এডস মানেই হেনস্থা, স্কুলে যাওয়াও মানা
ংমিস্ত্রির রক্তে এইচআইভি। তাঁর ছেলেরও। এলাকার লোকে প্রথমে জানত না। কিন্তু বছর দুই আগে রংমিস্ত্রির স্ত্রী এড্সে মারা গেলে জানাজানি হয়।
আর শুরু হয়ে যায় হেনস্থা। প্রায় সকলেই এড়িয়ে চলতে শুরু করেন। বলতে শুরু করেন, এড্স ছোঁয়াচে। এলাকা ছাড়তে হবে বলে ফতোয়াও দেন কিছু লোকজন।
রংমিস্ত্রির বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনায় হাবরার মছলন্দপুরে। বেগতিক বুঝে মছলন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কল্পনা বসুর দ্বারস্থ হন তাঁরা। প্রধান গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে-সুজিয়ে তখনকার মতন সামাল দেন। কল্পনাদেবীর কথায়, “পঞ্চায়েত অফিসে সদস্য ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছিলাম। তার পরে স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে গ্রামে গিয়ে মানুষকে বোঝাই, এড্স ছোঁয়াচে নয়। ওদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।”
এর পরে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু মাস দেড়েক আগে ফের সমস্যা তৈরি হয়। রংমিস্ত্রির চতুর্থ শ্রেণিতে পড়া ছেলের স্কুলে যাওয়া নিয়ে আপত্তি তোলেন স্থানীয় এক পঞ্চায়েত সদস্য এবং অভিভাবকদের একাংশ। ছাত্রটি স্কুলে এলে ছেলেমেয়েদের সরিয়ে নিয়ে যাবেন বলেও হুমকি দেন কিছু অভিভাবক। উত্তর ২৪ পরগনারই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের লোকজন বিষয়টি জেলাশাসক সঞ্জয় বনশলের নজরে আনেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ট্রেজারি) পার্থ ঘোষ বলেন, “স্কুল পরিদর্শককে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” স্কুল পরিদর্শক দীপায়ন দাস আবার স্কুলে গিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন বাণীপুর চক্রের এসআই হাফিজুল রহমানকে। এসআই বলেন, “স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। এখন ছাত্রটি স্কুলে যাচ্ছে।” রংমিস্ত্রিও বলেন, “আপাতত ছেলের স্কুলে যেতে সমস্যা হচ্ছে না।”কিন্তু শুধু ওই পরিবারটিই নয়, এ রকম বহু পরিবারই নানা সামাজিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির তরফে সমীর বিশ্বাস বলেন, “ওঁদের কোনও কাজ দেওয়া হয় না। নানা ভাবে সামাজিক চাপও তৈরি করা হয়।” সংক্রমণের কথা জেনে বাড়ির লোকেরাই ব্রাত্য করে দিয়েছেন, এমন ঘটনাও বিরল নয়। জেলা প্রশাসনের মতে, কর্মসূত্রে ভিন্রাজ্যে যাওয়া অনেকে এড্সের জীবাণু নিয়ে ফিরছেন। পেট্রাপোল সীমান্তে বেশির ভাগ ট্রাকই আসে বাইরের রাজ্য থেকে। দীর্ঘদিন বাড়ি-ছাড়া চালক-খালাসিদের একটা বড় অংশও অনিয়ন্ত্রিত যৌনতার কারণে এড্সে আক্রান্ত হচ্ছেন। যদিও পেট্রাপোলে এড্স নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য উৎপলকুমার বেরার মতে, “ট্রাকচালক ও খালাসিদের মধ্যে কন্ডোম ব্যবহারের সচেতনতা অনেকটাই বেড়েছে।” রাজ্য এড্স প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সংস্থার প্রকল্প অধিকর্তা রেশমী কামাল বলেন, “কোনও অভিযোগ পেলেই আমরা কড়া ব্যবস্থা নিই। তবে প্রচার অভিযানের ফলে মানুষের সচেতনতা আগের থেকে বেড়েছে। আরও বাড়বে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.