এ বার বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের নাম জড়ালেন শিলিগুড়ি পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ সীমা সাহা। শনিবার তিনি জানান, উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী বর্তমানে যে ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সেই ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে একাধিক অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি সেবক রোডের একটি অবৈধ নির্মাণ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভাঙতে পুর কমিশনারকে ফোন করে নির্দেশ দেন গৌতমবাবু। অথচ শেঠ শ্রীলাল মার্কেটে ‘আদর্শ মহাবিদ্যালয়’, ‘ল্যান্ড মার্ক’-এর মতো অবৈধ বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিতে তিনি উদ্যোগী নন কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সীমা দেবী।
মন্ত্রী অবশ্য এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাননি। তিনি জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে দলের হয়ে পূর্ত বিভাগের মেয়র পারিষদ কৃষ্ণ পাল বলবেন। কৃষ্ণবাবু বলেন, “সীমাদেবী নিজের দায় অন্যের কাঁধে দিতে চাইছেন। সম্প্রতি মন্ত্রী তাঁর নিজের বিধানসভা এলাকায় অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ পেয়ে পুর কমিশনারকে তা দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন। অথচ সীমাদেবী বিল্ডিং বিভাগের দায়িত্বে থেকে সেই কাজ করতে পারছেন না।”
শুক্রবার তৃণমূলের কাউন্সিলরদের একাংশ সীমাদেবীর ওয়ার্ডে নিয়ম ভেঙে দু’টি বাড়ির প্ল্যান পাশ করানো হচ্ছে দেখে বোর্ড মিটিংয়ে বাধা দেন। সীমাদেবীর দাবি, “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বাধা দেওয়া হচ্ছে।” তিনি জানান, মেয়র পারিষদের বৈঠকে আলোচনা করেই রাস্তার জায়গা কম রয়েছে এমন বেশ কয়েকটি নকশার সাইট প্ল্যান অনুমোদন করা হয়েছে। অথচ অন্য ওয়ার্ডে সাইট প্ল্যানগুলি এড়িয়ে তাঁর ওয়ার্ডের বিষয়টি তুলে ধরে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা হচ্ছে। কৃষ্ণবাবুর জবাব, “বোর্ড মিটিংয়ে আমাদের কাউন্সিলর জয়দীপবাবু যে প্রশ্ন তুলেছেন তার উত্তর বোর্ড মিটিংয়েই সুষ্ঠ ভাবে দিতে পারতেন। কারও নির্মাণ কাজ আটকানো আমাদের উদ্দেশ্য নয়।”
অবৈধ নির্মাণ ভাঙার ক্ষেত্রে গড়িমসির অভিযোগ এ দিন স্বীকার করেছেন সীমাদেবী। তিনি জানান, তালিকা করে পুর কমিশনারকে ৬ টি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অথচ সেই কাজ করা হচ্ছে না। নকশা ছাড়া যে ১১টি নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ল’ সেল পরামর্শ দিয়েছে। সেগুলি সমস্তই ভেঙে দেওয়ার জন্য জানানো হয়েছে। সীমা দেবী বলেন, “নোটিশ পাঠিয়ে শুনানি করে অবৈধ নির্মাণকারীদের বক্তব্য শোনা হয়েছে। ফের মেয়রের কাছে চিঠি পাঠিয়ে তাঁরা সময় চেয়েছে বলে অজুহাত দেখিয়ে দেরি করা হচ্ছে। পুর কমিশনার অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে ইতস্তত করছেন। তা নিয়ে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।” |