেরা আসুন। কিন্তু জঙ্গল যেন দূষণের শিকার না হয় সেটা অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।” নাসায় থাকাকালীন নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বেদব্রত বললেন, “বিদেশে দেখেছি অরণ্যে প্রচুর পর্যটক আসেন। তা সত্ত্বেও জঙ্গল একই রকম থাকে।”
লাটাগুড়ির রিসর্ট মালিকদের সংগঠনের সম্পাদক কমল ভৌমিক জানালেন ডুয়ার্সের লাটাগুড়ির মতো অনেক সুন্দর জায়গার নামই অতটা পরিচিত নয়। সিনেমার দৌলতে তা যদি প্রচার পায় তা হলে তা পর্যটনের পক্ষে ভালই হবে। কমলবাবু জানালেন প্লাস্টিক দূষণ রুখতে সচেষ্ট তাঁরাও। তাঁর কথায়, “সব রিসর্টের মালিকদের উদ্যোগে প্রতিদিন বিকেলে রাস্তার ধারের সমস্ত প্লাস্টিক কুড়িয়ে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে।”
চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন নিয়ে পিরিয়ড পিসে লাটাগুড়ির লোকেশন কেন? বেদব্রত বললেন, “আমি নিজে চট্টগ্রাম ঘুরেছি। তবে বাংলাদেশে পুরো ইউনিট নিয়ে অতদিন শ্যুটিং করা বেশ কঠিন ছিল। তা ছাড়া এখনকার চট্টগ্রাম নয়, আমি চাইছিলাম ১৯৩০-এর চট্টগ্রাম। লাটাগুড়িতে এসে চমকে যাই। অবিকল যেন সেই ১৯৩০ এর চট্টগ্রাম। কাঁচা রাস্তা, ছোট পাহাড়, সুপুরি গাছ। এমনকী চট্টগ্রামের নামে একটা পল্লিও রয়েছে।”
২০১০-এ শুটিং-এর সময় থেকে ২০১২-য় ছবি মুক্তি। দু’বছরে অনেকটাই বদলেছে বেদব্রতের জীবন। বদলেছে চেহারাও। জঙ্গলপথে জিপসি’র গাইড নীলেশ বলছিলেন, “জানেন, লাটাগুড়ির এই জঙ্গলে অনেক শ্যুটিং হয়। কিছু দিন আগেই একটা বাংলা ছবির শ্যুটিং হল। তারও বেশ কিছুদিন আগে শ্যুটিং হয়েছিল ‘চিটাগং’এর।” পিছনে বসা পরিচালক বেদব্রত পাইন মুখ টিপে হাসছেন। বললেন, “আমার তখন মুখভর্তি দাড়ি। সে জন্যই হয়তো চিনতে পারেননি। আমি কিন্তু ওঁর মুখ চিনতে পেরেছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.