|
|
|
|
|
|
স্বপ্নময় চক্রবর্তী |
বোলপুরের ঠিক আগের স্টেশন ভেদিয়া। ভেদিয়ার যশ বাড়িয়েছেন যশ ডাক্তার। ডুমুর যশ। আসল নাম ডম্বরুপাণি যশ। চেম্বারে টিনের পাতে আলকাতরায় লেখা ডাঃ ডি পি যশ। একটা ‘+’ চিহ্ন আর জোড়া সাপ আঁকা। জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আপনি বুঝি সাপে কাটা রোগীর স্পেশালিস্ট? উনি বললেন, ওটা স্টেথোস্কোপ। যশ ডাক্তারের কাছে দূর-দূরান্তের রোগী আসে। গুসকরা, বনপাশ, শ্রীপুর, পিচকুড়ির ঢাল থেকেও। আমি তখন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভূমি সংস্কারের দফতরে কাজ করি। এক দিন ওঁর
|
ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য |
বাড়ি গেলাম। ওঁর সামনের টেবিলে একটা মানকচু পাতার ওপর কালো-কালো বড়ি, কবিরাজি ওষুধের মতো দেখতে। জিজ্ঞাসা করলাম, কবিরাজিও করেন?
এগুলো দেখে বলছেন? এগুলো তো ছাগলের নাদি।
ছাগলের নাদি ওষুধে লাগে নাকি?
উনি বললেন, না, পরীক্ষা করছি। ছাগলের নাদিটা কী অদ্ভুত, না? সব সেম-সেম সাইজ। আর কী ব্ল্যাক! কেমন বার্নিশ করা। খুব অবাক লাগে। বোঝার চেষ্টা করছি। লেখাপড়া বেশি তো করতে পারিনি, ডাক্তারিটা শিখেছি তারক ডাক্তারের সাগরেদি করে। উনিও পাশ করা ডাক্তার ছিলেন না। আমারও একটা সাগরেদ আছে মহাদেব। এখুনি আসবে। কাজ শিখচে।
একটু পর মহাদেব আসে। যশ ডাক্তার ঘর থেকে একটা মানব-শরীরের ছবি এনে দেয়ালে ঝুলিয়ে দেন। হাতে একটা নিমের দাঁতন নিয়ে বলতে থাকেন, আগে ক’দিন বুকের কলকব্জা কয়েছিলাম, আজ একটু পেটের কলকব্জা কই। এই তুই ভাত খেলি। দাঁত দিয়ে চিবোলি। গিললি। এই পাইপটা দিয়ে ট্যাঙ্কিতে যাবে। এটা ভাতের পাইপ। পাশেরটা হাওয়ার পাইপ। বুকের হাওয়া নাক দে’ বেরোয়। খাবার জিনিস ভাতের পাইপে না-ঢুকে হাওয়ার পাইপে ঢুকে গেলে বিপদ। এখানে একটা যন্তর আছে। কুত্তা যন্তর। খাওয়ার পাইপের মাল হাওয়ার পাইপে ঢুকে গেলেই ঘেউ-ঘেউ করে। মানে, কাশি হয়।
চেম্বারে গেলাম এক দিন। পিছনেই ও.টি.। কারও অর্শ বা ভগন্দর অপারেশন হবে। পেশেন্ট পার্টিকে মহাদেব বলল যাও, একটা লিঙ্গকেনি নে এসো গা। হাটের দোকান থেকে নিয়ে এল লিগ্নোকেন-এর ভাইল। লোকাল অ্যানাসথেশিয়ার ইনজেকশন। তত ক্ষণে যশ ডাক্তার এক জনের একটা দাঁত উঠিয়ে দিয়েছেন টপ করে। মহাদেব বলল, পরমা পটাশ দিয়ে কুলকুচো করবে। পরমা পটাশ মানে পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট, করলা পটাশ মানে পটাশিয়াম ক্লোরাইড।
যার অপারেশন হবে, ওকে লিঙ্গকেনি ইনজেকশন দিয়ে শুইয়ে রাখল। তত ক্ষণে অন্য পেশেন্ট। যশ ডাক্তার মহাদেবকে বলল, পাথরটা নিয়ে আয় তো দেখি। মহাদেব একটা কাগজে করে একটা পাথর নিয়ে এল। ঝামাপাথর। বলল পিঁমড়ে ধরেছে স্যার...। তবেই সেরেছে। তোকে তো ডাইবিটিস ধরেছে পাঁচু। গুড়-চিনি একদম খাসনে। গুসকুরোর হাসপাতালে যা। ভাল করে মুত পরীক্ষা, রক্ত পরীক্ষা করতে হবে। পরে জেনেছি, অজয় নদীর পাড় থেকে ঝামাপাথর কুড়িয়ে আনে মহাদেব। প্রস্রাবে শর্করা বেশি আছে সন্দেহ হলে, রোগীর প্রস্রাবে ঝামাপাথর চুবিয়ে বাইরে ফেলে রাখে। যদি পিঁপড়ে ধরে, বুঝতে হবে ডায়েবিটিস হয়ে গেছে।
ডাক্তার মল পরীক্ষাও করেন। গন্ধ নেন। আমাশার এক ধরনের গন্ধ আছে। অ্যাসিডিটি থাকলে অন্য গন্ধ। এক বার কল-এ গিয়েছেন, এক বাড়ির বউ খুব বমি করছে। ওঁর সামনেই করল। ডাক্তার বলছেন, বমিটার গন্ধ শুঁকলাম। তার পরই ওর স্বামীকে বললাম, বউটার ওপর খুব অত্যেচার করা হয়? লোকটা তো ভ্যাবাচাকা। বললাম, আমনার বউ এমনি-এমনি ইঁদুর মারার বিষ খেয়েছে? নিশ্চয়ই কিছু কারণ আছে। হয় অত্যেচার, নয় অন্য মেয়েছেলে করছেন। বুঝলেন স্যর? গন্ধেই বুঝে গেছিলাম, ওতে ইঁদুর মারার বিষ আছে।
এক বার আমার খুব শরীর খারাপ। যশ ডাক্তার বললেন, একটা শিশিতে কিছুটা ইউরিন নিয়ে আসবেন তো, দেখব...। এক দিন একটা ব্যাগপাইপার হুইস্কির নিপের শিশিতে ‘ইউরিন’ ভরে নিয়ে যাই। বেশ হলদে। নিজের নামটাও লেবেলে লিখি। চেম্বারে নেই, কল-এ গেছেন। মহাদেবও সঙ্গে গেছে। বাড়িতেই দিয়ে আসি। পর দিন চেম্বারে যাই। যশ বললেন, কেলেঙ্কারি কাণ্ড করেছেন। ও রকম ভর্তি শিশি, ও রকম রং। আমি ভেবেছিলাম কোনও রুগি খুশি হয়ে ভেট দিয়ে গেছে। রাতের দিকে একটু খাই-টাই তো। এক চুমুক খেয়েই বুঝি কেলেঙ্কারি। তার পর লেবেলটা দেখি। আপনার তো স্যার কেস জন্ডিস। রুবি রায় তো আছেই, মনে হয় ইউরিক অ্যাসিডও। ভাল জায়গায় টেস্ট করান, ভাল ডাক্তার দেখান।
রুবি রায় কী? জিজ্ঞাসা করি।
বিলরুবি। আদর করে ওই নামে ডাকি।
ইউরিন টেস্ট-এ বিলিরুবিন এবং ইউরিক অ্যাসিড ধরা পড়ে। যশ ডাক্তারকে পরে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, কী করে বুঝেছিলেন?
ডাক্তারবাবু বললেন, রং দেখেই বিলরুবি বুঝেছিলাম। আর বলেছিলাম না, এক চুমুক খেয়ে দিয়েছিলাম! বুঝলেন, আমার নিজের এক বার ইউরিক অ্যাসিড হয়েছিল। বর্ধমান থেকে টেস্ট করিয়েছিলাম। তো নিজেরটা একটু চেখে দেখেছিলাম। মুতের ইউরিক অ্যাসিডের টেস্ট কেমন হয়। অসুবিধে কী? মোরারজি দেশাই তো স্বমূত্র পানের কথা কত বারই বলেছেন! |
|
সুমিত্র বসাক |
|
• সমস্ত ঝড়তি-পড়তি কাগজ ডাঁই করে কাবাড়িওলাকে বেচে দেওয়ার পরেই উকিলের
ফোন,
ও সবের মধ্যেই কী একটা ফর্ম আছে, না জমা দিলে ট্যাক্সের লোক ধরে নিয়ে যাবে। |
|
|
• হেভি খিদে পেয়েছে। বুফে-টা গিয়েই সার্ভে করে নিয়েছেন।
ঠিক
করেছেন, শুধু ফিশ ফ্রাই খাবেন। প্লেট নিয়ে
এগোলেন, কিন্তু
আপনার সামনের লোকটি
একে একে পনেরোটাই তুলে নিল। |
• মোবাইলে চমৎকার একটা অসভ্য মেসেজ টাইপ করে
অফিসের প্রেমিকাকে পাঠাতে গিয়ে আঙুল ফসকে বউকে
পাঠিয়ে ফেললেন। এ বার চিত্তির। বউ গদগদ। গুচ্ছ ফিরতি
মেসেজ। শেষে রাত্রে বউয়ের সঙ্গে প্রেম করতেই হল। |
|
|
|
|
• ঘর বাঁধতে ঘর ছেড়েছিলেন দু’বছর আগে, অসুস্থ মা’কে দেখতে ফের ঘরে ফিরতেই গাঁ-সুদ্ধ লোকের সামনে নিজের শ্যালকদের গুলিতে মারা গেলেন আবদুল হাকিম, উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরে। পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে এই হত্যা কৈফিয়ত খুনিদের। হাকিম মুসলিম হলেও নিচু জাত, গরিব, বারো বছর লুকিয়ে ভালবেসে প্রেমিকাকে গোপনে বিয়ে করে পালিয়ে দিল্লিতে থাকছিলেন ‘লাভ কমান্ডো’ এনজিও-র আশ্রয়ে, প্রতিহিংসায় তাঁর বাবাকে গাছের ডালে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মেরেছে দুষ্কৃতীরা। আমির খানের সঞ্চালনায় জনপ্রিয় টিভি শো ‘সত্যমেব জয়তে’র এক পর্বে ক’মাস আগেই এসে ক্যামেরার সামনে হাকিম বলেছেন মৃত্যুভয় কী ভাবে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে তাঁকেও। শেষরক্ষা হল না। এ বার খুনিদের টার্গেট হাকিমের গর্ভবতী স্ত্রী। প্রশাসন এই হত্যাকে ‘পারিবারিক কলহপ্রসূত’, ‘দুভার্গ্যজনক’ বলে আর বাড়ির বাইরে সাদা পোশাকের দু’জন মহিলা পুলিশ বসিয়ে খালাস, বিরোধীরা দুষছেন সরকারি অপদার্থতাকে, কেন্দ্র তলব করেছে রিপোর্ট, ভাবা হচ্ছে আইন তথা সংবিধান বদলের কথাও। দোষের শেকড় অশিক্ষিত মানসিকতার গভীরে, তারই ফল খাপ পঞ্চায়েতের মারণ ফতোয়া, হাড়-হিম খুন। আর এই জুলুমবাজ খুনিদের ত্রিবিক্রম সহ্য-সমর্থন করে ক্ষমতার যে গদিটি, সে অবশ্যই পচা, দূষিত।
• পেটের দায়ে লাহৌর থেকে লন্ডন পাড়ি, বাজারে মাছ-বেচার কাজে মালিকের আদেশ ছিল, প্রাণান্ত চেঁচাও। তা না করে, মহম্মদ শাহিদ নাজির লোক টানার মহা-তরিকা জমালেন: মৎস্য বেচিব, গাইব সুখে! সহজ, সাধারণ লিরিকে বাঁধা গান ‘কাম অন লেডিজ, কাম অন লেডিজ, হ্যাভ আ হ্যাভ আ লুক, ওয়ান পাউন্ড ফিশ, ভেরি ভেরি গুড ওয়ান পাউন্ড ফিশ...’এর দৌলতেই তিনি আজ সুপারসেলিব্রিটি মেছুয়া, ইউটিউবে ৩৭ লক্ষেরও বেশি ‘লাইক’, ওয়ার্নার মিউজিক ‘রেকর্ড ডিল’ করতে উন্মুখ, তাবড় গাইয়ে-ব্যান্ড প্রশংসায় গদগদ: এ গান এ বছর ক্রিসমাসের সম্ভাব্য চার্ট-পয়লা। কূট তাত্ত্বিক বলছেন, হুঁ হুঁ বাবা, এ হল উত্তর-উপনিবেশিকতার পাল্টা চাঁটি, দি এম্পায়ার সিংস ব্যাক! আসল কথা সহজ। দুনিয়া হুজুগ-হিড়িক স্রোতে নাচছে, কোত্থেকে ক্লিক করে যাচ্ছে ‘কোলাভেরি’ ‘গ্যাংনাম’ ‘ওয়ান পাউন্ড’, লক্ষ লোকে নাচছে গাইছে লাইক আর শেয়ারের তুফান ছোটাচ্ছে, ফের মাস ঘুরতে হাপিস। কিন্তু সব্বার ঘটে অনায়াস ঢুকছে আর হাজার জন বগল বাজিয়ে গাইছে বলেই তা রসোত্তীর্ণ শিল্প? দেখতে-বুঝতে, হজম করতে মায় উগরোতে সময় নিয়ে তবেই না সে কালজয়ী, অমর! |
|
|
|
১৭৫৯০০০০
০০০০০০
বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী
সুপার কম্পিউটার ‘টাইটান’
এক সেকেন্ডে যত
হিসেব করতে পারে |
১০
অসমের যে ক’টি
গ্রামকে দত্তক নিল
ন্যাশনাল
ইনস্টিটিউট
অফ টেকনোলজি |
২৩
যতগুলো এক্স-রে স্ক্যানার
যন্ত্র সদ্য বসেছে কলকাতার
মেট্রো স্টেশনগুলোতে |
৮১
যত সেন্টিমিটার লম্বা চার্লি
চ্যাপলিনের বিখ্যাত ছড়ি। ‘লিট্ল
ট্র্যাম্প’ ছবিতে চার্লির ব্যবহার
করা ছড়িটি সদ্য নিলামে উঠেছে। |
৯৭
যত শতাংশ বাংলাদেশি
সাংসদ দুর্নীতিগ্রস্ত বলে
অভিযোগ আনল
আন্তর্জাতিক দুর্নীতি
-বিরোধী
সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল
|
৮৪০০০০০
রাজ্যে এ বছর প্রতি
মাসে
গড়ে
যত
বোতল বৈধ
দেশি
মদ বিক্রি হয়েছে
|
১৩৮
এ রাজ্যে সরকারি
ছুটি
বেড়ে বছরে
মোট যত দিন হল
|
২০
যত শতাংশ রুশ মেয়ে
আজও ‘পাত্র’ হিসেবে
চান দেশের প্রেসিডেন্ট
ভ্লাদিমির পুতিনকে |
|
|
|
|
|
অ
সী
ম
রা
য় |
|
আমিই সেরা বুদ্ধিমতী, আমার কাছে বুদ্ধি নে।
ঘেন্না হলেও চাইছি যেতে নোংরা আলিমুদ্দিনে।
কেন এমন আত্মত্যাগ? এ অপমানে যাওয়া রে?
বুঝবি যখন রাজ্য ছেড়ে কেন্দ্রে যাব পাওয়ারে! |
ধর্মকর্মে এই বারে মন গেছে ‘চাষার ব্যাটা’র।
সত্যি? না কি হিসেব কষা পলিটিক্যাল ম্যাটার?
নির্বাচনের খবর পেলে
কেউটে ফেলে ধরবে হেলে।
ভোটের দায়ে লোকশিক্ষার রাজনৈতিক ‘থ্যাটার’। |
|
|
|
লেটারিং বেটারিং |
|
মধ্যবিত্তের ধারালো জীবন |
|
|
|
|
|
|
এই ছবির সংলাপ লিখেছেন নন্দিনী সরকার, বজবজ |
|
|
|
ডান দিকে ছবির দু’জন কী বলছে?
সাদা পাতায়
লিখে পাঠান।
প্রতি ডায়লগ ২০ শব্দের মধ্যে।
ঠিকানা:
নয়া সংলাপ,
রবিবাসরীয়,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০০০১ |
|
|
|
|
|
|
|
|
|