|
|
|
|
কংগ্রেসকে বিঁধল তৃণমূল |
‘প্ল্যান’ পাশ করানোয় বিতর্ক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
প্রয়োজন মতো রাস্তার জায়গা না-থাকা সত্ত্বেও নিয়ম ভেঙে কী করে বহুতলের ‘সাইট প্ল্যান’ পাশ করানো হচ্ছে বোর্ড মিটিংয়ে তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল কাউন্সিলরদের একাংশ। শুক্রবার শিলিগুড়ি পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে এ প্রশ্ন তোলেন তৃণমূলের কাউন্সিলর জয়দীপ নন্দী। বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদের ওয়ার্ডের ওই দুটি ভবন তৈরির জন্য সাইট প্ল্যান জমা দিয়েছেন এক প্রোমোটার। মিলনপল্লিতে যে রাস্তায় দুটি ৪ তলা ভবন তৈরি হবে সেখানে রাস্তা ৫ মিটারের কম। অথচ ৪ তলা বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে সামনের রাস্তা ৫ মিটারের বেশি চওড়া হওয়া উচিত। জয়দীপবাবুকে সমর্থন করেন তৃণমূলের কাউন্সিলর অলক ভক্ত।
কংগ্রেস-তৃণমূল জোট পুরসভায় ক্ষমতাসীন। জোটের অন্যতম কাউন্সিলর জয়দীপবাবুর প্রশ্ন, “নিয়ম মতো রাস্তার জায়গা না-থাকা সত্ত্বেও কী করে বাড়ি তৈরির ওই সাইট প্ল্যানগুলি পাস করানো হচ্ছে? তা ছাড়া প্রোমোটাররা বাণিজ্যিক ভাবে ওই সমস্ত বাড়ি তৈরি করছেন সেখানে কেন নিয়ম মানা হবে না?” মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত এবং বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ সীমা সাহা যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁদের বক্তব্য, ছোট গলিতে যেখানে বাড়ির তৈরি হবে তার সামনের রাস্তা অনেক ক্ষেত্রে চওড়ায় ঠিক থাকলেও অন্য অংশে রাস্তা কম চওড়া হয়। সে সব বিবেচনা করা হয়। উত্তরে খুশি না-হয়ে জয়দীপবাবু সাফ জানান, মেয়র পারিষদ বিষয়টিকে অন্য দিকে ঘোরাতে চেষ্টা করছেন। পরে জয়দীপবাবুকে সমর্থন করে অলকবাবু জানান, ওই দুটি সাইট প্ল্যান পাশ করানোর ক্ষেত্রে তাঁদের আপত্তি থাকল। দলত্যাগী চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করে এ দিন বোর্ড মিটিংয়ে যোগ দেননি বাম কাউন্সিলররা। মেয়র এবং ২ মেয়র পারিষদ যোগ দিলেও কংগ্রেসের অন্যান্য কাউন্সিলররাও উপস্থিত ছিলেন না। চেয়ারম্যান-সহ ১৭ জন কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে এ দিনের সভায় ১৩ জনই তৃণমূলের কাউন্সিলর। সে ক্ষেত্রে তৃণমূলের কাউন্সিলরদের বাধায় ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে মিলনপল্লিতে প্রস্তাবিত দুটি বহুতলের সাইট প্ল্যান আটকে পড়ে।
বোর্ড মিটিংয়ে কংগ্রেসের অধিকাংশ কাউন্সিলর অনুপস্থিত থাকা নিয়ে মেয়রকে বিঁধেছেন জয়দীপ বাবু। তিনি বলেন, “জোটের বোর্ড থাকলেও মেয়র পারিষদের বৈঠকে যে সব সিদ্ধান্ত হচ্ছে তা পাস করানোর ক্ষেত্রে কংগ্রেসের কাউন্সিলররাও দায়িত্ব নিচ্ছেন না। এ নিয়ে ৩টি মিটিংয়ে তাঁরা থাকলেন না। এতে দলের কাউন্সিলররা কী মেয়রের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করছেন না?” তাঁর প্রতি অনাস্থা প্রকাশের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে মেয়র। বলেন, “জয়দীপবাবুর ওই বক্তব্যে আপত্তি রয়েছে। একটি ইস্যুতে দলের কাউন্সিলররা আসেননি। বিষয়টি সকলেই জানেন। দলের জেলা সভাপতিও তা আগেই জানিয়েছেন।” জয়দীপবাবু জানান, অবৈধ নির্মাণ-সহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন উঠছে পুরসভার ভূমিকা নিয়ে। পুরসভার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। তা থেকে বেরিয়ে আসার দিশা দেখাতে শাসক দলের কাউন্সিলরদের ভূমিকা আছে। বিরোধীরাও গঠনমূলক ভূমিকা নেওয়ার কথা বারবার বলেন। অথচ তাঁরা বোর্ড মিটিংয়ে উপস্থিত থাকছেন না। তাঁর প্রশ্ন, “মেয়র কী তাঁর দলের কাউন্সিলর এবং বিরোধী কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের বোর্ড মিটিংয়ে উপস্থিত করাতে উদ্যোগী হবেন?” মেয়র জানিয়েছেন, দলের তরফেও কাউন্সিলরদের বোঝানো হচ্ছে। তিনিও তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন। তবে সে ইস্যুতে কাউন্সিলররা আসছেন না তা মেটা দরকার। বামেরা আগেই জানিয়েছেন, কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে গিয়েছেন চেয়ারম্যান নান্টু পাল। তাঁর ওই পদে থাকার নৈতিক অধিকার নেই। তাঁর প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে বিশেষ সভার আর্জি জানানো হয়েছে। গঠনমূলক ভূমিকা নিয়েই তাঁরা অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সভায় যাননি। |
|
|
|
|
|