|
|
|
|
দলছুট নেতাকেই দল সামলানোর ভার দিলেন মমতা |
অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য • কলকাতা |
তৃণমূল দলের ভাঙন সামলানোর দায়িত্ব যাঁদের দেওয়া হয়েছে, তাঁদের অন্যতম তিনি। কিন্তু বছরখানেক তৃণমূল-ই ছেড়ে দিয়েছেন! উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের ‘মুখ্য উপদেষ্টা’ করা হয়েছে তাঁকে, শুনে সৌরেন সেন তাই হতবাক। “এতেই বোঝা যায় তৃণমূলের অবস্থাটা এখন কেমন,” বলেন সৌরেনবাবু।
|
সৌরেন সেন |
শুক্রবার নিজের বাড়িতে বৈঠক ডেকেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামাল দিয়ে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের পরিকল্পনা করতে সব গোষ্ঠীর নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। দলের ভাঙন রুখতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মুখ্য উপদেষ্টার দায়িত্ব দেন দুই বর্ষীয়ান নেতাকে, যাঁদের অন্যতম মধ্যমগ্রামের নেতা সৌরেন সেন। অথচ, প্রায় এক বছর আগে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন সৌরেনবাবু। তৃণমূল নেত্রীর সিদ্ধান্তের খবর জানার পরে সৌরেনবাবুর প্রতিক্রিয়া, “এর চেয়ে হাস্যকর আর কী হতে পারে? ওঁরা আমার সঙ্গে কথাও বলেননি।” অপর নেতা রাধাপদ বিশ্বাস অবশ্য তৃণমূলেই রয়েছেন। কিন্তু সৌরেনবাবু যে বর্তমানে সক্রিয় কংগ্রেস-রাজনীতি করছেন, সে খবর ছিল না তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের কাছে।
কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দেবী ঘোষাল বলেন, “বছরখানেক আগে মধ্যমগ্রাম পুরসভার সামনে আমার কাছেই সৌরেনবাবু কংগ্রেসে যোগ দেন। সৌরেনবাবু তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। আসলে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যরা মুখ খুলছেন। আর সৌরেনবাবুরা নীরবে সরে গিয়েছিলেন। ঘরে-ঘরে এখন তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার ঘটনা ঘটছে।”
বস্তুত তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে এই জেলার দায়িত্বে ছিলেন সৌরেনবাবু। এমনকী, রণজিৎ পাঁজা যখন তৃণমূল সাংসদ ছিলেন সেই সময়ে সৌরেনবাবু তৃণমূলের এই জেলার সভাপতি পদেও ছিলেন। সেই সময়ে জেলা তৃণমূলে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তও নেন তিনি। পরে রণজিৎবাবু জেলা সভাপতি হলে বসিরহাট মহকুমার তৃণমূলের দায়িত্ব দেওয়া হয় সৌরেনবাবুকে। কিন্তু কেন তৃণমূল ছাড়লেন সৌরেনবাবু? প্রবীণ ওই নেতা বলেন, “এই একনায়কত্ব ভাল লাগছিল না। যাঁরা এক সময়ে খেতে পেতেন না, এখন তাঁদের আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়ে গিয়েছে।” পাল্টা চ্যালেঞ্জও ছুঁড়লেন। “আমাকে উপদেষ্টা করা? পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের অবস্থাটা জেলায় কী করি দেখুন।”
কিন্তু তৃণমূল এমন ভুল করল
কী করে?
দলের জেলা সভাপতি নির্মল ঘোষ বলেন, “সৌরেনবাবুর নাম জেলা থেকেই কেউ প্রস্তাব দেওয়ার পরে নেত্রী ওই বর্র্ষীয়ান মানুষটির নাম উপদেষ্টা হিসেবে বলেছিলেন। একটু খোঁজ খবর নেওয়া প্রয়োজন ছিল। তবে তাঁকে এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে নিয়োগ করা হয়নি।” |
|
|
|
|
|