|
|
|
|
|
|
|
আজ প্রতিবন্ধী দিবস |
মানবিক |
চলার পথে হঠাৎই থমকে গিয়েছে জীবন। মুর্শিদাবাদের স্কুলপড়ুয়া রেজিনা খাতুন। কয়েক দিনের জ্বরে হিসেব ওলটপালট। ভাইরাসের সংক্রমণে হাত-পা অচল। পড়ে গিয়ে ঘাড়ে চোট পান মধ্যবয়সি শেখর দাস। হাত-পা পঙ্গু হয়ে নতুন পরিচয় জোটে প্রতিবন্ধী। জন্মের পরই প্রতিবন্ধী তালিকায় নাম লিখিয়েছে স্প্যাস্টিক ডাইপ্লেজিয়ায় আক্রান্ত শুক্লা ধর বা সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত তন্ময় ভট্টাচার্য। এদেরকে পেছনে ফেলেই এগিয়ে চলে অন্যরা।
বাস্তবে বাসে বরাদ্দ দুটো আসন, আর আজকের মতো প্রতিবন্ধী দিবসে কয়েকটা হুইল চেয়ার আর ঝুড়ি ঝুড়ি আশ্বাস। বাকি ৩৬৪ দিন কেমন আছেন ওঁরা, ভাবার ফুরসত মেলে না। অশোক মান্না দুই পা খুইয়েছেন পথ দুর্ঘটনায়। অনাহারে দিনযাপন। ‘৮০-১০০% পঙ্গু হলে প্রতিবন্ধী পেনশন মেলে। ডাক্তাররা ৬০% এর বেশি লেখেন না। আমরা কি মাঠে-ঘাটে নেমে কাজ করতে পারি? খাওয়াই জোটে না, চিকিৎসা! আমাদের ভবিষ্যৎ এক এক করে খসে পড়া।’ এ ভাবেই বঞ্চিত ওঁরা। |
|
প্রতিবন্ধীদের এক অনুষ্ঠানের ছবি: সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায় |
ক্ষতিগ্রস্ত স্নায়ুই তফাতটা গড়েছে। ওষুধ বা ফিজিয়োথেরাপি শেষ কথা নয়। দরকার পুনর্বাসন। অথচ রাজ্যে পুনর্বাসন কেন্দ্রের বড়ই অভাব। উল্টে নিজেদের নিয়ে লড়তে লড়তে কখনও এঁরা ঠাট্টার পাত্র, বাড়িতে সমাজে গলগ্রহ। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে স্ট্রোক আক্রান্ত দীপালি আউড়ে যান, ...জ্যাক ফেল ডাউন অ্যান্ড ব্রোক হিজ ক্রাউন... অঝোরে ঝরে চোখের জল।
এত প্রতিবন্ধকতার মধ্যে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করে চলেছেন ফিজিক্যাল মেডিসিন এবং রিহ্যাব-এর চিকিৎসক মৌলিমাধব ঘটক। গড়েছেন ছোট পুনর্বাসন ইউনিট। প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য হলেও কিছু মানুষকে ফিরিয়ে দিয়েছেন মূলস্রোতে। স্বীকৃতিস্বরূপ আজ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নারী শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতর তাঁকে সম্মান জানাবে। নিছক আশ্বাস আর ঘটা করে প্রতিবন্ধী দিবস পালন নয়, অন্য দিনেও ওঁদের দিকে বাড়াব মানবিকতার হাত, এমন শপথ কি নেওয়া যায় না আজকের দিনটিতে?
|
নটী বিনোদিনী |
আমজনতার কাছে টিকিট বেচে মঞ্চ নাটকের নয়া জমানার শুরু ১৮৭২-এর ৭ ডিসেম্বর। পুরুষ অভিনেত্রীদের বদলে এলোকেশী-জগত্তারিণী-সুকুমারীর পথ ধরে মঞ্চের আলোয় এলেন নটী বিনোদিনী (১৮৬৩-১৯৪১)। প্রাণপাত চেষ্টা আর গিরিশচন্দ্রের শিক্ষায় হয়ে উঠলেন বঙ্গরঙ্গমঞ্চের সেরা অভিনেত্রী। ১৮৮৩-তে পঞ্চাশ হাজার টাকার বিনিময়ে সর্বক্ষণের সঙ্গী হিসেবে তাঁকে দাবি করল গুর্মুখ রায়। নিজের নামে থিয়েটারের বাসনায় গুরু গিরিশ-সহ সমস্ত মঞ্চ-বান্ধবদের নিলামে বিক্রি হলেন বিনোদিনী। কিন্তু পতিতার নামে থিয়েটার হলে দর্শক মুখ ফেরাবেন, তাই ৬৮ বিডন স্ট্রিটে তৈরি হল ‘স্টার থিয়েটার’। বিনোদিনীর নামে কিন্তু আজও গড়ে ওঠেনি কোনও থিয়েটার। দেড়শোতম জন্মবর্ষে একাডেমি থিয়েটারের আয়োজন ‘বিনোদিনী গাথা’, ৬-৭ ডিসেম্বর সন্ধে সাড়ে ছ’টায়, একাডেমি অব ফাইন আর্টস-এ। থাকছে দুর্লভ ছবির প্রদর্শনী, শ্রুতিনাট্য ও মঞ্চগান।
|
বাংলায় প্রথম |
প্রাচুর্য নেই। পুরনো কাস্টমারই সম্বল। বউবাজারের মুজরোওয়ালি গলিতে এই ভাবেই অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে মালকিন সুলতানা বেগম। সেখানেই নাচ শেখায় পরভিন। নিঃসন্তান পরভিনের ঘরে হঠাৎ এসে পড়ে প্রিয়া। বিক্রি করার জন্য তাকে আনা হয়েছিল। পরভিনের কাছেই শুরু প্রিয়ার নতুন অধ্যায়...। এ ভাবেই এগোয় পরিচালক নেহালের নতুন ছবি ‘খুশবু’। ছবিতে পরভিনের ভূমিকায় মুম্বইয়ের জারিনা ওয়াহাব (সঙ্গের ছবি)। ‘জারিনা বাংলা ছবিতে কাজ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাংলা বলতে পারেন না। তাই গল্পটা এমন ভাবে লেখা, জারিনাকে হিন্দিই বলতে হবে।’ বললেন নেহাল। প্রথম বাংলা ছবি। খানিকটা উত্তেজিত জারিনা, ‘কলকাতার মানুষ খুব ভাল। ভাল এখানকার খাবার। মাছ, রসগুল্লা আর মিষ্টি দই।’
|
লোকজীবন |
বাংলার গ্রামজীবনে বিস্তীর্ণ রয়েছে ওঁদের লোকজীবন। ঝুমুর, ছো, গম্ভীরা, খন, রায়বেঁশে, ভাটিয়ালি, ঢোলবাদ্য বা লালনের গান এবং সাঁওতালি ও মেচ জনজাতির নৃত্য। এ সব নিয়েই আয়োজিত রাজ্য লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি কেন্দ্রের সপ্তদশ বর্ষপূর্তি উৎসব ‘সুরে ছন্দে মাটির গন্ধে’। ৬ ডিসেম্বর উৎসবের উদ্বোধন করবেন এ বছর লালন ফকির পুরস্কারপ্রাপ্ত ফকিরি গানের শিল্পী খেজমত ফকির। ছিটকালিকাপুরের লোকগ্রামে উৎসবটি চলবে আগামী শনিবার পর্যন্ত সন্ধে ৬ টায়। বিশেষ আকর্ষণ মেদিনীপুরের শিল্পীদের পরিবেশনায় বাইগা নাচ।
|
সাদা-কালো |
রঙের বৈচিত্রে প্রায় ভুলতেই বসেছিলাম সাদা-কালো ছবির ঐতিহ্য। সেই নস্টালজিয়া ফিরিয়ে আনল এ শহরের ফটোগ্রাফি চর্চা কেন্দ্র ‘থার্ড আই’। ৪-৯ ডিসেম্বর (৩-৮টা) বিড়লা আকাডেমিতে ওরা আয়োজন করেছে সাদা-কালো ছবির উৎসব ‘সাদা কালোর রঙবাজি’। বড় আকারের আধুনিক আর্কাইভাল ক্যানভাসের ওপর পরিস্ফুটিত হয়েছে প্রদর্শিত ছবিগুলি। সঙ্গে প্রতি দিন সন্ধে সাতটায় সাদা-কালো ছবির স্লাইড-শো। ‘থার্ড আই’-এর এই চতুর্দশতম আলোকচিত্র উৎসব ওদের রজতজয়ন্তী বর্ষ পূর্তির অঙ্গ হিসেবে পালিত হচ্ছে।
|
স্যাফো-র উৎসব |
ওঁরা খারাপ, তাই ব্রাত্য। অথবা আহারে, বেচারা! কখনও সমালোচনা, কখনও বা সহানুভূতি ওঁদের জন্য। শুধুমাত্র যৌনপছন্দ আলাদা হওয়ার জন্যই অন্য চোখে দেখা। যেন বিচ্ছিন্ন দ্বীপের বাসিন্দা লেসবিয়ানরা। কিন্তু বাস্তবে ওঁরা অন্য সকলের মতোই। অনেকেই সুপ্রতিষ্ঠিত। না জেনেই অনেকে এঁদের নিন্দায় মুখর। তবে ওঁরাও যে ভাল থাকেন, ওঁদেরও দুঃখ-সুখ আছে তা জানাতেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘স্যাফো ফর ইকুয়ালিটি’ আয়োজন করেছে ‘রেনবো কার্নিভাল’। ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের আগের দিনটি বেছে নেওয়া হয়েছে ওঁদের ‘স্বাধীনতা’ উদযাপনের জন্য। সংস্থার পক্ষে মীনাক্ষি সান্যাল জানালেন, ভারতে এমন কার্নিভাল প্রথম। রবীন্দ্রসদন প্রাঙ্গণে দুপুর ১২ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত।
|
মুক্তবেড়ি |
কারও ঠিকানা ছিল বহরমপুর, কেউ ছিলেন মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের বাসিন্দা। এখন ঠিকানা দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার। বদলেছে পরিচয়ও। শুধু সাজাপ্রাপ্ত আসামি নন, সুজিত দলুই, মানিক কুমার, স্বপন বারুই, স্বপন সর্দার, গিরিধারী কুমার, পরিমেষ তাপালি, সহদেব সরকার, পরিতোষ ঘোষরা এখন লোকগানের দল ‘মুক্তবেড়ি’র শিল্পী। এঁদের একত্র করেছেন লোকসঙ্গীত শিল্পী তপন রায়। পুজোয় সারেগামা থেকে বেরিয়েছে ওঁদের লোকগানের অ্যালবাম ‘ওরে মানুষ’। বছর বত্রিশের স্বপন বারুইয়ের কথায়, ‘জীবনটাই বদলে গিয়েছে। এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগ পেয়েছি। বাইরে অনুষ্ঠান করে প্রচুর ভালবাসা পাই।’ মুক্তি পেয়ে শান্তনু বাগদি গানকেই জীবিকা করে নিয়েছেন। আই জি (কারা) রণবীর কুমারের কথায়, ‘ওঁরা তো সমাজেরই অংশ। ওঁদের প্রতিভা বের করে আনতেই সুযোগ করে দিচ্ছি।’ দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের ওয়েলফেয়ার অফিসার প্রসূনকুমার মাজি জানালেন, ওঁরা ইতিমধ্যে চারটি অনুষ্ঠান করেছেন। সামনে আছে আরও কয়েকটি।
|
পরচর্চা |
শেষের কবিতা’র পাঠ-অভিনয় হবে রবীন্দ্রসদনে। নির্দেশক বিকাশ রায়ের কড়া নির্দেশ, অভিনেতাদের ধুতি পরতে হবে। সাজঘরে ধুতি পরতে গিয়ে নাকাল এক অভিনেতা। গৌরী ঘোষ এসে বললেন, আমি পরিয়ে দিচ্ছি। তার পরে ঢুকলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। বললেন, গৌরী কী ধুতি পরাবে, এর অনেক কৌশল আছে আমি পরাব। বলে নিজে প্রায় মাটিতে বসে কোঁচা ঠিক করতে লেগে গেলেন। শেষ দৃশ্যে স্বয়ং বিকাশ রায়। দানাদার গলায় বাঁকা হেসে বললেন, ‘জগন্নাথ তোর কী সৌভাগ্য রে! সৌমিত্র চাটুজ্জে তোকে নিজের হাতে ধুতি পরাচ্ছে! জগন্নাথ বসু সাক্ষী এমন সব দুর্লভ অন্তরঙ্গ স্মৃতির। রেডিয়োতে কর্মসূত্রে কাছ থেকে দেখেছেন পাহাড়ী সান্যাল, উত্তমকুমার, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, উৎপল দত্ত, সলিল চৌধুরী, এমন অনেককে। তাঁদের নিয়েই তাঁর সাম্প্রতিক বই পরচর্চা (সপ্তর্ষি)। আজ সন্ধেয় বাংলা আকাদেমিতে বইটি প্রকাশ করবেন কবীর সুমন।
|
আশিতে শংকর |
বাঙালি প্রকাশকের লক্ষ্মী তিনি। কে? এ ভাবে বলার পরে নামটা উল্লেখ না করলেও চলত, তবু তথ্যের খাতিরে উল্লেখ থাক, তিনি শংকর, বাংলা সাহিত্যের অন্যতম বেস্টসেলার লেখক। এই ৭ ডিসেম্বর তিনি ছুঁতে চলেছেন আশির কোঠা। লক্ষ্মীর সেরা ঝাঁপিটি ‘চৌরঙ্গী’ এই সে দিন ছুঁল পঞ্চাশ। বাক্ সাহিত্য থেকে ১৯৬২-র জুনে প্রথম প্রকাশ, এখন চলছে ১১১তম সংস্করণ। অর্থাৎ গড়ে বছরে দুটির বেশি! বাংলা নতুন উপন্যাসের মরা বাজারে চমকে দেওয়ার মতো তথ্য। এখনও সচল শংকরের কলম। আর তাঁকে দিয়েই শুরু হচ্ছে বাংলায় স্বাক্ষরিত সীমিত সংস্করণের যাত্রা। তাঁর ঘরের মধ্যে ঘর উপন্যাসটি নিয়ে এমন উদ্যোগ দে’জ-এর।
|
নাট্যমেলা |
রীতিমতো অভিযান চালিয়ে বিভাস চক্রবর্তী, তীর্থঙ্কর চন্দ, সত্য ভাদুড়ি, অনীশ ঘোষ, অভিজিৎ করগুপ্ত, পরিমল ত্রিবেদীর মতো নাট্যকর্মী খুঁজে বেড়িয়েছেন জেলার ভাল নাটক। উপলক্ষ নাট্যমেলা। এ মেলার বয়স হল বারো। পূর্ণাঙ্গ ও স্বল্পদৈর্ঘ্য, পথনাটক, লোকনাট্যের মতো নানা আঙ্গিক নিয়ে এ বার হাজির একশোরও বেশি দল। আট দিনের মেলায় রবীন্দ্রসদন, শিশির মঞ্চ, মধুসূদন মঞ্চ, মিনার্ভা, গিরিশ মঞ্চ এবং হাওড়া শরৎ সদনে নাটক ছাড়াও থাকছে আলোচনা। গগনেন্দ্র-য় নটী বিনোদিনী, দ্বিজেন্দ্রলাল আর মোহিত চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে প্রদর্শনী। রবিবার রবীন্দ্রসদনে পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমির এই আয়োজন উদ্বোধন করলেন ‘পাণ্ডবানি’-খ্যাত তিজনবাঈ। এর পরে মেলা হবে শিলিগুড়ি ও আসানসোলেও।
|
শিল্পশিবির |
‘শিল্পাচার্য’-র জন্মদিনে তাঁকে মনে রেখে শিল্পশিবির। উদ্যোগী অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস। আজ নন্দলাল বসুর ১৩০তম জন্মদিন উপলক্ষে অ্যাকাডেমিতে বসছে শিল্পশিবির, আলোচনাসভাও। নন্দলালের শিল্পের নানা দিক নিয়ে সেখানে বলবেন প্রণবেশ মাইতি, মৃণাল ঘোষ, প্রশান্ত দাঁ, নানক গঙ্গোপাধ্যায় ও দেবদত্ত গুপ্ত। প্রথাগত আলোচনার বাইরে নন্দলাল বসুর অন্য দিকগুলি নিয়েও আলোচনা হবে। সংবিধান-চিত্রণ নিয়ে বলবেন দেবদত্ত গুপ্ত, গ্রন্থ-অলংকরণ নিয়ে প্রণবেশ মাইতি।
|
নব নব রূপে |
|
ছবি তুলেছেন
শুভাশিস ভট্টাচার্য |
মুকুটে নতুন পালক, নতুন পরিচিতি। তিনি এখন চিত্রশিল্পীও বটে। তাঁর নিজের কথায় ‘চিত্রশিল্পী কি না জানি না। তবে ছবিটা বরাবরই আঁকতাম।’ সকলের অগোচরে সুর করতে করতেই চলত আঁকা। ‘সুর আসছে, সঙ্গে ছবিও চলে আসছে। কেন আসছে, কী ভাবে আসছে বলতে পারব না।’ ছবি আঁকার প্রথাগত শিক্ষা কোনও দিনই ছিল না সুরকার দেবজ্যোতি মিশ্রের। ‘স্কুলে বেঞ্চে বসে আঁকতাম। অন্যের আঁকা ছবি খুব টানত।’ স্মৃতি হাতড়ালেন শিল্পী। সম্প্রতি দক্ষিণের এক শিল্পীর আঁকা ছবির সঙ্গে সুর করার প্রস্তাব দিতে এসে কিউরেটর জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যের নজরে পড়ে সে সব আঁকা। ‘যোগেন চৌধুরীর প্রশংসা সাহস বাড়ায়। গত চার মাসে প্রচুর এঁকেছি। অনুপ্রেরণা রবীন্দ্রনাথ।’ দেবজ্যোতির ছবিতে এসেছেন বিসমিল্লা খাঁ, আলি আকবর খাঁ, কখনও ছোটবেলার বাজনার দোকান। ও পার বাংলা থেকে চলে আসা, ছুঁয়েছে ছবি। ছেলের অনুপ্রেরণায় এঁকেছেন ‘ফাদার অ্যান্ড সন’। আবার ঋত্বিক ঘটক অবলম্বনে ছবি করতে গিয়ে ‘বঙ্গবালা’র অনুপ্রেরণায় এঁকেছেন ‘দ্য লেডি ফ্রম বেঙ্গল’। ৮-১১ ডিসেম্বর (১১-৭) আইসিসিআর-এর বেঙ্গল গ্যালারি-তে চলবে শিল্পীর আঁকা ছবির প্রদর্শনী ‘রিদম অ্যান্ড কালার’।
|
|
|
|
|
মিস্টার কাকাতুয়া |
যে অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস চত্বর থেকে শেষ বারের মতো কাচে ঢাকা গাড়িতে বেরিয়ে গেলেন তিনি, অন্যান্য মঞ্চের সঙ্গে সেই অ্যাকাডেমি মঞ্চেও দীর্ঘ ২৫ বছর ‘মানিকলাল সরখেল’-এর ভূমিকায় অভিনয় করে গিয়েছেন ‘বহুরূপী’র ‘মিস্টার কাকাতুয়া’! সেই ’৭৭-এ যোগ দেন বহুরূপী-তে। স্বপ্ন ছিল, শম্ভু মিত্রের দলে অভিনয় করবেন। শুরুতেই সদস্যপদ পাননি। বস্তুত, দীর্ঘ কাল দলের কাজ করে মন জয় করে নেন শম্ভুবাবু-সহ প্রবীণদের। মহড়া থাক বা না থাক, নিয়মিত, সময় মেনে হাজিরা দেওয়ায় ভুল হত না গৌতম বসুর। ‘মৃচ্ছকটিক’, ‘গালিলেও’, ‘রাজদর্শন’, ‘আগুনের পাখি’, ‘যযাতি’, সাম্প্রতিকতম ‘রাজার খোঁজে’ একের পর এক প্রযোজনা। তবে গৌতমের জনপ্রিয়তা সব কিছুকে ছাপিয়ে যায় ‘মিস্টার কাকাতুয়া’র মানিকলাল সরখেল চরিত্রে অভিনয় শুরুর সঙ্গে সঙ্গে। ’৮৭ থেকে এই প্রযোজনার সঙ্গে একাত্ম গৌতমের নাম। এই অভিনয়ের জন্য রাজ্য সরকারের দেওয়া শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কারে সম্মানিতও হয়েছেন তিনি।
দলে খুব কঠিন একটি দায়িত্ব পালন করতেন গৌতম ‘কস্টিউম অ্যান্ড রিকুইজিশন’। যে কোনও নাট্যকর্মীই জানেন, প্রযোজনার সময় এই দায়িত্ব সামলাতে কালঘাম ছুটে যায়। কিন্তু সেই কাজও অনায়াস দক্ষতায় হাসিমুখে পালন করেছেন তিনি। নিজের হাতে অভিনেতাদের কস্টিউম ইস্ত্রি করা, ব্যবহৃত পোশাকের বান্ডিল কাচতে দেওয়া পেশায় স্কুলশিক্ষক গৌতমকে বিরক্ত হতে কেউ কোনও দিন দেখেননি। সহ-অভিনেতাদের জুতো পর্যন্ত নিয়মিত পালিশ করে দিতেন তিনি।
নাটকের শেষ দৃশ্যে টুপি খুলে মাথা ঝুঁকিয়ে দু’হাত প্রসারিত করে দর্শকদের ‘গুড নাইট’ বলতেন মানিকলাল। এ বার জীবনের মঞ্চকেও ‘গুড বাই’ করে চলে গেলেন ‘মিস্টার কাকাতুয়া’! সঙ্গের ছবি নাটক থেকে। |
|
|
|
|
|
|