তারাবাজি
তাঁর বিদায় আমাদের চাহিদা
১) বাতাসে ভেজা বিষণ্ণতার গন্ধে খুশির আমেজ আমদানি মাসখানেক পরেই পাকিস্তানের সঙ্গে এখানে ওয়ান ডে খেলা উচিত তেন্ডুলকরের। এটাই চূড়ান্ত আবির্ভাব নয়। তবু কোথাও যেন দশমীর আগাম বিষণ্ণতা। নিরুচ্চারে কেউ যেন শঙ্খ ঘোষের কবিতার শেষ দুটো লাইন পড়ছে ‘দু’হাত দিয়েই ধরেছিলাম, রইল না তো তবু/ হাতেই কোনও ভুল ছিল কি তবে?’ একটা বনেদি তেন্ডুলকর ইনিংস সেই বিষণ্ণতাকে উত্তীর্ণ করাতে পারে দীপাবলির আলোয়। আর তাঁর নিজেরই তো দৃষ্টান্ত আছে। এ মাঠেই বল হাতে এক দিন দিওয়ালি এনে দিয়েছিলেন। ইডেনের ঊনআশি বছরের ক্রিকেট ইতিহাসে সে দিনই প্রথম মশাল জ্বলেছিল। হিরো কাপে সচিনের শেষ বলের ওভারকে কেন্দ্র করে।

২) বঙ্গজ ক্রিকেট পড়ুয়ার শিক্ষা সার্থক করা ক্রিকেট পড়ুয়া বলতে এখানে হবু ক্রিকেটার। যাদের বাবা-মায়েরা আশ্বস্ত হচ্ছেন কোথাও আজও এই খেলাটার মধ্যে রাজবংশের নীল রক্ত লুকিয়ে আছে। সবই যদি পাতানো খেলা হত। তা হলে আজ একশো সেঞ্চুরি করা এই লোকটাকে প্রতিটা রানের জন্য এমন অগাধ বিপন্নতার মধ্যে সংগ্রাম করতে হত না। যত বার এই লোকটা হেঁদিয়ে মরছে রানের জন্য, তত ক্রিকেট নামক খেলাটার আবেদন বাড়ছে রোমান্টিকের কাছে। ইডেন চাইবে গত এক বছরের যাবতীয় দুঃখের দৃশ্যের পর ইডেন উইকেট ক্রিকেট মহানায়ককে সরবরাহ করুক সুখের সমাপ্তি। অ্যান্ড দেন হি লিভ্ড হ্যাপিলি দেয়ার আফটার।

৩) ভীষ্মের শরশয্যা থেকে ফের অর্জুনের বেশে উত্থান চিপক যে অর্থে তেন্ডুলকরের প্রিয় সারফেস, গঙ্গার ধারের প্রাচীন প্যাগোডা সমন্বিত উদ্যান মোটেও নয়। সারা জীবনের গড় ৫৪.৬০। সেখানে ইডেন দিয়েছে ৪৮.৮১। আঠেরো বছরে খেলা সমসংখ্যক ইনিংসে, সেঞ্চুরি মাত্র দুটো। তবু ইডেন তার দর্শক, শব্দগর্জন এবং এনার্জি সব মিলে মরাঠির অন্যতম প্রিয় মাঠ। অভাবিত কিছু না ঘটলে ইডেনে আর টেস্ট খেলার সম্ভাবনা তাঁর নেই। ইডেনে টেস্ট গড় সম্মানজনক পঞ্চাশে নিয়ে যাওয়ার এটাই শেষ সুযোগ। তিনি নিজে সবার থেকে ভাল জানেন ওয়াংখেড়েতে অসম্মানজনক বিদায় পুষিয়ে যাবে এখানকার একটা ক্ষত্রিয় ইনিংসে। মুম্বই যদি কুলীন ক্রিকেট মক্কা হয়, কলকাতার দর্শক হল প্রোলেতারিয়েতের রাজ দরবার। মুম্বই যদি গরিমা হয়, কলকাতা দিতে পারে জনপ্রিয়তা। এ মুহূর্তে সেটাই তো পারে রুগ্ণ পিতামহকে দ্রুত অর্জুনের সাজে ফিরিয়ে দিতে।

৪) প্রমাণ করা বুড়ো মানেই সে ক্রিকেট সমাজচ্যুত নয় ইডেন এবং নাগপুরের শেষ টেস্ট তেন্ডুলকরের ক্রিকেট মডেলেরও পরীক্ষা নেবে। এই মডেল দাবি করে হেমিংওয়ের ‘ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি’-এর মতো মানুষের স্পিরিটটাই আসল। তার হার না মানা হার জেদটা আসল। ঠিক কোন দিনে সে ভূমিষ্ঠ হয়েছিল একেবারেই নন ইস্যু। সচিন এর সঙ্গে যুক্ত করেছেন নিরন্তর অসহনীয় পরিশ্রম। ক্রিকেট পিচে তাঁর চেয়ে বেশি রান যেমন কেউ কখনও করেননি তেমনই পিচের বাইরে এত কোটি বলও কেউ কখনও খেলেননি। ইডেন চাইবে, পরিশ্রমে বয়সের বলিরেখা ঢেকে দেওয়া যায় এমন মডেলের জয়ডঙ্কা বাজুক!

৫) গ্যালারিতে দ্রুত প্রত্যাবর্তন ঘটুক সাবেকি ক্রিকেট পোস্টারের আবদুল কাদির একবার বলেছিলেন ইমরানকে লোকে এত শ্রদ্ধা করে যে তাঁর ভয় হয়, আরও খেলে গেলে খোদ পাকিস্তানেই না তাঁরা প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্টেডিয়ামে হাজির হয় ইমরান খান কো নিকালো। সচিন-ভক্তরা চাইবেন প্রথম দিনই ইডেনে এমন কিছু ঘটুক যাতে পুরোনো সেই পোস্টারটা স্টেডিয়ামে হাত ঘোরে আমি ঈশ্বরকে দেখেছি, উনি ভারতের হয়ে চার নম্বরে ব্যাট করেন। বক্তা? কোনও এক ম্যাথু হেডেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.