ডালমিয়ার হস্তক্ষেপে ইডেনের
বাঞ্ছারাম আবার বাগানে
মান-অভিমান পর্ব শেষ। শারীরিক অসুস্থতাকে দূরে রেখে ফের ইডেনে নেমে পড়লেন প্রবীর মুখোপাধ্যায়। নেমে পড়লেন সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়ার কথা রেখে।
কিন্তু ইডেন কিউরেটরকে ঘিরে শনিবার যা ঘটে গেল, তা এক কথায় অভূতপূর্ব। সিএবি কর্তাদের দফায় দফায় বৈঠক। প্রবীরের বাড়িতে ছুটে যাওয়া। চিন্তিত বোর্ড সচিব সঞ্জয় জাগদালের ফোন। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে পিচ-বিতর্কের হালহকিকত বুঝতে ইডেনে লোক পাঠানোশুধুমাত্র পিচ কিউরেটরকে ঘিরে এমন ঝড় কবে দেখেছে বাংলা ক্রিকেটমহল?
কিউরেটরের দায়িত্ব থেকে রাগে, দুঃখে প্রবীরের সরে যাওয়ার খবর জানাজানি হওয়ার পর এ দিন সকাল থেকে তাঁর বাড়ির সামনে হাজির হয়ে যায় সর্বভারতীয় মিডিয়া। তখনও বিষোদ্গার করে যাচ্ছিলেন প্রবীর। এমনকী ডাক্তারি রিপোর্ট হাতে নিয়ে পদত্যাগ পত্রও তৈরি করে ফেলেন। একটু পর তাঁর বাড়িতে উপস্থিত হন সিএবি কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে। প্রথম দিকে অভিমানে কথা বলতে চাননি প্রবীর। কোষাধ্যক্ষ বুঝিয়ে-সুঝিয়ে তাঁকে নিয়ে যান জগমোহন ডালমিয়ার আলিপুর রোডের বাড়িতে।
সেখানেই নাটকের দ্বিতীয় অঙ্ক।
শনিবার ইডেনে প্রবীর মুখোপাধ্যায়ের ছবি তুলেছেন শঙ্কর নাগ দাস
ডালমিয়ার বাড়িতে বৈঠক শুরু হওয়ার পরপরই সিএবি কর্তাদের ফোন করেন জাগদালে। বলেন, প্রবীরের সরে যাওয়ার খবর কতটা ঠিক? খোদ বোর্ড প্রেসিডেন্ট শ্রীনিবাসন গোটা ঘটনা নিয়ে চিন্তিত। বোর্ড সচিবকে তখনকার মতো বোঝানো হয়, অবস্থা আয়ত্তের মধ্যে। কিন্তু প্রবীর-নাটক তখনও চলছে।
দুটো ব্যাপার নিয়ে ক্ষোভ ছিল ইডেন কিউরেটরের।
এক) বোর্ডের পিচ কমিটির চেয়ারম্যান দলজিৎ সিংহের নির্দেশ। ইডেনে এসে দলজিৎ জানিয়েছিলেন, টেস্ট শুরুর তিন দিন আগে থেকে পিচ জল দেওয়া কমিয়ে দিতে। প্রবীর সেই নির্দেশ মানছেন কি না তা দেখতে পাঠানো হয় পিচ কমিটির পূর্বাঞ্চলীয় প্রতিনিধি আশিস ভৌমিককে। প্রবীরের বক্তব্য ছিল, জল দেওয়া বন্ধ করলে যদি উইকেট ‘আন্ডারপ্রিপেয়ার্ড’ হয়ে দাঁড়ায়, তখন সেই দায়িত্ব কে নেবে? তাই তিনি আর উইকেটে হাত দিতে চান না। আর
দুই) পিচ-বিতর্কে সিএবি-র তাঁর পাশে না দাঁড়ানো।
শনিবার সিএবি প্রেসিডেন্টকেও প্রবীর বলে দেন, “আপনিও আমার হয়ে কথা বলেননি। আমি অসুস্থ। এত চাপ নিয়ে কাজ করব কী ভাবে?” ডালমিয়া তাঁকে বোঝান, বোর্ড যখন সহকারী কিউরেটর পাঠিয়েছে তখন পিচ নিয়ে প্রবীরের দুশ্চিন্তা থাকার দরকার নেই। যতটা সম্ভব বোর্ডের দাবি মেনে পিচ তিনি তৈরি করে দিন। আরও বলেন, ইডেন টেস্টের সঙ্গে সিএবি-র সম্মান জড়িয়ে। তার কথা ভেবে এ বার অন্তত থেকে যান প্রবীর। বলা হয়, অসুস্থ শরীর নিয়ে তাঁকে পিচের কাজে বেশি সময় দিতে হবে না। প্রবীর অন্তত জানুয়ারির পাকিস্তান ম্যাচ পর্যন্ত থেকে যান। প্রেসিডেন্টের কথায় শেষ পর্যন্ত মান ভাঙে প্রবীরের। উত্তেজিত ডালমিয়া পরে বলছিলেন, “গত কয়েক দিনে মিডিয়ায় যা খুশি তাই চলছে। প্লিজ আপনারা টেস্টটাকে নষ্ট করবেন না। প্রবীরই আমাদের কিউরেটর। টেস্টের উইকেটের দায়িত্বে উনিই থাকছেন।”
আর প্রবীর? চরম নাটক শেষে তিনি কী বলছেন?
অভিমান কাটিয়ে বিকেল চারটে নাগাদ যখন সিএবি ঢুকছেন কিউরেটর, ততক্ষণে হাজির রাজ্য সরকারের ক্রীড়াসচিব। যিনি প্রবীরের প্রত্যাবর্তনে অনেকটাই আশ্বস্ত। প্রবীর বলছিলেন, “অনেক দুঃখ থেকে কথাগুলো বলেছিলাম। প্রেসিডেন্ট বললেন, সিএবি-র সম্মানের কথা ভেবে থেকে যেতে। এ ভাবে চলে যাওয়া ঠিকও হত না। তবে আগের মতো সময় হয়তো দিতে পারব না।” আপনিই তা হলে ইডেন বাইশ গজের ফের সর্বেসর্বা? এ বার উত্তর, “আর কে? ইডেনের উইকেট নিয়ে আমিই শেষ কথা ছিলাম, আছি, থাকব।”
বলতে-বলতে বাইশ গজের দিকে হাঁটা দিলেন ইডেনের ‘বাঞ্ছারাম’। তাঁর চেনা ‘বাগানে’র দিকে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.