সম্পাদক সমীপেষু...
প্রতিজ্ঞা করলাম, রক্ত দান করব
‘উৎসব মানেই রক্তশূন্যতা’ (২২-১১) পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখায় শিবশঙ্কর রায়ের স্মৃতিচারণা পড়ে নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা মনে পড়ল। সুচ ফোটার আতঙ্কে রক্তদানের কথা ভাবতেই ভয় পেতাম দীর্ঘ দিন। কিন্তু একটা ঘটনায় সব কিছু পাল্টে গেল। সন্তানের জন্মের সময় স্ত্রীর রক্তসঙ্কট হল। বন্ধুদের সাহায্যে বিপদ থেকে রক্ষা পেয়ে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম, রক্তদানে আর ভয় করব না। রক্ত দান করব।
এখন আমি বছরে তিন বার রক্ত দান করি। আফসোস একটাই, নভেম্বরের প্রথম দিকে রক্তদানের ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ পাই না। রক্তশিবিরে উৎসাহী সংগঠনগুলো এ নিয়ে ভাবতে পারে না? বিভিন্ন রক্তদান শিবিরের দিনক্ষণ সম্পর্কে রক্তদাতাদের কাছে তথ্য পৌঁছে দেওয়াটাও খুব জরুরি।
পথিকৃৎ প্রতিষ্ঠান
‘উৎসব মানেই রক্তশূন্যতা’ নিবন্ধে রক্তদান আন্দোলনের পথিকৃৎ হিসেবে স্টুডেন্টস হেলথ হোমের অবদান অনুল্লিখিত থেকে গেছে। নিবন্ধের মাঝে ১৯৬২ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ত্রিগুণা সেনের ছবি-সহ রক্তদান শিবিরের যে ছবি ছাপা হয়েছে, সেটি স্টুডেন্টস হেলথ হোমের উদ্যোগেই সংগঠিত হয়েছিল। প্রসঙ্গত, ষাটের দশকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং পরে কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র ড. ত্রিগুণা সেনই উদ্যোগ নিয়ে যেমন রক্তদান আন্দোলনকে প্রসারিত করেছিলেন, তার পাশাপাশি মৌলালি মোড়ে স্টুডেন্টস হেলথ হোমের জায়গাটিও তাঁরই আনুকূল্যে পাওয়া। এই সময়কে স্মরণে রেখেই এই বছর ও ষাট বৎসর পূর্তি অনুষ্ঠানে স্টুডেন্টস হেলথ হোম পুনরায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে রক্তদান শিবির করেছে।
হাল দেখে অবাক হতে হয়
কিছু দিন আগে কর্মক্ষেত্র থেকে বাড়ি ফেরার পথে মেচেদা বাস স্ট্যান্ডের অবস্থা দেখে অবাক হলাম। এই বাস স্ট্যান্ড থেকে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, কলকাতা ও দুই চব্বিশ পরগনা জেলার কয়েক হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন। বাস স্ট্যান্ডটি সংস্কার করে ও একে নোংরা আবর্জনামুক্ত করে আধুনিক পরিষেবা পাওয়ার জন্য একজন সাধারণ যাত্রী হিসাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন রাখছি।
রাজনীতি ও সমাজনীতি তো আলাদা বিষয়
সম্পাদকীয় প্রবন্ধে (‘দুর্ভাগা দেশ’, ২০-১১) লেখা হয়েছে, “বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে এই জাতিভেদের কলঙ্ক ঘুচাইতে ময়দানে নামিতে হইয়াছিল।” সমাজনীতির দিক দিয়ে বিমান বসুর সেই শুভ প্রয়াসকে আন্তরিক সাধুবাদ জানাই। কিন্তু তিনি বিশেষ এক রাজনৈতিক দলের প্রধান কর্মী ও সংগঠক। রাজনীতি আর সমাজনীতি তো আলাদা বিষয়। রাজনৈতিক দলের প্রধান কাজ হল, তাদের রাজত্বকে কায়েম রাখা। ডান বা বাম যে দলই হোক না কেন, উচ্চবর্ণ প্রভাবিত এবং শাসিত এই দলগুলি জাতের বিভাজন এবং আরও ‘খণ্ডীকরণ’ জিইয়ে রাখতে পারলে তাদের পক্ষে ভোটবাক্সের ফায়দা লোটা সহজ হবে এবং রাজত্ব কায়েম রাখার পথ সুগম হবে। রাজনৈতিক বিরাট ব্যক্তিত্ব হয়েও সমাজ সংস্কার করে বিশ্বখ্যাত হয়েছেন আব্রাহাম লিংকন এবং ড. ভীমরাও অম্বেডকর। আমেরিকায় দাসপ্রথা উচ্ছেদ হওয়ার পরে প্রায় একশো তিরিশ বছর পেরিয়ে যাচ্ছে, তবুও সেখানে সাদা-কালোর বিভেদ ঘোচেনি। অম্বেডকর পশ্চিমবঙ্গে না-হলেও আমাদের ভারতেই জন্মেছেন। তাঁর শুভ প্রয়াসে ভারতে সাংবিধানিক ভাবে অস্পৃশ্যতা বর্জিত হলেও পশ্চিমবঙ্গে অস্পৃশ্যতার ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের’ বাস্তব ঘটনা সম্পাদকীয়তেই বর্ণনা করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে এও বলা হয়েছে, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের অভিজাত উচ্চশিক্ষিতরা পাশ্চাত্য শিক্ষার আলোয় নিজেরা উদ্ভাসিত হইলেও আপামর রাজ্যবাসীকে আলোকিত করিতে সচেষ্ট হন নাই। জাতিভেদ প্রথার বিরুদ্ধে কোনও সচেতন সামাজিক সংস্কার আন্দোলন গড়িতেও সে ভাবে সচেষ্ট হন নাই।” উচ্চশিক্ষিত হলেই তাদের মনের মধ্যে মানবতাবোধ জাগবে এবং সাধারণ মানুষকে ভালবাসতে হবে এমন কথা কোথাও নেই। বরং তথাকথিত উচ্চবর্ণীয় উচ্চশিক্ষিত লোক রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এবং সামাজিক মর্যাদায় সমাজের শীর্ষদেশে অবস্থান করেন। তখন শিক্ষার আলোকটুকু বর্জন করে বুদ্ধিটাকে সাধারণ মানুষকে পদদলিত করতে এমন সুকৌশলে ব্যবহার করেন, যাতে তাদের আভিজাত্যবোধ পুরোপুরি বজায় থাকে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.